ঢাকা ০৫:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

হত্যা ও চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তর কামরুল-মেনন-মামুন-মশিউর

  • আপডেট সময় : ০৪:৩৫:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৯৫ বার পড়া হয়েছে

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক এমপি রাশেদ খান মেনন, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন  (কোলাজ ছবি)

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার কয়েকটি থানায় পৃথক চার মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক এমপি রাশেদ খান মেনন, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং পুলিশের সাবেক ডিসি মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ সেফাতুল্লাহ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) এ আদেশ দেন।
এদিন তাদেরকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে তদন্ত কর্মকর্তারা এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
কামরুলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির দুই মামলা: কামরাঙ্গীরচর থানার চাঁদাবাজির দুই মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আদালত। সোমবার সকালে কামরুলকে আদালতে হাজির করার পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামরাঙ্গীরচর থানার এসআই জাহিদ হাসান তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত তা মঞ্জুর করেছে। আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জাহিদ বলেন, তদন্তে বিভিন্ন তথ্য ও সাক্ষ্যে জানা গেছে কামরুল ইসলামের নির্দেশ ও সহযোগিতায় কামরাঙ্গীরচর থানা এলাকায় বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, জমি, দোকান দখল করাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে জোর করে চাঁদার একটি অংশ ভোগ করতেন। তাই তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ভাংচুরের হাত থেকে বাদী সগির আহমেদ সুজনের বাড়ি বাঁচাতে তার কাছ থেকে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন মামলার ১ নম্বর আসামি কামরুল ইসলাম। এরপর বাদী মামলার ৩ নম্বর আসামির মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দেন। তারপর কামরুলের নির্দেশে মামলার অপর আসামীরা গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাদীর বাড়িতে ঢুকে জিনিসপত্র ভাংচুর করাসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় সুজন গত ৪ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলার আবেদন করেন সুজন। আদালত মামলাটি কামরাঙ্গীচর থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে কামরাঙ্গীচর থানা গত ৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করে। এ মামলার সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। কামরুলের বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীরচর থানায় চাঁদাবাজির আরেকটি মামলা করেন আলী আহাম্মদ নামের এক ব্যাক্তি। ৪ সেপ্টেম্বর আদালতে এ মামলার আবেদন করেন তিনি। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে কামরাঙ্গীরচর থানাকে আদেশ দেন। পরবর্তীতে কামরাঙ্গীরচর থানা ৭ সেপ্টেম্বর মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করেন। মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ছাড়াও ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মেনন গ্রেপ্তার মতিঝিল থানার মামলায়: সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পথ সভায় হামলার ঘটনায় করা মতিঝিল থানার মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ মামলায় সাবেক মন্ত্রী ফারুক খান, হাসানুল হক ইনুকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন থাকলেও এদিন তাদের আদালতে উপস্থিত করা হয়নি। তাদের গ্রেপ্তার শুনানি হবে বুধবার। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এস আই শামীম আল মামুন তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। ওই আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আদালত মেননের গ্রেপ্তার মঞ্জুর করেন। গত ২৬ আগস্ট বিএনপির এক কর্মী বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছিলেন।
সাবেক আইজিপি মামুন ও সাবেক ডিসি মশিউর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার: সরকার পতনের দিন ১৬ বছর বয়সী রাকিব হাওলাদার হত্যার ঘটনায় চকবাজার থানার মামলায় সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও লালবাগ জোনের সাবেক ডিসি মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার মডেল থানার পরিদর্শক আবুল খায়ের তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করলে, আদালত এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে তা মঞ্জুর করেন। গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিহত রাকিবের বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে চকবাজার মডেল থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ আগস্টে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোডে মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন রাকিব। মিছিলটি নাজিমউদ্দিন রোড থেকে বের হয়ে চাঁনখারপুল মোড়ে পৌঁছালে ২০০ থেকে ২৫০ জন পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা নির্বিচারে গুলি করে। এতে বাদীর ছেলেসহ আসংখ্য আন্দোলনকারী আহত হয়। এরপর আহত রাকিবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়ার চেষ্টা করা হলে পথে আওয়ামী লীগের কর্মীদের বাধা দেয়। পরে রকিবকে মিডফোর্ট সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

নির্বাচন ভণ্ডুল করার অপচেষ্টাকে রুখে দিতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা

