ঢাকা ০৮:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

স্বাভাবিক হয়নি সয়াবিন তেলের বাজার

  • আপডেট সময় : ০৫:৪২:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১১৩ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ সংবাদদাতা :সয়াবিন তেলের সংকটে ভুগছেন গ্রাহক ও খুচরা বিক্রেতারা। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, আমরা অর্ডার এবং অগ্রিম টাকা দিয়েও তেল পাচ্ছি না। তেলের সঙ্গে অন্যান্য পণ্য না কিনলে তেল দেয় না কোম্পানিগুলো। গ্রাহক পর্যায় থেকেও একই অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা বলছেন, দশ দোকান ঘুরলে এক দোকানে তেল পাই। কেউ কেউ দাম রাখে বেশি। আবার কেউ অন্যান্য পণ্য না কিনলে বিক্রি করছে না। রাজধানীর মিরপুর ১ ও ২ নম্বরের কাঁচাবাজার ও মহল্লার মুদি দোকান ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়। প্রায় এক মাস ধরেই সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। তখনই ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতারা অনুমান করে বলেছিলেন, তেলের দাম হয়তো বাড়তে যাচ্ছে। তাদের অনুমানকে সত্য প্রমাণ করে গত ৯ ডিসেম্বর সরকার তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এতে প্রতি লিটার খোলা ও বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ে আট টাকা করে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম হয়েছে ১৭৫ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৭ টাকা। এদিকে দাম বাড়ানোর পরে বাজারে পুরাতন মূল্যের তেল পাওয়া যায়। কিন্তু এখন নতুন বা পুরাতন কোনও মূল্যের তেলই সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছেনা। যেসব খুচরা বিক্রেতা পাচ্ছেন, তাদেরও অন্য পণ্য কেনার বিনিময়ে পেতে হচ্ছে সয়াবিন তেল। মিরপুর ১ নম্বর কাঁচাবাজারের বিক্রেতা বাবুল আহমেদ বলেন, ‘আমি ১৫ দিন আগে অর্ডার ও অগ্রিম টাকা দিয়ে রেখেছি। গত বৃহস্পতিবার আমাকে তিন কার্টন তেল দিয়ে গেছে। এই তিন কার্টন তেল কিনতে আমার ১০ হাজার টাকা লেগেছে, কিন্তু আমাকে ১৫ হাজার টাকার আটা, পোলাও চাল আর লবণ কিনতে হয়েছে। এখন আমি খালি তেল বিক্রি করা বন্ধ করে দিয়েছি। ১০ আইটেম মাল কেউ কিনলে আমি তেল দেই, না হলে দেই না। কারণ আমার নিজের কাছেই নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমি ডিস্ট্রিবিউটরদের চাপও দিতে পারি না। চাপ দিলে এই দুই-তিন কার্টন তেলও দেবে না।’ একই বাজারের ফারজানা ভ্যারাইটিজ স্টোরের বিক্রেতা ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের তেল দেয় না। আমরা ডিলারের কাছে বললে তারা বলে, তেল নাই। ডিলার যদি না দিতে পারে তাহলে আমরা কীভাবে পাবো?’ বিক্রেতা মো. রায়হান বলেন, ‘১৫ দিন আগে অর্ডার দিয়ে গতকাল দুই কার্টন তেল পেয়েছি। কিন্তু আমি নিশ্চিত, কোম্পানির কাছে মাল আছে। তারা দাম বাড়ালো কিন্তু এখনও তেল দিচ্ছে না।’ মিরপুর ২ নম্বরের বিক্রেতা মো. জসিম বলেন, ‘কোম্পানি তেল দেয় না, বিক্রি করবো কীভাবে। তাই এখন খোলা তেলই বিক্রি করি।’ খোলা তেল কত দামে বিক্রি করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘১৮০ টাকা লিটার বিক্রি করছি।’ একই এলাকার আরেক মুদি দোকান মায়ের দোয়া জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা বলেন, ‘যারা তেলের সঙ্গে আটা-পোলাও চাল বা অন্য মাল বেশি অর্ডার করে তাদের তেল দেয়। আমার দোকানে বেশি মাল রাখতে পারি না বলে আমার এখানে দেয় না। আমি বিক্রিও করি না।’ বাজার করতে আসা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘কতদিন ধরে তেল নিয়ে একটা খেলা চলছে। দশ দোকান ঘুরলে এক দোকানে তেল পাই। এলাকার দোকানে তো পাই না। এভাবেই চলে যাচ্ছে।’ আরেক ক্রেতা সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যারা বলছে তেল নেই, তাদের কাছে তেল আছে। বিক্রি করছে না। সামনে রোজা, তখন আরও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করবে।’ আহসান হাবীব বলেন, ‘তেলের দাম বাড়লো কিন্তু তেল পাই না। যেই দোকানে পাই সেখানে আবার সঙ্গে অন্য কিছু কিনতে হয়। নইলে খালি তেল বিক্রি করে না। আবার যারা খালি তেল বিক্রি করে তারা বেশি দাম রাখে।’ ক্রেতা কাউসার হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা আছি বিপদে। বেশি দাম দিয়ে কিনে খাবো সেটাও পাই না। আসলে ব্যবসায়ী আর সরকার যে কী চায়, সেটাই আমরা বুঝতে পারি না। তারা কী আরও দাম বাড়াতে চায়? ’ প্রসঙ্গত, গত ৯ ডিসেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্যতেল পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশীরউদ্দিন। এ সময় বাণিজ্য সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিনসহ দেশের ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাজার অস্থির করছে কারা?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের বাজারে ছোট-বড় ১০/১২টি কোম্পানি সয়াবিন তেল বাজারজাত করলেও সাতটির মতো কোম্পানি বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের রূপচাঁদা, মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ, টি কে গ্রুপের পুষ্টি, সিটি গ্রুপের তীর, স্কয়ার গ্রুপের রাঁধুনি, বসুন্ধরা গ্রুপ ও এস আলম গ্রুপের সয়াবিন তেল। বাকিরা এই বড় সাতটির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বড় কোম্পানির ডিলারের মাধ্যমে সয়াবিন তেল বাজারজাত করে। এদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, সরকার প্রায়শই বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে টিসিবির জন্য হাজার হাজার লিটার সয়াবিন তেল ক্রয় করে। সরকারকে দিতে গিয়ে বাজারে তাদের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। এর একটা প্রভাব পড়ে বাজারে। পাশাপাশি এই সুযোগে বাকি ৬টি কোম্পানি বেশি মুনাফার আশায় কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। ফলে সয়াবিনের বাজারের অস্থিরতা কাটে না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর দুই দফা সয়াবিন তেলের ওপর শুল্ক কমিয়েছে। তারপরও পরিস্থিতি নাগালের আওতায় আসেনি। ব্যবসায়ীরা মনে করেন, শুধু এই কয়েকটি কোম্পানির সিন্ডিকেটের কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সয়াবিন তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না। রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কাওরান বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, দাম বাড়ানোর ঘোষণার পর ডিলাররা বাজারে আগের চেয়ে সরবরাহ কিছুটা বাড়িয়েছে। তবে নতুন দামের তেল এখনও অনেক বাজারে ছাড়া হয়নি। ফলে সেখানে আগের দামেই বিক্রি করছেন তারা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সেই পুরনো চেনাজানা সিন্ডিকেট বাজার থেকে বাড়তি মুনাফা হাতিয়ে নিতে কারসাজি শুরু করেছে। এবারের টার্গেট আসন্ন রমজান। এগুলো হচ্ছে আগাম প্রস্তুতি। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১ মার্চ থেকে শুরু হতে পারে রমজান। তাই এত আয়োজন। সরকারের কাছ থেকে দাম বাড়িয়ে নিয়েও বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক করছে না উৎপাদনকারীরা। মিল পর্যায় থেকে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ডিলারের কাছে সরবরাহ কমিয়েছে তারা। ডিলার থেকে খুচরা বাজারেও সয়াবিনের সরবরাহ কমেছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

