ঢাকা ১২:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

হত্যা মামলা দিয়ে কেন সাংবাদিক হয়রানি, আদালতে প্রশ্ন ফারজানা রূপার

  • আপডেট সময় : ০৬:৩০:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

সোমবার আদালত চত্বরে ফারজানা রুপা। ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাংবাদিকদের হত্যা মামলায় জড়িয়ে ‘হয়রানি করা হচ্ছে’ অভিযোগ করে আদালতের কাছে সুবিচার চাইলেন একাত্তর টিভি সাবেক সাংবাদিক ফারজানা রূপা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে মিরপুর গোল চত্বর এলাকায় আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যা মামলার রিমান্ড শুনানিতে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন এই সাংবাদিক।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ইন্সপেক্টর নাসির উদ্দিন সরকার এদিন রূপা ও তার স্বামী শাকিল আহমেদকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চান।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে ছিলেন না।

ফারজানা রূপা বেসরকারি টেলিভিশন স্টেশন একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রিন্সিপাল করেসপনডেন্ট। আর শাকিল একই টেলিভিশনের সাবেক হেড অব নিউজ।

ক্ষমতার পালাবদলের পর দেশ ছাড়ার চেষ্টার সময় ২১ আগস্ট ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে আদাবর থানার এক হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে দুই দফা রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

নতুন মামলার রিমান্ড শুনানিতে আইনজীবী ফারুকী বলেন, তারা আন্দোলনের সময় উসকানি দিয়েছে। স্বৈরাচার হাসিনাকে স্বৈরাচার বানাতে সহযোগিতা করেছে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

এরপর ফারজানা রূপা কথা বলার জন্য আদালতের অনুমতি চান। আদালত অনুমতি দিলে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ যেভাবে উসকানি দেওয়ার কথা বলেছে, তাহলে আমাকে সেই উসকানি দেওয়ার জন্য মামলা দেওয়া হোক। হত্যা মামলায় নিয়ে কেন হয়রানি করা হচ্ছে সাংবাদিকদের?

বাংলাদেশে সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে। হত্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের কেন হয়রানি করা হচ্ছে, এই প্রশ্ন আমি আপনার (বিচারক) কাছে রেখে গেলাম। আমি এর বিচার চাই।

এরপর পিপি ফারুকী বলেন, ছাত্র আন্দোলনে যারা গুলি করেছে তারা অপরাধী। আর যারা এই হত্যাকাণ্ডে সহায়তাকারী, তারাও একই অপরাধী। তাদেরও একই শাস্তি হবে। শেখ হাসিনার ফ্যাসিজম কায়েম করার জন্য যা যা দরকার, গত ১৫ বছর ধরে শাকিল ও ফারজানা তা করেছে।

গণভবনে সাংবাদিকের একটা মিটিং হয়েছিল, সেখানে তারা ছিল এবং তারা হাসিনাকে বলেছে যে, গাড়ি পোড়ানো হচ্ছে, বিদেশে আপনার শত্রু আছে, দেশে শত্রু আছে (একটা দলের নাম দিয়ে বলছে) তাদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে। এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছে তারা। এখন তিনি (ফারজানা রূপা) বলছেন কথার জন্য উনাকে মামলা দেওয়া হয়েছে।

রূপাকে উদ্দেশ্য করে এ আইনজীবী বলেন, আপনারা ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট বানানোর জন্য যে সহযোগিতা করেছেন। সাংবাদিকদের মধ্যে শাকিল, ফারজানা রূপা, আরো কয়েকজন আছে, শ্যামল দত্তসহ তারা সাংবাদিকদের নাম কলঙ্কিত করেছে। তারা হাজার হাজার কোটি টাকার সুবিধা নিয়েছে।

এরপর শাকিল কিছু বলতে চাইলে মহানগর হাকিম জি এম ফারহান ইশতিয়াক শুনানি শেষ করে তাদের ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ঢাকার মিরপুরে গোলচত্বর এলাকায় গুলিতে নিহত হন আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী। এ ঘটনায় তার বাবা আল আমিন পাটোয়ারী মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

