ঢাকা ১২:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

হত্যা মামলায় সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার কারাগারে

  • আপডেট সময় : ০৮:৫৩:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

আদালত চত্বরে সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাজলা এলাকায় শাহিনুর বেগম নামে এক নারী হত্যা মামলায় সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শনিবার (২১ জুন) শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. জুয়েল রানা জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই শরীফুজ্জামান এ তথ্য দিয়েছেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার ইন্সপেক্টর কাজী রমজানুল হক আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আসামির পক্ষে জামিন শুনানি করেন আইনজীবী মোর্শেদ আলম শাহিন। শুনানিতে তিনি বলেন, আসামিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। আজকে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। আসামি পুলিশের একজন অতিরিক্ত আইজিপি। অসুস্থ ব্যক্তি। এই মামলার সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
তিনি বলেন, সকল আসামি আইনের দৃষ্টিতে সমান। একই ক্যাটাগরির মামলায় সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী জামিন পেয়েছেন। গ্রেফতারের একদিনের মাথায় নায়িকা নুসরাত ফারিয়াও জামিন পেয়েছে। যে কোনো শর্তে তার জামিনের প্রার্থনা করছি।
শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নাকচ করে ইকবাল বাহারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার ইকবাল বাহারকে শুক্রবার ঢাকায় গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতারের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ঢাকায় তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে। শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে ঢাকার একটি ক্লাব থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি সেই ক্লাবে জুয়া খেলছিলেন, সেই অবস্থা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গত জুলাইয়ের গণআন্দোলনের সময়ে তিনটি হত্যা মামলার আসামি ইকবাল বাহার। ঢাকার গুলশান, মিরপুর মডেল ও যাত্রাবাড়ী এই মামলাগুলো দায়ের হয়। যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় বলা হয়েছে, জুলাই আন্দোলনের সময় গত ২২ জুলাই কাজলা ফুটব্রিজের নিচে সাধারণ ছাত্ররা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছিলেন। সেখানে শাহিনুর বেগম খাওয়ার পানি সরবরাহ করেন। আন্দোলকারীদের ওপর দেশীয় সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ, রাবার বুলেট ও গুলি বর্ষণ করা হয়। এ সময় শাহিনুর মাথায় গুরুত্বর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আশেপাশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক মাস ৯ দিন পর ৩১ আগস্ট তিনি মারা যান। এ ঘটনায় শাহিনুরের মেয়ে হাবেজা আক্তার (৩৪) বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৯৭ জনের নামে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আরো অচেনা আরো ২৫০/৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামির তালিকায় ইকবাল বাহারের নাম আছে ২৬ নম্বরে।
১৯৮৯ সালে তিনি এএসপি হিসেবে পুলিশে যোগ দেন। ২০১৬ সালে তাকে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার করা হয়। তার আগে তিনি আগে রাজশাহী পুলিশের ডিআইজিসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ইকবাল বাহার ঢাকা ও যশোরের পুলিশ সুপারও ছিলেন। ২০২২ সালে তিনি অবসরে যান। নানা কারণে পুলিশে আলোচিত ছিলেন তিনি।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অন্তর্বর্তী সরকার ভালো কাজ করছে, আমাদের পথ দেখাচ্ছে: ফখরুল

হত্যা মামলায় সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহার কারাগারে

আপডেট সময় : ০৮:৫৩:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাজলা এলাকায় শাহিনুর বেগম নামে এক নারী হত্যা মামলায় সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শনিবার (২১ জুন) শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. জুয়েল রানা জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের এসআই শরীফুজ্জামান এ তথ্য দিয়েছেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার ইন্সপেক্টর কাজী রমজানুল হক আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আসামির পক্ষে জামিন শুনানি করেন আইনজীবী মোর্শেদ আলম শাহিন। শুনানিতে তিনি বলেন, আসামিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলায় জড়ানো হয়েছে। আজকে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। আসামি পুলিশের একজন অতিরিক্ত আইজিপি। অসুস্থ ব্যক্তি। এই মামলার সাথে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
তিনি বলেন, সকল আসামি আইনের দৃষ্টিতে সমান। একই ক্যাটাগরির মামলায় সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী জামিন পেয়েছেন। গ্রেফতারের একদিনের মাথায় নায়িকা নুসরাত ফারিয়াও জামিন পেয়েছে। যে কোনো শর্তে তার জামিনের প্রার্থনা করছি।
শুনানি শেষে আদালত জামিনের আবেদন নাকচ করে ইকবাল বাহারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনার ইকবাল বাহারকে শুক্রবার ঢাকায় গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতারের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, ঢাকায় তার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা রয়েছে। শুক্রবার বেলা ৩টার দিকে ঢাকার একটি ক্লাব থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি সেই ক্লাবে জুয়া খেলছিলেন, সেই অবস্থা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গত জুলাইয়ের গণআন্দোলনের সময়ে তিনটি হত্যা মামলার আসামি ইকবাল বাহার। ঢাকার গুলশান, মিরপুর মডেল ও যাত্রাবাড়ী এই মামলাগুলো দায়ের হয়। যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় বলা হয়েছে, জুলাই আন্দোলনের সময় গত ২২ জুলাই কাজলা ফুটব্রিজের নিচে সাধারণ ছাত্ররা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছিলেন। সেখানে শাহিনুর বেগম খাওয়ার পানি সরবরাহ করেন। আন্দোলকারীদের ওপর দেশীয় সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদুনে গ্যাস নিক্ষেপ, রাবার বুলেট ও গুলি বর্ষণ করা হয়। এ সময় শাহিনুর মাথায় গুরুত্বর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আশেপাশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক মাস ৯ দিন পর ৩১ আগস্ট তিনি মারা যান। এ ঘটনায় শাহিনুরের মেয়ে হাবেজা আক্তার (৩৪) বাদী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৯৭ জনের নামে মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় আরো অচেনা আরো ২৫০/৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামির তালিকায় ইকবাল বাহারের নাম আছে ২৬ নম্বরে।
১৯৮৯ সালে তিনি এএসপি হিসেবে পুলিশে যোগ দেন। ২০১৬ সালে তাকে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কমিশনার করা হয়। তার আগে তিনি আগে রাজশাহী পুলিশের ডিআইজিসহ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ইকবাল বাহার ঢাকা ও যশোরের পুলিশ সুপারও ছিলেন। ২০২২ সালে তিনি অবসরে যান। নানা কারণে পুলিশে আলোচিত ছিলেন তিনি।