ঢাকা ০৩:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

স্বামীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক সন্দেহে গৃহকর্মীকে খুন

  • আপডেট সময় : ০১:২৬:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২১
  • ১০৩ বার পড়া হয়েছে

প্রতিবেদক : বাসার গৃহকর্তা সৈয়দ জসীমুলের সঙ্গে ‘অনৈতিক সম্পর্ক’ রয়েছে- এমন সন্দেহে গৃহকর্মী পারভীনকে খুনের পরিকল্পনা করে গৃহকর্ত্রী সৈয়দা সামিনা হাসান। পরিকল্পনামাফিক গুলশানের নিকেতনের বাসায় পারভীনকে খুন করা হয়। এরপরই তার লাশ ঝাউবনে ফেলে দেওয়া হয় বলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
তিন দিন আগে রাজধানীর তুরাগের দিয়াবাড়ির ঝাউবন এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এখন তাঁর নাম-পরিচয় জানার কথা বলছে পুলিশ।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বলছে, ওই নারীর নাম পারভীন ওরফে ফেন্সি আরা (৩০)। তিনি গুলশানের নিকেতনে একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন। গৃহকর্তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক আছে, এমন সন্দেহে তাঁকে হত্যা করেন গৃহকর্ত্রী। পরে তাঁর লাশ গুম করতে তুরাগের ঝাউবন এলাকায় ফেলা হয়।
পারভীন হত্যার ঘটনায় নিকেতন থেকে গতকাল গৃহকর্তা সৈয়দ জসীমুল হক (৬৩) ও গৃহকর্ত্রী সৈয়দা সামিনা হাসানকে (৬০) গ্রেপ্তার করেছে পিবিআইয়ের ঢাকা মেট্রো উত্তর। তারা বলছে, আসামিরা পারভীনকে হত্যা ও তাঁর লাশ তুরাগের ঝাউবন এলাকায় ফেলার কথা স্বীকার করেছেন।
ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাঁরা পারভীনের নাম-পরিচয় জানতে পারেন। তাঁর বাড়ি দিনাজপুরের চিরিরবন্দর আলোকডিহি সরকার পাড়া এলাকায়। তাঁর বাবার নাম রমজান আলী। স্বামীর নাম মোমিনুল হক। ছয় বছর আগে জীবিকার সন্ধানে স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় আসেন পারভীন। স্বামী রিকশা চালানো শুরু করেন। আর পারভীন গৃহকর্মীর কাজ নেন। পারভীনকে মাসে সাত হাজার টাকা করে পারিশ্রমিক দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেওয়া হতো মাত্র এক হাজার টাকা করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, গৃহকর্তা জসীমুলের সঙ্গে পারভীনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক আছে, এমন সন্দেহ করতেন গৃহকর্ত্রী সামিনা হাসান। এ সন্দেহের জেরে ১ ডিসেম্বর সকালে পারভীনকে লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করেন সামিনা হাসান। পারভীন জ্ঞান হারালে তাঁর বুকে জোরে চাপ দেওয়া হয়। এতে বুকের হাড় ভেঙে পারভীনের মৃত্যু হয়। হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে গাড়িচালক রমজান আলীর সহায়তায় তুরাগের দিয়াবাড়ির ঝাউবনে পারভীনের লাশ ফেলে দেওয়া হয়। পিবিআই জানায়, পারভীনের স্বামী মোমিনুল ঢাকায় রিকশা চালান। পারভীন ওই বাসায় কাজ নেওয়ার পর তাঁর সঙ্গে মোমিনুলকে দেখা করতে দেওয়া হতো না। এ নিয়ে তিনি গুলশান থানায় গত অক্টোবরে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

স্বামীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক সন্দেহে গৃহকর্মীকে খুন

আপডেট সময় : ০১:২৬:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২১

প্রতিবেদক : বাসার গৃহকর্তা সৈয়দ জসীমুলের সঙ্গে ‘অনৈতিক সম্পর্ক’ রয়েছে- এমন সন্দেহে গৃহকর্মী পারভীনকে খুনের পরিকল্পনা করে গৃহকর্ত্রী সৈয়দা সামিনা হাসান। পরিকল্পনামাফিক গুলশানের নিকেতনের বাসায় পারভীনকে খুন করা হয়। এরপরই তার লাশ ঝাউবনে ফেলে দেওয়া হয় বলে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে বেরিয়ে এসেছে।
তিন দিন আগে রাজধানীর তুরাগের দিয়াবাড়ির ঝাউবন এলাকা থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এখন তাঁর নাম-পরিচয় জানার কথা বলছে পুলিশ।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বলছে, ওই নারীর নাম পারভীন ওরফে ফেন্সি আরা (৩০)। তিনি গুলশানের নিকেতনে একটি বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতেন। গৃহকর্তার সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক আছে, এমন সন্দেহে তাঁকে হত্যা করেন গৃহকর্ত্রী। পরে তাঁর লাশ গুম করতে তুরাগের ঝাউবন এলাকায় ফেলা হয়।
পারভীন হত্যার ঘটনায় নিকেতন থেকে গতকাল গৃহকর্তা সৈয়দ জসীমুল হক (৬৩) ও গৃহকর্ত্রী সৈয়দা সামিনা হাসানকে (৬০) গ্রেপ্তার করেছে পিবিআইয়ের ঢাকা মেট্রো উত্তর। তারা বলছে, আসামিরা পারভীনকে হত্যা ও তাঁর লাশ তুরাগের ঝাউবন এলাকায় ফেলার কথা স্বীকার করেছেন।
ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানাতে গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পিবিআই ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাঁরা পারভীনের নাম-পরিচয় জানতে পারেন। তাঁর বাড়ি দিনাজপুরের চিরিরবন্দর আলোকডিহি সরকার পাড়া এলাকায়। তাঁর বাবার নাম রমজান আলী। স্বামীর নাম মোমিনুল হক। ছয় বছর আগে জীবিকার সন্ধানে স্বামীর সঙ্গে ঢাকায় আসেন পারভীন। স্বামী রিকশা চালানো শুরু করেন। আর পারভীন গৃহকর্মীর কাজ নেন। পারভীনকে মাসে সাত হাজার টাকা করে পারিশ্রমিক দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দেওয়া হতো মাত্র এক হাজার টাকা করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম জানান, গৃহকর্তা জসীমুলের সঙ্গে পারভীনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক আছে, এমন সন্দেহ করতেন গৃহকর্ত্রী সামিনা হাসান। এ সন্দেহের জেরে ১ ডিসেম্বর সকালে পারভীনকে লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করেন সামিনা হাসান। পারভীন জ্ঞান হারালে তাঁর বুকে জোরে চাপ দেওয়া হয়। এতে বুকের হাড় ভেঙে পারভীনের মৃত্যু হয়। হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে গাড়িচালক রমজান আলীর সহায়তায় তুরাগের দিয়াবাড়ির ঝাউবনে পারভীনের লাশ ফেলে দেওয়া হয়। পিবিআই জানায়, পারভীনের স্বামী মোমিনুল ঢাকায় রিকশা চালান। পারভীন ওই বাসায় কাজ নেওয়ার পর তাঁর সঙ্গে মোমিনুলকে দেখা করতে দেওয়া হতো না। এ নিয়ে তিনি গুলশান থানায় গত অক্টোবরে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।