হত্যা ও চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেপ্তর কামরুল-মেনন-মামুন-মশিউর

আপডেট সময় : ০৪:৩৫:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার কয়েকটি থানায় পৃথক চার মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক এমপি রাশেদ খান মেনন, সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং পুলিশের সাবেক ডিসি মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ সেফাতুল্লাহ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) এ আদেশ দেন।
এদিন তাদেরকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে তদন্ত কর্মকর্তারা এসব মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
কামরুলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির দুই মামলা: কামরাঙ্গীরচর থানার চাঁদাবাজির দুই মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে আদালত। সোমবার সকালে কামরুলকে আদালতে হাজির করার পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামরাঙ্গীরচর থানার এসআই জাহিদ হাসান তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত তা মঞ্জুর করেছে। আবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জাহিদ বলেন, তদন্তে বিভিন্ন তথ্য ও সাক্ষ্যে জানা গেছে কামরুল ইসলামের নির্দেশ ও সহযোগিতায় কামরাঙ্গীরচর থানা এলাকায় বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, জমি, দোকান দখল করাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে জোর করে চাঁদার একটি অংশ ভোগ করতেন। তাই তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ভাংচুরের হাত থেকে বাদী সগির আহমেদ সুজনের বাড়ি বাঁচাতে তার কাছ থেকে ১ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন মামলার ১ নম্বর আসামি কামরুল ইসলাম। এরপর বাদী মামলার ৩ নম্বর আসামির মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দেন। তারপর কামরুলের নির্দেশে মামলার অপর আসামীরা গত ২৪ সেপ্টেম্বর বাদীর বাড়িতে ঢুকে জিনিসপত্র ভাংচুর করাসহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় সুজন গত ৪ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলার আবেদন করেন সুজন। আদালত মামলাটি কামরাঙ্গীচর থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। পরবর্তীতে কামরাঙ্গীচর থানা গত ৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করে। এ মামলার সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। কামরুলের বিরুদ্ধে কামরাঙ্গীরচর থানায় চাঁদাবাজির আরেকটি মামলা করেন আলী আহাম্মদ নামের এক ব্যাক্তি। ৪ সেপ্টেম্বর আদালতে এ মামলার আবেদন করেন তিনি। আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে কামরাঙ্গীরচর থানাকে আদেশ দেন। পরবর্তীতে কামরাঙ্গীরচর থানা ৭ সেপ্টেম্বর মামলাটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করেন। মামলায় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ছাড়াও ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মেনন গ্রেপ্তার মতিঝিল থানার মামলায়: সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পথ সভায় হামলার ঘটনায় করা মতিঝিল থানার মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এ মামলায় সাবেক মন্ত্রী ফারুক খান, হাসানুল হক ইনুকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন থাকলেও এদিন তাদের আদালতে উপস্থিত করা হয়নি। তাদের গ্রেপ্তার শুনানি হবে বুধবার। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এস আই শামীম আল মামুন তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন। ওই আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে আদালত মেননের গ্রেপ্তার মঞ্জুর করেন। গত ২৬ আগস্ট বিএনপির এক কর্মী বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছিলেন।
সাবেক আইজিপি মামুন ও সাবেক ডিসি মশিউর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার: সরকার পতনের দিন ১৬ বছর বয়সী রাকিব হাওলাদার হত্যার ঘটনায় চকবাজার থানার মামলায় সাবেক আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুন ও লালবাগ জোনের সাবেক ডিসি মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার মডেল থানার পরিদর্শক আবুল খায়ের তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করলে, আদালত এ বিষয়ে শুনানি নিয়ে তা মঞ্জুর করেন। গত ২৩ সেপ্টেম্বর নিহত রাকিবের বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন বাদী হয়ে চকবাজার মডেল থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ আগস্টে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দীন রোডে মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন রাকিব। মিছিলটি নাজিমউদ্দিন রোড থেকে বের হয়ে চাঁনখারপুল মোড়ে পৌঁছালে ২০০ থেকে ২৫০ জন পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা নির্বিচারে গুলি করে। এতে বাদীর ছেলেসহ আসংখ্য আন্দোলনকারী আহত হয়। এরপর আহত রাকিবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নেওয়ার চেষ্টা করা হলে পথে আওয়ামী লীগের কর্মীদের বাধা দেয়। পরে রকিবকে মিডফোর্ট সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।