ঢাকা ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

স্বপ্নকে লালন করেই সফল মেঘলা

  • আপডেট সময় : ০১:০০:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ অগাস্ট ২০২১
  • ১১৯ বার পড়া হয়েছে

নারী ও শিশু ডেস্ক : মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান মেঘলা পোদ্দার। জন্ম ও বেড়ে ওঠা মুন্সীগঞ্জ জেলাতেই। পড়াশোনায় স্নাতক শেষ করেছেন তিনি। পরিবারের সাপোর্ট না থাকার পরেও নিজের স্বপ্নপূরণে লড়াই করেছেন প্রতিনিয়ত। অনেক চড়াই উৎরাই এর পরেও স্বপ্নকে লালন করে নিজের উদ্যোগ ‘সুদর্শনা’ কে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তার ব্যবসা শুরু থেকেই অনলাইন কেন্দ্রিক ছিল। পরবর্তীতে ই-কমার্স নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবত জেনেবুঝে তবেই এগিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি মেঘলা একটি সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারের প্রশ্নোত্তরে তার ব্যক্তিজীবন, উদ্যোগ ও উদ্যোগের স্বপ্নকে তুলে ধরার গল্প বলেছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন রাইজিংবিডির উদ্যোক্তা/ই-কমার্স পাতার কন্ট্রিবিউটর লেখক শারমিন সাঈদ ।
প্রশ্ন : ব্যবসার শুরুর গল্পটা শুনতে চাই।
মেঘলা পোদ্দার: ব্যবসায়ের শুরুর দিকটা মোটেও সহজ ছিলো না। এক কথায় পরিবারের বিনা সাপোর্টে ব্যবসা শুরু করেছি। মাঝ পথে এসে সাপোর্টের অভাবে অনেকবার মচকে গেছি কিন্তু ভেঙে যাইনি। পরিবারের বাকি সদস্যরা সবসময় আমাকে সরকারি চাকরি পেতে হবে এরকম মনোভাব ঢুকিয়ে দিয়েছে। কিন্তু উদ্যোক্তা জীবনকে নিজে ভালোবেসে এগিয়েছি।
প্রশ্ন : কি কি নিয়ে পণ্য কাজ করছেন ?
মেঘলা পোদ্দার: মূলত আমি কাস্টমাইজড ড্রেস নিয়ে কাজ করছি। আমার পেজের কুর্তি, চাদর, পাঞ্জাবি, ব্লাউজ, শাড়ি, বেবি ড্রেস ইত্যাদি পুরোটাই নিজের ডিজাইন করা। কাস্টমাইজড ড্রেসের মধ্যে আমার সিগনেচার পণ্য হলো বেবি ড্রেস। পাশাপাশি নিজের জেলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে মুন্সিগঞ্জের বিখ্যাত পণ্য আলুর তৈরি হোমমেড আলুর চিপসও আমার পেজে সংযোজন করেছি।
প্রশ্ন : কোন ধরনের চিন্তা ভাবনা থেকে এমন পণ্য নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা ছিল?
মেঘলা পোদ্দার: মূলত নিজের হাতে কিছু ডিজাইন তৈরি করবো নিজের মেধার যাচাই হবে। এ ছাড়াও সবার মতো একই রকম ডিজাইন না হয়ে একটু ভিন্ন কিছু করার পরিকল্পনা থেকে কাস্টমাইজড ড্রেস নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্য। অনেকেই আছেন পোশাকের ডিজাইন পছন্দ হলেও গায়ের মাপে তা ঠিক হয় না, কিন্তু কাস্টমাইজড ড্রেস তৈরি করলে ক্রেতার মাপ পারফেক্ট হয় যার ফলে ক্রেতা খুশি হয়। আর আলুর চিপস নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্য হলো আমার মুন্সিগঞ্জ জেলা যেহেতু আলু ও কলার জন্য বিখ্যাত সেহেতু আমি চাই এই আলুর চিপসের সাহায্যে ৬৪টি জেলার কাছে আমার জেলা পরিচিত হয়ে উঠুক।
প্রশ্ন : উদ্যোক্তা জীবনে সফল হতে কাদের ভূমিকা বেশি ছিল?
মেঘলা পোদ্দার: আমার উদ্যোক্তা জীবনে সফলতার পেছনে আমার এক সহপাঠী বা বন্ধুর ভূমিকা অনেক বেশি। কারণ সে আমাকে আমার উদ্যোগের জন্য অনেক সাহায্য সহযোগীতা করেছে এবং শ্রদ্ধেয় রাজীব স্যারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কারণ তার দেখানো নির্দেশনাগুলো আমার অনেক কাজে লেগেছে।
প্রশ্ন : আপনার উদ্যোগের সাফল্যের কথা জানতে চাই?
মেঘলা পোদ্দার: আমার উদ্যোগের সফলতার একমাত্র দিক হলো সঠিক পরিকল্পনা ও পরিশ্রম। যখন আমার উদ্যোগের পরিচিতি পেতে লাগলো, একটা সময়ে আমি ক্রেতার চাহিদার ফলে তাদের অর্ডারের কাজের জন্য কত নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি তা জানা নেই।
প্রশ্ন : ব্যবসা নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কি?
মেঘলা পোদ্দার: বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমার পরিকল্পনা পুরোটাই অনলাইনভিত্তিক। এভাবেই এগিয়ে যাবে আমার উদ্যোগের কাজ এবং একটা সময়ে দেশসহ দেশের বাইরেও আমার নিজের ক্রিয়েশনে দেশীয় পণ্যের বিস্তার ঘটবে বলে আমি ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী।
প্রশ্ন : বিগত ঈদে এবং লকডাউনে ব্যবসা কেমন ছিলো?
মেঘলা পোদ্দার: ঈদ অনেকটাই ভালো কেটেছে। রোজার মাস জুড়েই ছিলো কাজের প্রচ- ব্যস্ততা এবং সেই ব্যস্ততার জের ধরেই কোরবানির ঈদেও ব্যস্ত সময় পার করেছি। লকডাউনে ব্যবসার অবস্হা ভালো ছিলো। কারণ অনলাইনভিত্তিক কার্যক্রম হওয়ার ফলে ঘরে বসেই অর্ডার নেওয়া থেকে শুরু করে, ক্রেতার পোশাক পরিধানের ফিডব্যাকগুলোও ঘরে বসেই পেয়েছি। সেই সঙ্গে উইর (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম) হাটবাজার ছিলো আমার ব্যবসার জন্য আরো একটি টার্নিং পয়েন্ট।
প্রশ্ন : উদ্যোক্তা জীবনের শুরু কতদিন ধরে এবং রেভিনিউ কেমন?
মেঘলা পোদ্দার: উদ্যোক্তা জীবনের শুরুর প্রায় ১১ মাস চলছে এবং শুরুর দিকটাতে তেমন না হলেও এখন খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি।
প্রশ্ন : ধন্যবাদ আপনাকে ।
মেঘলা পোদ্দার: রাইজিংবিডি ও আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আমার ব্যবসা নিয়ে বলার সুযোগ প্রদানের জন্য ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

