ঢাকা ০৫:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫

স্বাধীনতার ৫০ বছর পর ‘কবর’ পেলেন মুসলিম বাজারের শহীদরা

  • আপডেট সময় : ০১:৫৮:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২
  • ১৪৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : মিরপুরের মুসলিম বাজার বধ্যভূমি থেকে উদ্ধার হওয়া একাত্তরের শহীদদের দেহাবশেষ মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায়।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের উপস্থিতিতে গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় এই দাফন কাজ সম্পন্ন হয়। বাঙালির মুক্তির আন্দোলনের শ্বাসরোধ করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে কালরাতের প্রথম প্রহরে ঢাকায় চালানো হয় গণহত্যা। সেটাই শুরু।
২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান। নয় মাসের যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়। যুদ্ধের ওই নয়টি মাস এই ভূখ-ের নানা প্রান্তে হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় দোসররা। দেশজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন বধ্যভূমি ও গণকবর সেই হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী। এর মধ্যে মিরপুরের মুসলিম বাজার বধ্যভূমির সন্ধান মেলে ১৯৯৯ সালে। মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে নূরী মসজিদের সংস্কার কাজ করতে গিয়ে বহু মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া যায়। মানুষের মাথার খুলি ও হাড়গোড়ের পাশাপাশি চুলের বেনী, ওড়না, কাপড়ের টুকরোও পাওয়া যায় ওই খনন কাজে। সেবব হাড় ও খুলি একাত্তরের গণহত্যার নির্দশন কি না তা নিশ্চিত হতে কাজ শুরু করে ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি (স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংগঠিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ নিয়ে কাজ করা গবেষণা প্রতিষ্ঠান)। শহীদদের আত্মীয়-স্বজনের ‘টিস্যু স্যাম্পল’ নিয়ে মুসলিম বাজার থেকে পাওয়া হাড়, খুলি এবং অন্যান্য নমুনা পরীক্ষা করে মিলিয়ে দেখা হয় ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির গবেষণায়। পরে দেহাবশেষের কিছু অংশ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর এবং কিছু সেনাবাহিনীর যাদুঘরে সংরক্ষণের জন্য দেওয়া হয়। অবশিষ্ট দেহাবশেষ সোমবার সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হল। সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ স্থানীয় বিশিষ্টজনরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন বলে আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

স্বাধীনতার ৫০ বছর পর ‘কবর’ পেলেন মুসলিম বাজারের শহীদরা

আপডেট সময় : ০১:৫৮:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : মিরপুরের মুসলিম বাজার বধ্যভূমি থেকে উদ্ধার হওয়া একাত্তরের শহীদদের দেহাবশেষ মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে সেনাবাহিনীর ব্যবস্থাপনায়।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের উপস্থিতিতে গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় এই দাফন কাজ সম্পন্ন হয়। বাঙালির মুক্তির আন্দোলনের শ্বাসরোধ করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে এ দেশের নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে কালরাতের প্রথম প্রহরে ঢাকায় চালানো হয় গণহত্যা। সেটাই শুরু।
২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে যান। নয় মাসের যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়। যুদ্ধের ওই নয়টি মাস এই ভূখ-ের নানা প্রান্তে হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় দোসররা। দেশজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন বধ্যভূমি ও গণকবর সেই হত্যাযজ্ঞের সাক্ষী। এর মধ্যে মিরপুরের মুসলিম বাজার বধ্যভূমির সন্ধান মেলে ১৯৯৯ সালে। মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনে নূরী মসজিদের সংস্কার কাজ করতে গিয়ে বহু মানুষের দেহাবশেষ পাওয়া যায়। মানুষের মাথার খুলি ও হাড়গোড়ের পাশাপাশি চুলের বেনী, ওড়না, কাপড়ের টুকরোও পাওয়া যায় ওই খনন কাজে। সেবব হাড় ও খুলি একাত্তরের গণহত্যার নির্দশন কি না তা নিশ্চিত হতে কাজ শুরু করে ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি (স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংগঠিত যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ নিয়ে কাজ করা গবেষণা প্রতিষ্ঠান)। শহীদদের আত্মীয়-স্বজনের ‘টিস্যু স্যাম্পল’ নিয়ে মুসলিম বাজার থেকে পাওয়া হাড়, খুলি এবং অন্যান্য নমুনা পরীক্ষা করে মিলিয়ে দেখা হয় ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির গবেষণায়। পরে দেহাবশেষের কিছু অংশ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর এবং কিছু সেনাবাহিনীর যাদুঘরে সংরক্ষণের জন্য দেওয়া হয়। অবশিষ্ট দেহাবশেষ সোমবার সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হল। সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ স্থানীয় বিশিষ্টজনরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন বলে আইএসপিআরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়।