ঢাকা ০২:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সয়াবিনের ধাক্কার পর পেঁয়াজের ভেংচি

  • আপডেট সময় : ১১:৫৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ মে ২০২২
  • ১১৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : হঠাৎ বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দেশের খুচরা ও পাইকারি উভয় বাজারে দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণ বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। ঈদের আগে ২৫ টাকা কেজি ছিল পেঁয়াজ। ক্রেতাদের এখন সেই পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। ঈদের পর এক সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা যায়, শুধু পেঁয়াজই নয়, রসুন, আলু, ডিম ও আটার দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। এছাড়াও নতুন করে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ময়দা, সয়াবিন, পাম অয়েল, মসুর ডাল, ব্রয়লার মুরগি, চিনি, হলুদ, আদা, জিরা, গুঁড়াদুধসহ অন্তত ডজন খানেক পণ্যের নাম। সরকারের বিপণন সংস্থা টিসিবি বলছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আটা, ময়দা, ভোজ্যতেল, মসুর ডাল, ছোলা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, শুকনো মরিচ, হলুদ, আদা, জিরা, গরুর মাংস, মুরগি ও ডিম—এই ১৫টি খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এসব পণ্যের দাম সর্বনি¤œ দেড় শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ প্রায় সাড়ে ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। প্রসঙ্গত, পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগে বাজারে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম কয়েক দফা বেড়েছিল। দাম বৃদ্ধির এই প্রবণতা রমজান মাসজুড়েই দেখা যায়। রমজান শেষে ঈদের দুই দিন পর ৫ মে হঠাৎ সয়াবিন তেলের দাম লিটারে একলাফে ৩৮-৪৪ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায়। এই ধাক্কা সামলানোর আগেই এখন নতুন করে বাজারে বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের দাম আরেক দফা বাড়তে শুরু করেছে।
পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির তালিকা আরও দীর্ঘ হতে পারে। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ায় আমদানি করা প্রায় সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম সামনে আরও বাড়বে বলে মনে করছেন তারা। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের পাশাপাশি দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। অথচ সপ্তাহের শুরুতেও পেঁয়াজের কেজি ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩৯ শতাংশ। টিসিবির তথ্যও বলছে, গত সপ্তাহের ৩০ টাকা কেজি দেশি পেঁয়াজ এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। এদিকে রাজধানীর গোপীবাগে দেখা যায়, দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ একই দামে প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দেশের খুচরা ও পাইকারি উভয় বাজারে দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা দেশি রসুনের কেজি বিক্রি করছেন ৯০ থেকে ১০০ টাকা, যা একদিন আগেই ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কয়েক দিন আগে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আমদানি করা রসুনের দাম বেড়ে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা হয়েছে।
টিসিবির তথ্য বলছে, গত সপ্তাহের ৫০ টাকা কেজি রসুন এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। সরকারি হিসাবেই এক সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে রসুনের কেজিতে দাম বেড়েছে ৩৯ শতাংশ। মানিকনগর এলাকার ব্যবসায়ী রমজান আলী বলেন, কয়েক দিন আগে আমরা যে রসুন ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি, আজ আমাদেরই কিনতে হয়েছে ৮৫ টাকা কেজি দরে।
বাজারে এখন ভোজ্যতেলের সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও দাম কমেনি। খুচরা পর্যায়ে খোলা সয়াবিন তেলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। পাম অয়েলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা। আর বোতলের পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৯৮০ থেকে ৯৮৫ টাকা। দাম বেড়েছে ডালেরও। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে মোটা দানার মসুর ডালের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। আর সরু দানা মসুর ডালের কেজি এখন ১৩০ টাকা। ঈদের আগে দাম ছিল ১২০ টাকা। ঈদের পরও ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া খোলা চিনি ২ টাকা বেশি দামে ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খোলা ময়দার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এদিকে ঈদের আগে ৭০০ টাকা কেজিতে ওঠা গরুর মাংসের দামে কোনও পরিবর্তন আসেনি। বেশিরভাগ মাংস ব্যবসায়ী গরুর মাংসের কেজি ৭০০ টাকা বিক্রি করছেন। তবে মহল্লার সাপ্তাহিক ব্যবসায়ীরা গরুর মাংসের কেজি বিক্রি করছেন ৭২০ টাকা কেজি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সয়াবিনের ধাক্কার পর পেঁয়াজের ভেংচি

