ঢাকা ১১:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হঠাৎ কেন ফেসবুক-ইউটিউবসহ ২৬ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করলো নেপাল

  • আপডেট সময় : ০৬:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ২৬ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

প্রত্যশা ডেস্ক: সামাজিক মাধ্যমের বিরুদ্ধে একপ্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে নেপালের সরকার। তাদের নির্ধারিত নিয়ম মেনে নিবন্ধন না করায় ফেসবুক, এক্স, ইউটিউবসহ বেশিরভাগ সামাজিক মাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

এই ঘোষণার পর ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে নেপালের ছাত্র-জনতা। দেশটির জেন-জি আন্দোলনকারীরা  সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) কাঠমান্ডুতে সংসদ ভবনে ঢুকে পড়েছে। দেশজুড়ে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায়-দফায় সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১৪ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

জানা যায়, ২০২৩ সালে নেপালের যোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করে জানিয়েছিল, নেপালে কার্যক্রম চালাতে চাইলে সব নেটওয়ার্ককে নিবন্ধন করতে হবে। প্ল্যাটফর্মগুলোকে ২৮ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছিল নিবন্ধনের জন্য। কিন্তু ৪ সেপ্টেম্বর রাত পর্যন্ত মেটা, অ্যালফাবেট, এক্স, রেডিট ও লিংকডইনের মতো কোনো বড় প্রতিষ্ঠান আবেদন জমা দেয়নি। ফলে ২৬টি প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সরকারের দাবি, ভুয়া অ্যাকাউন্ট, বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ও সাইবার অপরাধ দমনের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সরকারের এ পদক্ষেপকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে বিভিন্ন অধিকার গোষ্ঠী।

নেপালের যোগাযোগ ও তথ্যমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং জানান, দেশে বহুল ব্যবহৃত প্রায় দুই ডজন সামাজিক নেটওয়ার্ককে বারবার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল সরকারিভাবে নিবন্ধনের জন্য। কিন্তু তারা তা না করায় অবিলম্বে প্ল্যাটফর্মগুলো বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তবে, টিকটক, ভাইবার এবং আরও তিনটি সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম নেপালে চালু থাকবে, কারণ তারা সরকারের সাথে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।

এর আগে নেপাল সরকার এসব কোম্পানিকে দেশে একটি লিয়াজোঁ অফিস বা প্রতিনিধি নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছিল। সামাজিক মাধ্যমের সঠিক ব্যবস্থাপনা, জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে সরকার সংসদে একটি বিলও উত্থাপন করেছে। যদিও বিলটি এখনো সংসদে পূর্ণাঙ্গ আলোচনার মুখ দেখেনি।

তবে এ বিলকে সেন্সরশিপের চেষ্টা হিসেবে সমালোচনা করছে অধিকারকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, অনলাইনে সরকারের সমালোচনাকারীদের দমন এবং নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত করতেই এ উদ্যোগ। এ ধরনের আইন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করবে এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করবে।

ওআ/আপ্র/০৮/০৯/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

হঠাৎ কেন ফেসবুক-ইউটিউবসহ ২৬ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করলো নেপাল

আপডেট সময় : ০৬:২৯:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

প্রত্যশা ডেস্ক: সামাজিক মাধ্যমের বিরুদ্ধে একপ্রকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে নেপালের সরকার। তাদের নির্ধারিত নিয়ম মেনে নিবন্ধন না করায় ফেসবুক, এক্স, ইউটিউবসহ বেশিরভাগ সামাজিক মাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

এই ঘোষণার পর ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে নেপালের ছাত্র-জনতা। দেশটির জেন-জি আন্দোলনকারীরা  সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) কাঠমান্ডুতে সংসদ ভবনে ঢুকে পড়েছে। দেশজুড়ে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায়-দফায় সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১৪ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

জানা যায়, ২০২৩ সালে নেপালের যোগাযোগ ও তথ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করে জানিয়েছিল, নেপালে কার্যক্রম চালাতে চাইলে সব নেটওয়ার্ককে নিবন্ধন করতে হবে। প্ল্যাটফর্মগুলোকে ২৮ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছিল নিবন্ধনের জন্য। কিন্তু ৪ সেপ্টেম্বর রাত পর্যন্ত মেটা, অ্যালফাবেট, এক্স, রেডিট ও লিংকডইনের মতো কোনো বড় প্রতিষ্ঠান আবেদন জমা দেয়নি। ফলে ২৬টি প্ল্যাটফর্ম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

সরকারের দাবি, ভুয়া অ্যাকাউন্ট, বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য ও সাইবার অপরাধ দমনের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সরকারের এ পদক্ষেপকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছে বিভিন্ন অধিকার গোষ্ঠী।

নেপালের যোগাযোগ ও তথ্যমন্ত্রী পৃথ্বী সুব্বা গুরুং জানান, দেশে বহুল ব্যবহৃত প্রায় দুই ডজন সামাজিক নেটওয়ার্ককে বারবার নোটিশ দেওয়া হয়েছিল সরকারিভাবে নিবন্ধনের জন্য। কিন্তু তারা তা না করায় অবিলম্বে প্ল্যাটফর্মগুলো বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তবে, টিকটক, ভাইবার এবং আরও তিনটি সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম নেপালে চালু থাকবে, কারণ তারা সরকারের সাথে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।

এর আগে নেপাল সরকার এসব কোম্পানিকে দেশে একটি লিয়াজোঁ অফিস বা প্রতিনিধি নিয়োগের আহ্বান জানিয়েছিল। সামাজিক মাধ্যমের সঠিক ব্যবস্থাপনা, জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে সরকার সংসদে একটি বিলও উত্থাপন করেছে। যদিও বিলটি এখনো সংসদে পূর্ণাঙ্গ আলোচনার মুখ দেখেনি।

তবে এ বিলকে সেন্সরশিপের চেষ্টা হিসেবে সমালোচনা করছে অধিকারকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, অনলাইনে সরকারের সমালোচনাকারীদের দমন এবং নাগরিকদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিত করতেই এ উদ্যোগ। এ ধরনের আইন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করবে এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করবে।

ওআ/আপ্র/০৮/০৯/২০২৫