নিজস্ব প্রতিবেদক: সড়কে শৃঙ্খলা আনতে অপারেশন ডেভিল হান্টের মত অভিযান যেন চালাতে না হয়, সে বিষয়ে বাস মালিকদের সতর্ক করেছেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মো: এহছানুল হক।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে আলাপ করা হয়েছে, ক্রটিপূর্ণ বাস মেরামতে তারা সহজ শর্তে ঋণ দেবে। বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা দেবে। তাই মে মাসের পর আর মেয়াদোত্তীর্ণ বাস সড়কে যেন না চলে, সেই অনুরোধ করছি।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আসাদগেইটে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) ব্যবস্থাপনায় ৫০টি নতুন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস চালুর অনুষ্ঠানে কথা বলছিলেন তিনি।
এহছানুল হক বলেন, জাহাঙ্গীর গেইটের সামনে দিয়ে বাস যখন চলাচল করে, তখন চালানোর ধরন বদলে যায়। আর অন্য সময় বেপরোয়া গতিতে বাস চালায়। নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয় না।
তাই আমি চাই সব সড়কেই নিয়ম নীতি অনুসরণ করে বাস চালাতে হবে। সড়কে শান্তিপূর্ণভাবে সকল সমস্যার সমাধান করতে হবে। সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা আনতে হলে ডেভিল হান্টের মত অভিযান যেন করতে না হয়, তা মালিকদেরকে বলতে চাই।
এ অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করা এসি বাসগুলো গাবতলী- সায়েন্সল্যাব- গুলিস্তান- যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার – নারায়ণগঞ্জ রুটে চলবে।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার বলেন, গণপরিবহন একটি শহরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এতদিন গণপরিবহনে সমস্যা ছিল। নানা রকমের ত্রুটি ছিল বাসগুলোতে। নতুন এ বাসগুলো যাত্রীদের জন্য আরামদায়ক ও জনপ্রিয় হবে। এটা ব্যবহারে উৎসাহ পাবেন যাত্রীরা। তাতে গণপরিবহনের ব্যবহার বাড়বে।
যাত্রীরা টিকেট কেটে উঠুন। যাত্রীদের সাথে শ্রমিকদের ভালো ব্যবহার করুন। মালিকরা বাস সময় মতো ছাড়বেন।
সম্মিলিত শ্রমিক পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী শামসুর রহমান শিমুল বিশাস বলেন, দেশের সড়কে শৃঙ্খলা আনতে না পারায় এক রকম প্রভাব পড়েছে। দীর্ঘদিনের সড়ক নিয়ে বিরক্ত সবাই। সড়ক পরিবহন খাত সবচেয়ে বিশৃঙ্খল।
তবে ছয় মাসের মধ্যে পরিবহন খাতে কোনো ধর্ঘট হয়নি। সড়ক পরিবহনে শৃঙ্খলা আনা দুরুহ কাজ। শ্রমিক ও মালিকদের সাথে নিয়ে সড়ক পরিবহনে পরিবর্তন দেখতে পারব বলে আমি মনে করি।
গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে গত বছরের শেষদিকে নতুন করে কোম্পানির আওতায় বাস চালানোর প্রক্রিয়া শুরু করে ডিটিসিএ।
গত ডিসেম্বরে ডিটিসিএ জানায়, ঢাকার সবগুলো পরিবহনের বাস চলবে ৪২টি রুটে। একটি রুটে বাস পরিচালনা করবে একটি কোম্পানি।
৪২টি রুটকে গোলাপী, নীল, লাল, কমলা, সবুজ, বেগুনি, নর্থ, নর্থ ওয়েস্ট এবং সাউথ- এই নয়টি গুচ্ছে ভাগ করা হয়েছে। ছয়টি রুটের বাস চলবে ঢাকা মহানগরে, তিনটি গুচ্ছের বাস চলবে শহরতলী রুটে। প্রতিটি গুচ্ছে চলাচলকারী বাসের আলাদা রং হবে, একটি গুচ্ছে একাধিক রুট থাকতে পারে।
ঢাকা নগর পরিবহনের রুটে কোম্পানির অধীনে বাস চালাতে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে আবেদন চাওয়া হয়েছে। ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত আড়াইশটি আবেদন জমা পড়ে। যাদের সম্মিলিত বাসের সংখ্যা তিন হাজারের বেশি।