ঢাকা ০২:৫৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

স্বাস্থ্য বাজেট আলোচনা : স্বাস্থ্যসেবা পেতে মানুষকে পকেট থেকেই বেশি ব্যয় করতে হবে

  • আপডেট সময় : ০১:৩৫:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুন ২০২২
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে স্বাস্থ্যসেবা পেতে মানুষকে নিজেদের পকেট থেকে ৬৮ শতাংশ ব্যয় করতে হবে। যার বেশির ভাগই ব্যয় হয় ওষুধ, পথ্য ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাবদ। এই ব্যয় ৫০ শতাংশে কমিয়ে আনতে হলে জাতীয় বাজেটের ৭ থেকে ৮ শতাংশ বরাদ্দ প্রয়োজন। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ব্যয় হিসেবে নয়, বরং বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে হবে। কিন্তু এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ গতানুগতিক।
‘কেমন হলো স্বাস্থ্য বাজেট ২০২২-২৩’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এমন বক্তব্য উঠে এসেছে। রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হল রুমে গতকাল বুধবার এই আলোচনা সভার আয়োজন করে স্বাস্থ্য বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বিগত অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। এবার সেটা বেড়ে হয়েছে ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাজেট বেড়েছে ১২ শতাংশ। কিন্তু গতবার এই বৃদ্ধির হার ছিল ১৪ শতাংশ। সে হিসাবে গত বছরের তুলনায় এবার বাজেট কম বেড়েছে। আমরা মনে করি, বাজেটটি গত বছরের মতো হওয়া উচিত অথবা বেশি হওয়া উচিত।
সভায় দেশের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে যে বাজেট দেওয়া হয়, সেটাও ঠিকমতো খরচ করতে পারে না মন্ত্রণালয়। অনেক সময় গণপূর্ত অধিদপ্তরে গিয়ে ফাইল আটকে থাকে অথবা দেরি হয়। ফলে কিছু কিছু সময় মে মাসে কাজ শুরু হয়, জুনে শেষ হয়। স্বাস্থ্য বিভাগের ভেতরেরও নানা ধরনের সমস্যা আছে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ। তাঁর মতে, প্রশাসনের নিচের পদে যাঁরা চাকরি করেন, তাঁরা দীর্ঘদিন এক স্থানে চাকরি করলে একধরনের গোষ্ঠী তৈরি হয়। দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করলে হলে এসব সমস্যার সমাধানও করতে হবে।
অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্যে হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সহসভাপতি সেবিকা দেবনাথ বলেন, প্রতিবেশী দেশ নেপাল, ভারত, ভুটান ও শ্রীলঙ্কায় যথাক্রমে ৫৮, ৭৩, ১০৩ ও ১৫৭ ডলার স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ হয়। অর্থাৎ প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম বরাদ্দ পাওয়া নেপালের তুলনায় বাংলাদেশের বরাদ্দ ১৩ শতাংশ কম। তিনি উল্লেখ করেন, প্রায় এক দশক ধরেই স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ থাকে জাতীয় বাজেটের ৫ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে। এই অর্থবছরেও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। জনস্বাস্থ্যবিদেরা মনে করেন, স্বাস্থ্য খাতে এ বরাদ্দ ১০ শতাংশ হওয়া উচিত।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলাম, টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক, স্বাচিপের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বী।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

স্বাস্থ্য বাজেট আলোচনা : স্বাস্থ্যসেবা পেতে মানুষকে পকেট থেকেই বেশি ব্যয় করতে হবে

আপডেট সময় : ০১:৩৫:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জুন ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে স্বাস্থ্যসেবা পেতে মানুষকে নিজেদের পকেট থেকে ৬৮ শতাংশ ব্যয় করতে হবে। যার বেশির ভাগই ব্যয় হয় ওষুধ, পথ্য ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাবদ। এই ব্যয় ৫০ শতাংশে কমিয়ে আনতে হলে জাতীয় বাজেটের ৭ থেকে ৮ শতাংশ বরাদ্দ প্রয়োজন। স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ব্যয় হিসেবে নয়, বরং বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে হবে। কিন্তু এবারের বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ গতানুগতিক।
‘কেমন হলো স্বাস্থ্য বাজেট ২০২২-২৩’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এমন বক্তব্য উঠে এসেছে। রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হল রুমে গতকাল বুধবার এই আলোচনা সভার আয়োজন করে স্বাস্থ্য বিটের সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বিগত অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ছিল ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। এবার সেটা বেড়ে হয়েছে ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ বাজেট বেড়েছে ১২ শতাংশ। কিন্তু গতবার এই বৃদ্ধির হার ছিল ১৪ শতাংশ। সে হিসাবে গত বছরের তুলনায় এবার বাজেট কম বেড়েছে। আমরা মনে করি, বাজেটটি গত বছরের মতো হওয়া উচিত অথবা বেশি হওয়া উচিত।
সভায় দেশের স্বাস্থ্য খাত নিয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে যে বাজেট দেওয়া হয়, সেটাও ঠিকমতো খরচ করতে পারে না মন্ত্রণালয়। অনেক সময় গণপূর্ত অধিদপ্তরে গিয়ে ফাইল আটকে থাকে অথবা দেরি হয়। ফলে কিছু কিছু সময় মে মাসে কাজ শুরু হয়, জুনে শেষ হয়। স্বাস্থ্য বিভাগের ভেতরেরও নানা ধরনের সমস্যা আছে বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ। তাঁর মতে, প্রশাসনের নিচের পদে যাঁরা চাকরি করেন, তাঁরা দীর্ঘদিন এক স্থানে চাকরি করলে একধরনের গোষ্ঠী তৈরি হয়। দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করলে হলে এসব সমস্যার সমাধানও করতে হবে।
অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্যে হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সহসভাপতি সেবিকা দেবনাথ বলেন, প্রতিবেশী দেশ নেপাল, ভারত, ভুটান ও শ্রীলঙ্কায় যথাক্রমে ৫৮, ৭৩, ১০৩ ও ১৫৭ ডলার স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ হয়। অর্থাৎ প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম বরাদ্দ পাওয়া নেপালের তুলনায় বাংলাদেশের বরাদ্দ ১৩ শতাংশ কম। তিনি উল্লেখ করেন, প্রায় এক দশক ধরেই স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ থাকে জাতীয় বাজেটের ৫ থেকে ৬ শতাংশের মধ্যে। এই অর্থবছরেও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। জনস্বাস্থ্যবিদেরা মনে করেন, স্বাস্থ্য খাতে এ বরাদ্দ ১০ শতাংশ হওয়া উচিত।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির, পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলাম, টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক, স্বাচিপের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ প্রমুখ বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বী।