নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জননিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থ হয়েছেন দাবি করে তার পদত্যাগ চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অভিমুখে গণপদযাত্রা করছেন বাম ছাত্র সংগঠনগুলো। শিক্ষাভবনের সামনে পৌঁছালে তাদের আটকে দেয় পুলিশ।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টা ৩৫ মিনিটে ‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ ব্যানারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচি শুরু হয়।
এ সময় তারা ‘যে সিস্টেম ধর্ষক পালে, সেই সিস্টেম গুঁড়িয়ে দাও, জাগো মাতা, কন্যা, ভগ্নি জায়া; স্টেপ ডাউন হোম অ্যাডভাইজর জাহাঙ্গীর’ ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা ‘নারী থেকে নারীতে বিদ্রোহ ছুঁয়ে দে, পুরুষের ক্ষমতা ভেঙে হোক সমতা’ ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, জাহাঙ্গীর জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
গণপদযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, সারা দেশে অব্যাহত ধর্ষণ ও নারী নিপীড়ন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ, অবিলম্বে ধর্ষণ ও নিপীড়নের সব ঘটনার বিচার এবং সংশ্লিষ্ট আইনগুলোর যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে। তবে এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।
শিক্ষা ভবনের সামনে ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী তিলোত্তমা ইতি বলেন, ‘পুলিশ আমাদের কেন বাধা দিচ্ছে! তারা তো ধর্ষকদের, ডাকাতদের নিবৃত্ত করতে পারছেন না। আমাদের আপনারা থামাতে পারবেন না। আমাদের হাত থেকে এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাঁচতে পারবেন না।’
বাধা দেওয়ার সময় পুলিশ নারী আন্দোলনকারীদের গায়ে হাত তুলেছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘পুলিশ ফোর্সে একটা নারী পুলিশ নেই! অথচ ব্যানারভর্তি মেয়ে আমরা। এটা নারীদের আন্দোলন। এই পুরুষ পুলিশরাই আমাদের গায়ে হাত তুলেছে। আমরা নিন্দা জানাই।’
পদযাত্রা শুরুর আগে শহীদ মিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সীমা আক্তার বলেন, ‘আন্দোলনে আমরা নারীরা অংশগ্রহণ করেছি। কিন্তু আন্দোলনের পর নারীদের বিভিন্নভাবে মকারি করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আমাদের অনিরাপত্তা ছিল। কিন্তু এখনও কেন আমরা অনিরাপদ?’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন রাস্তায় হাঁটতে ভয় লাগে। নিজের ক্যাম্পাসেও অনিরাপদ বোধ করছি। এই রাষ্ট্র আমরা কখনও চাইনি।’
সীমা বলেন, ‘বৈষম্যহীন বাংলাদেশের কথা বলে এই ইন্টেরিম সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। কিন্তু এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। তাই আমরা তার ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে পদত্যাগ দাবি করছি। পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে।’
আরেক নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা আর দায়সারা কোনও কথা শুনতে চাই না। আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। আমাদের সমাজ নিরাপদ করুন। কারণ এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই জুলাই আন্দোলনের অন্যতম লক্ষ্য।’