ঢাকা ০১:৪৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

সড়কে বেড়েছে গাড়ি

  • আপডেট সময় : ০১:৪৬:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুলাই ২০২১
  • ১০৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে চলমান সর্বাত্মক লকডাউনে জরুরি পরিষেবা ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও চতুর্থ দিন গতকাল রোববার রাজধানীর সড়কগুলোতে গাড়ির চাপ বেড়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চেকপোস্টে সব গাড়ি থামিয়ে অহেতুক ঘোরাঘুরি করছে কি না তা যাচাই ও কাগজপত্র চেক করছে। এ কারণে পুলিশের অনেক চেকপোস্টে গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় যৌক্তিক কারণ দেখাতে না পারা ব্যক্তিগত গাড়িগুলোকে ঘুরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, চলমান লকডাউনে ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তায় চলার কোনো সুযোগ নেই। তবে প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা গাড়িগুলো রাস্তায় চলতে পারবে।
রাজধানীর সাত মসজিদ রোড, মিরপুর রোড ও গাবতলী চেকপোস্ট ঘুরে দেখা যায়, রাসেল স্কয়ার, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল মোড় ও গাবতলী চেকপোস্টে গাড়ির ব্যাপক জটলা। এসব চেকপোস্টে প্রত্যেকটা গাড়ি থামানো হচ্ছে। অপ্রয়োজনে বের হওয়া গাড়িগুলোকে মামলাও দেয়া হচ্ছে।
সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনে সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও বেশ কিছু অফিস খোলা রয়েছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করেন তারা কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বের হয়েছেন। সেক্ষেত্রে কেউ ব্যক্তিগত গাড়িতে বা অন্যের গাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রজ্ঞাপনে বলা ছিল, কোনো ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তায় নামবে না। প্রয়োজনে অফিস তার কর্মীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করবে। মূলত এই বিষয়টি মাথায় রেখেই পুলিশ গাড়িগুলোকে কঠোরভাবে চেক করছে।
বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্টগুলোতে মানুষকে বিভিন্ন অজুহাতও দিতে দেখা গেছে। দেখা গেছে চিকিৎসকের ব্যক্তিগত গাড়িতে তার পরিবারের লোকজন যাতায়াত করছেন, বিজিএমইএর দেয়া অনুমতিপত্রের সাথে গাড়ির নম্বরের মিল নেই, প্রতিষ্ঠানের কর্মী পরিবহনের গাড়ি না হওয়ার পরও বলা হচ্ছে কর্মী পরিবহনে নিয়োজিত, জরুরি সেবার কথা বলে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করাসহ নানা বাহানায় রাস্তায় গাড়ি চলাচল করছে। এসব গাড়িকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ।
এছাড়া পায়ে হেঁটে বা রিকশায় বিনা কারণে ঘোরাঘুরি বন্ধ করতেও তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে অভিযান চালাচ্ছেন। এসময় জরিমানাসহ গ্রেপ্তারও করা হচ্ছে।
চতুর্থ দিনে গ্রেপ্তার ৬১৮, জরিমানা ১৩ লাখ : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনের চতুর্থ দিনেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ি চলছে। গত তিন দিনের মতো গ্রেপ্তার, জরিমানা ও মুচলেকা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। চতুর্থ দিনে ৬১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগ মিলিয়ে জরিমানা আদায় করা হয়েছে ১৩ লাখ টাকার বেশি।
গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপি মিডিয়া বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ইফতেখায়রুল ইসলাম। ইফতেখায়রুল ইসলাম জানান, সরকারঘোষিত বিধিনিষেধের মধ্যেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়কে গাড়ি নিয়ে বের হওয়ায় ট্রাফিক পুলিশের চেকপোস্টে ৪৯৬টি গাড়িকে মামলা দেয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬১৮ জনকে। জরিমানা করা হয়েছে ১৬১ জনকে। তাদের কাছ থেকে নগদ ৫৪ হাজার ৪৫০ টাকা আদায় করা হয়েছে। ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের আট বিভাগ মিলে চতুর্থ দিনে জরিমানা আদায় করেছে ১২ লাখ ৮১ হাজার টাকা। মামলা দেয়া হয়েছে ৪৯৬টি গাড়িকে। এর মধ্যে রমনা বিভাগ ৩৭টি মামলা দিয়েছে, জরিমানা আদায় করেছে এক লাখ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা, লালবাগ বিভাগ ৪৯টি মামলা দিয়েছে, পাশাপাশি জরিমানা আদায় করেছে এক লাখ ১৪ হাজার ৫০০ টাকা, মতিঝিল বিভাগের ট্রাফিক পুলিশ ২১টি মামলা দিয়েছে, জরিমানা আদায় করেছে ৫৩ হাজার টাকা, ওয়ারী বিভাগ ২১টি মামলা দিয়েছে, জরিমানা আদায় করেছে ৪৪ হাজার টাকা, তেজগাঁও বিভাগ ২৯টি মামলা দিয়েছে, জরিমানা আদায় করেছে ৭৪ হাজার ৫০০ টাকা। মিরপুর বিভাগের ট্রাফিক পুলিশ চতুর্থ দিনের সর্বোচ্চ ৯১টি মামলা দিয়েছে, জরিমান আদায় করেছে তিন লাখ পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা, গুলশান বিভাগ ২৫টি মামলা দিয়েছে, আদায় করেছে ৬৫ হাজার ৫০০ টাকা। উত্তরা বিভাগের ট্রাফিক পুলিশ ৩৭টি মামলা দিয়েছে, আদায় করেছে ৯৭ হাজার টাকা জরিমানা। দেশে করোনা মহামারির সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন। গত তিন দিনের মতো রবিবারও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে পাশাপাশি রাস্তায় মানুষের আনাগোনাও বেড়েছে আগের কয়েক দিনের তুলনায় বেশি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সড়কে বেড়েছে গাড়ি

আপডেট সময় : ০১:৪৬:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ জুলাই ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে চলমান সর্বাত্মক লকডাউনে জরুরি পরিষেবা ছাড়া ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও চতুর্থ দিন গতকাল রোববার রাজধানীর সড়কগুলোতে গাড়ির চাপ বেড়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চেকপোস্টে সব গাড়ি থামিয়ে অহেতুক ঘোরাঘুরি করছে কি না তা যাচাই ও কাগজপত্র চেক করছে। এ কারণে পুলিশের অনেক চেকপোস্টে গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা গেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দেখা যায় যৌক্তিক কারণ দেখাতে না পারা ব্যক্তিগত গাড়িগুলোকে ঘুরিয়ে দেয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, চলমান লকডাউনে ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তায় চলার কোনো সুযোগ নেই। তবে প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা গাড়িগুলো রাস্তায় চলতে পারবে।
রাজধানীর সাত মসজিদ রোড, মিরপুর রোড ও গাবতলী চেকপোস্ট ঘুরে দেখা যায়, রাসেল স্কয়ার, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল মোড় ও গাবতলী চেকপোস্টে গাড়ির ব্যাপক জটলা। এসব চেকপোস্টে প্রত্যেকটা গাড়ি থামানো হচ্ছে। অপ্রয়োজনে বের হওয়া গাড়িগুলোকে মামলাও দেয়া হচ্ছে।
সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউনে সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও বেশ কিছু অফিস খোলা রয়েছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করেন তারা কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বের হয়েছেন। সেক্ষেত্রে কেউ ব্যক্তিগত গাড়িতে বা অন্যের গাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রজ্ঞাপনে বলা ছিল, কোনো ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তায় নামবে না। প্রয়োজনে অফিস তার কর্মীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করবে। মূলত এই বিষয়টি মাথায় রেখেই পুলিশ গাড়িগুলোকে কঠোরভাবে চেক করছে।
বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্টগুলোতে মানুষকে বিভিন্ন অজুহাতও দিতে দেখা গেছে। দেখা গেছে চিকিৎসকের ব্যক্তিগত গাড়িতে তার পরিবারের লোকজন যাতায়াত করছেন, বিজিএমইএর দেয়া অনুমতিপত্রের সাথে গাড়ির নম্বরের মিল নেই, প্রতিষ্ঠানের কর্মী পরিবহনের গাড়ি না হওয়ার পরও বলা হচ্ছে কর্মী পরিবহনে নিয়োজিত, জরুরি সেবার কথা বলে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করাসহ নানা বাহানায় রাস্তায় গাড়ি চলাচল করছে। এসব গাড়িকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ।
এছাড়া পায়ে হেঁটে বা রিকশায় বিনা কারণে ঘোরাঘুরি বন্ধ করতেও তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। লকডাউনের প্রথম দিন থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালত রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে অভিযান চালাচ্ছেন। এসময় জরিমানাসহ গ্রেপ্তারও করা হচ্ছে।
চতুর্থ দিনে গ্রেপ্তার ৬১৮, জরিমানা ১৩ লাখ : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনের চতুর্থ দিনেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়ি চলছে। গত তিন দিনের মতো গ্রেপ্তার, জরিমানা ও মুচলেকা গ্রহণ অব্যাহত রয়েছে। চতুর্থ দিনে ৬১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আর পুলিশ ও ট্রাফিক বিভাগ মিলিয়ে জরিমানা আদায় করা হয়েছে ১৩ লাখ টাকার বেশি।
গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপি মিডিয়া বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) ইফতেখায়রুল ইসলাম। ইফতেখায়রুল ইসলাম জানান, সরকারঘোষিত বিধিনিষেধের মধ্যেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সড়কে গাড়ি নিয়ে বের হওয়ায় ট্রাফিক পুলিশের চেকপোস্টে ৪৯৬টি গাড়িকে মামলা দেয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬১৮ জনকে। জরিমানা করা হয়েছে ১৬১ জনকে। তাদের কাছ থেকে নগদ ৫৪ হাজার ৪৫০ টাকা আদায় করা হয়েছে। ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগের আট বিভাগ মিলে চতুর্থ দিনে জরিমানা আদায় করেছে ১২ লাখ ৮১ হাজার টাকা। মামলা দেয়া হয়েছে ৪৯৬টি গাড়িকে। এর মধ্যে রমনা বিভাগ ৩৭টি মামলা দিয়েছে, জরিমানা আদায় করেছে এক লাখ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা, লালবাগ বিভাগ ৪৯টি মামলা দিয়েছে, পাশাপাশি জরিমানা আদায় করেছে এক লাখ ১৪ হাজার ৫০০ টাকা, মতিঝিল বিভাগের ট্রাফিক পুলিশ ২১টি মামলা দিয়েছে, জরিমানা আদায় করেছে ৫৩ হাজার টাকা, ওয়ারী বিভাগ ২১টি মামলা দিয়েছে, জরিমানা আদায় করেছে ৪৪ হাজার টাকা, তেজগাঁও বিভাগ ২৯টি মামলা দিয়েছে, জরিমানা আদায় করেছে ৭৪ হাজার ৫০০ টাকা। মিরপুর বিভাগের ট্রাফিক পুলিশ চতুর্থ দিনের সর্বোচ্চ ৯১টি মামলা দিয়েছে, জরিমান আদায় করেছে তিন লাখ পাঁচ হাজার ৫০০ টাকা, গুলশান বিভাগ ২৫টি মামলা দিয়েছে, আদায় করেছে ৬৫ হাজার ৫০০ টাকা। উত্তরা বিভাগের ট্রাফিক পুলিশ ৩৭টি মামলা দিয়েছে, আদায় করেছে ৯৭ হাজার টাকা জরিমানা। দেশে করোনা মহামারির সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন। গত তিন দিনের মতো রবিবারও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে পাশাপাশি রাস্তায় মানুষের আনাগোনাও বেড়েছে আগের কয়েক দিনের তুলনায় বেশি।