ঢাকা ০৭:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫

হতাশা নয়, লড়াই করেই এগোতে হবে: নেতাকর্মীদের ফখরুল

  • আপডেট সময় : ০১:৫৮:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুন ২০২১
  • ১০৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারকে ‘দানব’ আখ্যা দিয়ে নেতাকর্মীদের আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর এই আন্দোলন করতে গিয়ে কোনো হতাশা নয়, পরিকল্পিত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত ‘বৈশ্বিক দুর্যোগ: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বেগম খালেদা জিয়া অতি দ্রুত সুস্থ হয়ে বিএনপির সংগ্রামে নেতৃত্ব দেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘হতাশ হবেন না। সংগ্রাম লড়াই করেই এগোতে হবে। দানব সরকার সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে। পরিকল্পিত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এগুতে হবে।’
ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই, জনগণের প্রতি তাদের দায়িত্বও নেই। দুদিন আগে একটা বাজেট দিয়েছে। সে বাজেটে দেখেন তো পরিবেশ প্রকৃতির ওপর কত টাকা বরাদ্দ করা আছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ক্লাইমেট চেঞ্জের ওপর বিশ্ব ব্যাংকের একটা ফান্ড আছে। সে ফান্ড থেকে গত কয়েক বছর ধরে তারা ৭০০ কোটি টাকা ফান্ডও পেয়েছে। তার অর্ধেক খেয়ে ফেলেছে, আর অর্ধেক ফেরত দিয়েছে। সরকারের কর্মকা-ের মূল লক্ষ্য ছিল লুট করা। লুট করা ছাড়া তাদের আর কোনো কর্মকা- আমি দেখতে পাই না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার বড় বড় মেগা প্রজেক্ট করছে। এই মেগা প্রজেক্টগুলো কেন? বারবার করে বলছি করোনা থেকে মানুষকে বাঁচানোর জন্য নগদ টাকা সরবরাহ করতে, সেদিকে সরকারের কোনো লক্ষ্য নেই। তারা এই পারপাসে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। মেগা প্রজেক্টের জন্য এবারও দিয়েছে ৭৫ হাজার কোটি টাকা। যেটা এই মুহূর্তে কোনো প্রয়োজন নেই। সবচেয়ে বড় প্রয়োজন মানুষকে বাঁচানো।’ ফখরুল বলেন, ‘পরিবেশ রক্ষায় আমাদের নেতাদের বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতাদের এবং সরকার দলীয়দের নেতাদের, বিশ্ব নেতাদের কমিটমেন্ট প্রয়োজন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাস্তবতা হচ্ছে পৃথিবী ধ্বংস হচ্ছে। পৃথিবী অতি দ্রুত তার ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। কারণ উন্নত দেশগুলো তাদের স্বার্থে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট করেছে। কার্বনের কারণেও ওজন মন্ডল ফুটো হয়ে গেছে। যার ফলে পৃথিবীর উষ্ণতা সৃষ্টি হয়েছে। এই উষ্ণতার ফলে পৃথিবীর সকল ইকোসিস্টেম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখানে বিশ্ব নেতাদের একটা কমিটমেন্ট প্রয়োজন। সে কমিটমেন্ট নিয়ে পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে হবে।’
বিএনপি সরকারের সফলতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া পরিবেশের জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তা ইকো ব্যালেন্স রক্ষা করার জন্য। এই যে উপকূলের সবুজ বেষ্টনী, সেসময় লাখ লাখ গাছ লাগানো হয়েছিল। রাস্তার ধারে গাছ লাগানোয় সামাজিক বনায়ন হবে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জিয়াউর রহমান যে খাল খনন কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন, তার তিনটি দিক ছিল। তা হচ্ছে প্রকৃতিক পানি সংরক্ষণ করা ও সেখান থেকে ইরিগেশন করা, মাছের চাষ করা এবং খালের দুই ধারে বাগান তৈরি করা।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা কীভাবে নদী, পানি, মাটি এবং তার বর্জ্য ম্যানেজমেন্ট করব এটার ওপর নির্ভর করবে কতটা সাসটেইনেবল এনভায়রমেন্ট এবং ইকোনমি করতে পারব।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘জবাবদিহিমূলক সরকার না হলে পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখা সম্ভব নয়। দুর্নীতিতে আমাদের সূচক অনেক উপরে।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মূর্খের শাসন চলছে এই অঞ্চলে। বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে সচেতন নন একনায়ক বিশ্বনেতারা। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য অনুদান পেলেও তা জনগণের কাছে পৌঁছায় না। গণতান্ত্রিক সরকার নেই বলেই পরিবেশ সংরক্ষণে কোনো ভূমিকা রাখছে না। দলে ও দেশে গণতান্ত্রিক আচরণ থাকতে হবে। তুমুল গণআন্দোলনে ন্যায়শাসন প্রতিষ্ঠা হলেই পরিবেশ বিপর্যয় রক্ষা করা সম্ভব।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহসম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন প্রমুখ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

