ক্রীড়া ডেস্ক: জাতীয় দল গঠনের ক্ষেত্রে যখন কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠির খেয়ালখুশি প্রধান্য পায় তখন সেই খেলার ফলাফলে ভরাডুবি হওয়ার শঙ্কাই বেশি থাকে। কোনো নিয়মনীতি ছাড়াই বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন যখন এএইচএফ কাপের দলগঠন প্রক্রিয়া শুরু করে তা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় হয়েছিল হকি অঙ্গন। জাতীয় দলের জন্য খেলোয়াড়দের বয়স নির্ধারণ করেছিল ফেডারেশন। যাতে বাদ পড়ে দেশসেরা খেলোয়াড় রাসেল মাহমুদ জিমি। তাকে কুপারটেস্টের জন্যও ডাকেনি ফেডারেশনের নতুন অ্যাডহক কমিটি। দেশের খেলাধুলার অভিভাবক ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জাতীয় অ্যাথলেটিকস উদ্বোধন করতে ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে আসলে বিষয়টি তাকে জানিয়েছিলেন ক্রীড়া সাংবাদিকরা। ওই সময় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। উপদেষ্টা বলেছিলেন তিনি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। হয়তো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তারা সেটা আর মনে করিয়ে দেননি তাদের চেয়ারম্যানকে।
জিমিকে ছাড়াই ইন্দোনেশিয়া যায় বাংলাদেশ। টানা চারবারের চ্যাম্পিয়নরা এবার ফাইনালেই উঠতে পারেনি। সবচেয়ে বড় কথা এই ব্যর্থতায় প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপে খেলার যোগ্যতাও হারায় বাংলাদেশ। হকি দল ব্যর্থ হয়ে দেশে ফেরার পর টনক নড়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। ‘কোন আইনের বলে জাতীয় দলের খেলোয়াড় নির্বাচনে ফিটনেস ও পারফরম্যান্সের বদলে বয়স দেখা হয়েছে’- জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ যদি এই ব্যাখ্যাটাও চাইতো ফেডারেশনের কাছে তাহলে হয়তো জিমির ফেরার সুযোগ তৈরি হতো।
ফেডারেশনের ওই ‘কালো আইন’ কি কোনো ব্যক্তি করেছেন? নাকি ফেডারেশনের সাধারণ সভা কিংবা নির্বাহী কমিটির সভায় নেওয়া হয়েছে? জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এই প্রশ্ন করার অধিকার ছিল।
দেশের ক্রীড়ার অন্যতম অভিভাবক প্রতিষ্ঠান হয়েও তখন সেটা করেনি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। হকি দল চরম ব্যর্থ হওয়ার পর গণমাধ্যমে সমালোচনায় এখন তাদের ঘুম ভেঙ্গেছে। গণমাধ্যমকর্মীরাই কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান ব্যক্তির নজরে আগেই বিষয়টি এনেছিলেন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এই কমিটির মাধ্যমে কি কারণ খুঁজে বের করবে সেটা তারাই জানে। কারণ, তিন সদস্যের যে কমিটি গঠন করা হয়েছে সেখানে হকির বুঝদার কোনো ব্যক্তি নেই। তিনজন সরকারী কর্মকর্তা হকির টেকনিক্যাল বিষয়ে কতটা গভীরে যেতে পারবেন সেটাই প্রশ্ন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ গঠিত কমিটির আহ্বায়ক ওই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক খেলাধুলা। দুই সদস্য চেয়ারম্যান আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার একান্ত সচিব ও সহকারী পরিচালক খেলাধুলা।