হত্যা মামলা দিয়ে কেন সাংবাদিক হয়রানি, আদালতে প্রশ্ন ফারজানা রূপার

আপডেট সময় : ০৬:৩০:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাংবাদিকদের হত্যা মামলায় জড়িয়ে ‘হয়রানি করা হচ্ছে’ অভিযোগ করে আদালতের কাছে সুবিচার চাইলেন একাত্তর টিভি সাবেক সাংবাদিক ফারজানা রূপা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে মিরপুর গোল চত্বর এলাকায় আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যা মামলার রিমান্ড শুনানিতে সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন এই সাংবাদিক।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির ইন্সপেক্টর নাসির উদ্দিন সরকার এদিন রূপা ও তার স্বামী শাকিল আহমেদকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চান।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে ছিলেন না।

ফারজানা রূপা বেসরকারি টেলিভিশন স্টেশন একাত্তর টেলিভিশনের সাবেক প্রিন্সিপাল করেসপনডেন্ট। আর শাকিল একই টেলিভিশনের সাবেক হেড অব নিউজ।

ক্ষমতার পালাবদলের পর দেশ ছাড়ার চেষ্টার সময় ২১ আগস্ট ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরে আদাবর থানার এক হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে দুই দফা রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।

নতুন মামলার রিমান্ড শুনানিতে আইনজীবী ফারুকী বলেন, তারা আন্দোলনের সময় উসকানি দিয়েছে। স্বৈরাচার হাসিনাকে স্বৈরাচার বানাতে সহযোগিতা করেছে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।

এরপর ফারজানা রূপা কথা বলার জন্য আদালতের অনুমতি চান। আদালত অনুমতি দিলে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ যেভাবে উসকানি দেওয়ার কথা বলেছে, তাহলে আমাকে সেই উসকানি দেওয়ার জন্য মামলা দেওয়া হোক। হত্যা মামলায় নিয়ে কেন হয়রানি করা হচ্ছে সাংবাদিকদের?

বাংলাদেশে সুবিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানা গেছে। হত্যা মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের কেন হয়রানি করা হচ্ছে, এই প্রশ্ন আমি আপনার (বিচারক) কাছে রেখে গেলাম। আমি এর বিচার চাই।

এরপর পিপি ফারুকী বলেন, ছাত্র আন্দোলনে যারা গুলি করেছে তারা অপরাধী। আর যারা এই হত্যাকাণ্ডে সহায়তাকারী, তারাও একই অপরাধী। তাদেরও একই শাস্তি হবে। শেখ হাসিনার ফ্যাসিজম কায়েম করার জন্য যা যা দরকার, গত ১৫ বছর ধরে শাকিল ও ফারজানা তা করেছে।

গণভবনে সাংবাদিকের একটা মিটিং হয়েছিল, সেখানে তারা ছিল এবং তারা হাসিনাকে বলেছে যে, গাড়ি পোড়ানো হচ্ছে, বিদেশে আপনার শত্রু আছে, দেশে শত্রু আছে (একটা দলের নাম দিয়ে বলছে) তাদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে। এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছে তারা। এখন তিনি (ফারজানা রূপা) বলছেন কথার জন্য উনাকে মামলা দেওয়া হয়েছে।

রূপাকে উদ্দেশ্য করে এ আইনজীবী বলেন, আপনারা ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট বানানোর জন্য যে সহযোগিতা করেছেন। সাংবাদিকদের মধ্যে শাকিল, ফারজানা রূপা, আরো কয়েকজন আছে, শ্যামল দত্তসহ তারা সাংবাদিকদের নাম কলঙ্কিত করেছে। তারা হাজার হাজার কোটি টাকার সুবিধা নিয়েছে।

এরপর শাকিল কিছু বলতে চাইলে মহানগর হাকিম জি এম ফারহান ইশতিয়াক শুনানি শেষ করে তাদের ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ঢাকার মিরপুরে গোলচত্বর এলাকায় গুলিতে নিহত হন আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী। এ ঘটনায় তার বাবা আল আমিন পাটোয়ারী মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।