হতাশা নয়, লড়াই করেই এগোতে হবে: নেতাকর্মীদের ফখরুল

আপডেট সময় : ০১:৫৮:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুন ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : সরকারকে ‘দানব’ আখ্যা দিয়ে নেতাকর্মীদের আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর এই আন্দোলন করতে গিয়ে কোনো হতাশা নয়, পরিকল্পিত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত ‘বৈশ্বিক দুর্যোগ: ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বেগম খালেদা জিয়া অতি দ্রুত সুস্থ হয়ে বিএনপির সংগ্রামে নেতৃত্ব দেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘হতাশ হবেন না। সংগ্রাম লড়াই করেই এগোতে হবে। দানব সরকার সবকিছু তছনছ করে দিচ্ছে। পরিকল্পিত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এগুতে হবে।’
ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়। জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই, জনগণের প্রতি তাদের দায়িত্বও নেই। দুদিন আগে একটা বাজেট দিয়েছে। সে বাজেটে দেখেন তো পরিবেশ প্রকৃতির ওপর কত টাকা বরাদ্দ করা আছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ক্লাইমেট চেঞ্জের ওপর বিশ্ব ব্যাংকের একটা ফান্ড আছে। সে ফান্ড থেকে গত কয়েক বছর ধরে তারা ৭০০ কোটি টাকা ফান্ডও পেয়েছে। তার অর্ধেক খেয়ে ফেলেছে, আর অর্ধেক ফেরত দিয়েছে। সরকারের কর্মকা-ের মূল লক্ষ্য ছিল লুট করা। লুট করা ছাড়া তাদের আর কোনো কর্মকা- আমি দেখতে পাই না।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার বড় বড় মেগা প্রজেক্ট করছে। এই মেগা প্রজেক্টগুলো কেন? বারবার করে বলছি করোনা থেকে মানুষকে বাঁচানোর জন্য নগদ টাকা সরবরাহ করতে, সেদিকে সরকারের কোনো লক্ষ্য নেই। তারা এই পারপাসে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। মেগা প্রজেক্টের জন্য এবারও দিয়েছে ৭৫ হাজার কোটি টাকা। যেটা এই মুহূর্তে কোনো প্রয়োজন নেই। সবচেয়ে বড় প্রয়োজন মানুষকে বাঁচানো।’ ফখরুল বলেন, ‘পরিবেশ রক্ষায় আমাদের নেতাদের বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতাদের এবং সরকার দলীয়দের নেতাদের, বিশ্ব নেতাদের কমিটমেন্ট প্রয়োজন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বাস্তবতা হচ্ছে পৃথিবী ধ্বংস হচ্ছে। পৃথিবী অতি দ্রুত তার ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে। কারণ উন্নত দেশগুলো তাদের স্বার্থে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট করেছে। কার্বনের কারণেও ওজন মন্ডল ফুটো হয়ে গেছে। যার ফলে পৃথিবীর উষ্ণতা সৃষ্টি হয়েছে। এই উষ্ণতার ফলে পৃথিবীর সকল ইকোসিস্টেম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখানে বিশ্ব নেতাদের একটা কমিটমেন্ট প্রয়োজন। সে কমিটমেন্ট নিয়ে পৃথিবীকে বাঁচানোর চেষ্টা করতে হবে।’
বিএনপি সরকারের সফলতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া পরিবেশের জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তা ইকো ব্যালেন্স রক্ষা করার জন্য। এই যে উপকূলের সবুজ বেষ্টনী, সেসময় লাখ লাখ গাছ লাগানো হয়েছিল। রাস্তার ধারে গাছ লাগানোয় সামাজিক বনায়ন হবে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। জিয়াউর রহমান যে খাল খনন কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন, তার তিনটি দিক ছিল। তা হচ্ছে প্রকৃতিক পানি সংরক্ষণ করা ও সেখান থেকে ইরিগেশন করা, মাছের চাষ করা এবং খালের দুই ধারে বাগান তৈরি করা।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা কীভাবে নদী, পানি, মাটি এবং তার বর্জ্য ম্যানেজমেন্ট করব এটার ওপর নির্ভর করবে কতটা সাসটেইনেবল এনভায়রমেন্ট এবং ইকোনমি করতে পারব।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘জবাবদিহিমূলক সরকার না হলে পরিবেশ সংরক্ষণে ভূমিকা রাখা সম্ভব নয়। দুর্নীতিতে আমাদের সূচক অনেক উপরে।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মূর্খের শাসন চলছে এই অঞ্চলে। বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে সচেতন নন একনায়ক বিশ্বনেতারা। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য অনুদান পেলেও তা জনগণের কাছে পৌঁছায় না। গণতান্ত্রিক সরকার নেই বলেই পরিবেশ সংরক্ষণে কোনো ভূমিকা রাখছে না। দলে ও দেশে গণতান্ত্রিক আচরণ থাকতে হবে। তুমুল গণআন্দোলনে ন্যায়শাসন প্রতিষ্ঠা হলেই পরিবেশ বিপর্যয় রক্ষা করা সম্ভব।’
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সহসম্পাদক কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন প্রমুখ।