আপডেট সময় : ১১:৫৭:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ মে ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : হঠাৎ বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দেশের খুচরা ও পাইকারি উভয় বাজারে দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণ বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। ঈদের আগে ২৫ টাকা কেজি ছিল পেঁয়াজ। ক্রেতাদের এখন সেই পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। ঈদের পর এক সপ্তাহে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেখা যায়, শুধু পেঁয়াজই নয়, রসুন, আলু, ডিম ও আটার দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। এছাড়াও নতুন করে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ময়দা, সয়াবিন, পাম অয়েল, মসুর ডাল, ব্রয়লার মুরগি, চিনি, হলুদ, আদা, জিরা, গুঁড়াদুধসহ অন্তত ডজন খানেক পণ্যের নাম। সরকারের বিপণন সংস্থা টিসিবি বলছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে আটা, ময়দা, ভোজ্যতেল, মসুর ডাল, ছোলা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, শুকনো মরিচ, হলুদ, আদা, জিরা, গরুর মাংস, মুরগি ও ডিম—এই ১৫টি খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এসব পণ্যের দাম সর্বনি¤œ দেড় শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ প্রায় সাড়ে ৩৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। প্রসঙ্গত, পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগে বাজারে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম কয়েক দফা বেড়েছিল। দাম বৃদ্ধির এই প্রবণতা রমজান মাসজুড়েই দেখা যায়। রমজান শেষে ঈদের দুই দিন পর ৫ মে হঠাৎ সয়াবিন তেলের দাম লিটারে একলাফে ৩৮-৪৪ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায়। এই ধাক্কা সামলানোর আগেই এখন নতুন করে বাজারে বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের দাম আরেক দফা বাড়তে শুরু করেছে।
পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির তালিকা আরও দীর্ঘ হতে পারে। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ায় আমদানি করা প্রায় সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম সামনে আরও বাড়বে বলে মনে করছেন তারা। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের পাশাপাশি দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। অথচ সপ্তাহের শুরুতেও পেঁয়াজের কেজি ছিল ২৫ থেকে ৩০ টাকা। টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩৯ শতাংশ। টিসিবির তথ্যও বলছে, গত সপ্তাহের ৩০ টাকা কেজি দেশি পেঁয়াজ এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। এদিকে রাজধানীর গোপীবাগে দেখা যায়, দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজ একই দামে প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আসা বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দেশের খুচরা ও পাইকারি উভয় বাজারে দেশি ও ভারতীয় পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা দেশি রসুনের কেজি বিক্রি করছেন ৯০ থেকে ১০০ টাকা, যা একদিন আগেই ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। কয়েক দিন আগে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আমদানি করা রসুনের দাম বেড়ে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা হয়েছে।
টিসিবির তথ্য বলছে, গত সপ্তাহের ৫০ টাকা কেজি রসুন এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। সরকারি হিসাবেই এক সপ্তাহের ব্যবধানে রসুনের কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে রসুনের কেজিতে দাম বেড়েছে ৩৯ শতাংশ। মানিকনগর এলাকার ব্যবসায়ী রমজান আলী বলেন, কয়েক দিন আগে আমরা যে রসুন ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি, আজ আমাদেরই কিনতে হয়েছে ৮৫ টাকা কেজি দরে।
বাজারে এখন ভোজ্যতেলের সরবরাহ কিছুটা বাড়লেও দাম কমেনি। খুচরা পর্যায়ে খোলা সয়াবিন তেলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। পাম অয়েলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯৫ থেকে ২০০ টাকা। আর বোতলের পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৯৮০ থেকে ৯৮৫ টাকা। দাম বেড়েছে ডালেরও। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে মোটা দানার মসুর ডালের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। আর সরু দানা মসুর ডালের কেজি এখন ১৩০ টাকা। ঈদের আগে দাম ছিল ১২০ টাকা। ঈদের পরও ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া খোলা চিনি ২ টাকা বেশি দামে ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খোলা ময়দার দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। এদিকে ঈদের আগে ৭০০ টাকা কেজিতে ওঠা গরুর মাংসের দামে কোনও পরিবর্তন আসেনি। বেশিরভাগ মাংস ব্যবসায়ী গরুর মাংসের কেজি ৭০০ টাকা বিক্রি করছেন। তবে মহল্লার সাপ্তাহিক ব্যবসায়ীরা গরুর মাংসের কেজি বিক্রি করছেন ৭২০ টাকা কেজি।