স্বাভাবিক হয়নি সয়াবিন তেলের বাজার

আপডেট সময় : ০৫:৪২:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪

বিশেষ সংবাদদাতা :সয়াবিন তেলের সংকটে ভুগছেন গ্রাহক ও খুচরা বিক্রেতারা। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, আমরা অর্ডার এবং অগ্রিম টাকা দিয়েও তেল পাচ্ছি না। তেলের সঙ্গে অন্যান্য পণ্য না কিনলে তেল দেয় না কোম্পানিগুলো। গ্রাহক পর্যায় থেকেও একই অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা বলছেন, দশ দোকান ঘুরলে এক দোকানে তেল পাই। কেউ কেউ দাম রাখে বেশি। আবার কেউ অন্যান্য পণ্য না কিনলে বিক্রি করছে না। রাজধানীর মিরপুর ১ ও ২ নম্বরের কাঁচাবাজার ও মহল্লার মুদি দোকান ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া যায়। প্রায় এক মাস ধরেই সয়াবিন তেলের সংকট চলছে। তখনই ক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতারা অনুমান করে বলেছিলেন, তেলের দাম হয়তো বাড়তে যাচ্ছে। তাদের অনুমানকে সত্য প্রমাণ করে গত ৯ ডিসেম্বর সরকার তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এতে প্রতি লিটার খোলা ও বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম বাড়ে আট টাকা করে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম হয়েছে ১৭৫ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৭ টাকা। এদিকে দাম বাড়ানোর পরে বাজারে পুরাতন মূল্যের তেল পাওয়া যায়। কিন্তু এখন নতুন বা পুরাতন কোনও মূল্যের তেলই সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছেনা। যেসব খুচরা বিক্রেতা পাচ্ছেন, তাদেরও অন্য পণ্য কেনার বিনিময়ে পেতে হচ্ছে সয়াবিন তেল। মিরপুর ১ নম্বর কাঁচাবাজারের বিক্রেতা বাবুল আহমেদ বলেন, ‘আমি ১৫ দিন আগে অর্ডার ও অগ্রিম টাকা দিয়ে রেখেছি। গত বৃহস্পতিবার আমাকে তিন কার্টন তেল দিয়ে গেছে। এই তিন কার্টন তেল কিনতে আমার ১০ হাজার টাকা লেগেছে, কিন্তু আমাকে ১৫ হাজার টাকার আটা, পোলাও চাল আর লবণ কিনতে হয়েছে। এখন আমি খালি তেল বিক্রি করা বন্ধ করে দিয়েছি। ১০ আইটেম মাল কেউ কিনলে আমি তেল দেই, না হলে দেই না। কারণ আমার নিজের কাছেই নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমি ডিস্ট্রিবিউটরদের চাপও দিতে পারি না। চাপ দিলে এই দুই-তিন কার্টন তেলও দেবে না।’ একই বাজারের ফারজানা ভ্যারাইটিজ স্টোরের বিক্রেতা ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের তেল দেয় না। আমরা ডিলারের কাছে বললে তারা বলে, তেল নাই। ডিলার যদি না দিতে পারে তাহলে আমরা কীভাবে পাবো?’ বিক্রেতা মো. রায়হান বলেন, ‘১৫ দিন আগে অর্ডার দিয়ে গতকাল দুই কার্টন তেল পেয়েছি। কিন্তু আমি নিশ্চিত, কোম্পানির কাছে মাল আছে। তারা দাম বাড়ালো কিন্তু এখনও তেল দিচ্ছে না।’ মিরপুর ২ নম্বরের বিক্রেতা মো. জসিম বলেন, ‘কোম্পানি তেল দেয় না, বিক্রি করবো কীভাবে। তাই এখন খোলা তেলই বিক্রি করি।’ খোলা তেল কত দামে বিক্রি করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘১৮০ টাকা লিটার বিক্রি করছি।’ একই এলাকার আরেক মুদি দোকান মায়ের দোয়া জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা বলেন, ‘যারা তেলের সঙ্গে আটা-পোলাও চাল বা অন্য মাল বেশি অর্ডার করে তাদের তেল দেয়। আমার দোকানে বেশি মাল রাখতে পারি না বলে আমার এখানে দেয় না। আমি বিক্রিও করি না।’ বাজার করতে আসা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘কতদিন ধরে তেল নিয়ে একটা খেলা চলছে। দশ দোকান ঘুরলে এক দোকানে তেল পাই। এলাকার দোকানে তো পাই না। এভাবেই চলে যাচ্ছে।’ আরেক ক্রেতা সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যারা বলছে তেল নেই, তাদের কাছে তেল আছে। বিক্রি করছে না। সামনে রোজা, তখন আরও দাম বাড়িয়ে বিক্রি করবে।’ আহসান হাবীব বলেন, ‘তেলের দাম বাড়লো কিন্তু তেল পাই না। যেই দোকানে পাই সেখানে আবার সঙ্গে অন্য কিছু কিনতে হয়। নইলে খালি তেল বিক্রি করে না। আবার যারা খালি তেল বিক্রি করে তারা বেশি দাম রাখে।’ ক্রেতা কাউসার হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা আছি বিপদে। বেশি দাম দিয়ে কিনে খাবো সেটাও পাই না। আসলে ব্যবসায়ী আর সরকার যে কী চায়, সেটাই আমরা বুঝতে পারি না। তারা কী আরও দাম বাড়াতে চায়? ’ প্রসঙ্গত, গত ৯ ডিসেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ভোজ্যতেল পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশীরউদ্দিন। এ সময় বাণিজ্য সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিনসহ দেশের ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
বাজার অস্থির করছে কারা?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের বাজারে ছোট-বড় ১০/১২টি কোম্পানি সয়াবিন তেল বাজারজাত করলেও সাতটির মতো কোম্পানি বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের রূপচাঁদা, মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ, টি কে গ্রুপের পুষ্টি, সিটি গ্রুপের তীর, স্কয়ার গ্রুপের রাঁধুনি, বসুন্ধরা গ্রুপ ও এস আলম গ্রুপের সয়াবিন তেল। বাকিরা এই বড় সাতটির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বড় কোম্পানির ডিলারের মাধ্যমে সয়াবিন তেল বাজারজাত করে। এদিকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, সরকার প্রায়শই বসুন্ধরা গ্রুপ থেকে টিসিবির জন্য হাজার হাজার লিটার সয়াবিন তেল ক্রয় করে। সরকারকে দিতে গিয়ে বাজারে তাদের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। এর একটা প্রভাব পড়ে বাজারে। পাশাপাশি এই সুযোগে বাকি ৬টি কোম্পানি বেশি মুনাফার আশায় কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। ফলে সয়াবিনের বাজারের অস্থিরতা কাটে না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর দুই দফা সয়াবিন তেলের ওপর শুল্ক কমিয়েছে। তারপরও পরিস্থিতি নাগালের আওতায় আসেনি। ব্যবসায়ীরা মনে করেন, শুধু এই কয়েকটি কোম্পানির সিন্ডিকেটের কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সয়াবিন তেলের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না। রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কাওরান বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, দাম বাড়ানোর ঘোষণার পর ডিলাররা বাজারে আগের চেয়ে সরবরাহ কিছুটা বাড়িয়েছে। তবে নতুন দামের তেল এখনও অনেক বাজারে ছাড়া হয়নি। ফলে সেখানে আগের দামেই বিক্রি করছেন তারা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সেই পুরনো চেনাজানা সিন্ডিকেট বাজার থেকে বাড়তি মুনাফা হাতিয়ে নিতে কারসাজি শুরু করেছে। এবারের টার্গেট আসন্ন রমজান। এগুলো হচ্ছে আগাম প্রস্তুতি। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১ মার্চ থেকে শুরু হতে পারে রমজান। তাই এত আয়োজন। সরকারের কাছ থেকে দাম বাড়িয়ে নিয়েও বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক করছে না উৎপাদনকারীরা। মিল পর্যায় থেকে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ডিলারের কাছে সরবরাহ কমিয়েছে তারা। ডিলার থেকে খুচরা বাজারেও সয়াবিনের সরবরাহ কমেছে।