নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘জনগণের ভোট ছাড়া’ নির্বাচন করার অভিযোগে বিএনপির করা মামলায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে জবানবন্দি শেষে কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার (১ জুলাই) তাকে আদালতে তোলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান। প্রসিকিউশন পুলিশের এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, এদিন নূরুল হুদা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে চাইলে তা রেকর্ড করার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম জিয়াদুর রহমান দুপুর থেকে তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। সন্ধ্যায় জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২২ জুন নূরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন তার চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়। এরপর গত শুক্রবার তাকে আবারও চারদিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। গত ২৫ জুন মগবাজার এলাকা থেকে আরেক সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। রিমান্ড শেষে রোববার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ২২ জুন এ মামলা করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন খান। মামলায় ২০১৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনের সিইসি এ কে এম নূরুল হুদা ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আসামি করা হয়। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজির আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ওই তিন নির্বাচনে ‘গায়েবি মামলা, অপহরণ, গুম খুন ও নির্যাতনের’ ভয় দেখিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গণগ্রেপ্তার’ করে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়। সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সত্ত্বেও সংবিধান লঙ্ঘন, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন, সরকারি কর্মচারী হয়েও অবৈধভাবে ভোটে হস্তক্ষেপ, ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটের কাজ সম্পূর্ণ করা ও জনগণের ভোট না পেলেও সংসদ সদস্য হিসেবে মিথ্যাভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।
এজাহারে বলা হয়, উক্ত ঘটনার সাক্ষী সকল ভোট কেন্দ্র এলাকার ভোটাররা এবং ভোটারদের মধ্যে যারা ভোট প্রদান করতে বঞ্চিত হয়েছেন তারাসহ ভোট কেন্দ্রে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যরা। এ ছাড়া ভোট কেন্দ্রে অনেক সৎ প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশ অফিসারসহ স্থানীয় লোকজনসহ আরো অন্যান্যরা ঘটনার সাক্ষী হবে। এ ছাড়া ব্যালট পেপারে যে সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রকৃতভাবে তারা ভোট দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে উল্লিখিত ঘটনার সঠিক রহস্য তদন্তে সত্য উদঘাটিত হবে।