স্বপ্নকে লালন করেই সফল মেঘলা

আপডেট সময় : ০১:০০:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ অগাস্ট ২০২১

নারী ও শিশু ডেস্ক : মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান মেঘলা পোদ্দার। জন্ম ও বেড়ে ওঠা মুন্সীগঞ্জ জেলাতেই। পড়াশোনায় স্নাতক শেষ করেছেন তিনি। পরিবারের সাপোর্ট না থাকার পরেও নিজের স্বপ্নপূরণে লড়াই করেছেন প্রতিনিয়ত। অনেক চড়াই উৎরাই এর পরেও স্বপ্নকে লালন করে নিজের উদ্যোগ ‘সুদর্শনা’ কে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
তার ব্যবসা শুরু থেকেই অনলাইন কেন্দ্রিক ছিল। পরবর্তীতে ই-কমার্স নিয়ে বেশ কিছুদিন যাবত জেনেবুঝে তবেই এগিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি মেঘলা একটি সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারের প্রশ্নোত্তরে তার ব্যক্তিজীবন, উদ্যোগ ও উদ্যোগের স্বপ্নকে তুলে ধরার গল্প বলেছেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন রাইজিংবিডির উদ্যোক্তা/ই-কমার্স পাতার কন্ট্রিবিউটর লেখক শারমিন সাঈদ ।
প্রশ্ন : ব্যবসার শুরুর গল্পটা শুনতে চাই।
মেঘলা পোদ্দার: ব্যবসায়ের শুরুর দিকটা মোটেও সহজ ছিলো না। এক কথায় পরিবারের বিনা সাপোর্টে ব্যবসা শুরু করেছি। মাঝ পথে এসে সাপোর্টের অভাবে অনেকবার মচকে গেছি কিন্তু ভেঙে যাইনি। পরিবারের বাকি সদস্যরা সবসময় আমাকে সরকারি চাকরি পেতে হবে এরকম মনোভাব ঢুকিয়ে দিয়েছে। কিন্তু উদ্যোক্তা জীবনকে নিজে ভালোবেসে এগিয়েছি।
প্রশ্ন : কি কি নিয়ে পণ্য কাজ করছেন ?
মেঘলা পোদ্দার: মূলত আমি কাস্টমাইজড ড্রেস নিয়ে কাজ করছি। আমার পেজের কুর্তি, চাদর, পাঞ্জাবি, ব্লাউজ, শাড়ি, বেবি ড্রেস ইত্যাদি পুরোটাই নিজের ডিজাইন করা। কাস্টমাইজড ড্রেসের মধ্যে আমার সিগনেচার পণ্য হলো বেবি ড্রেস। পাশাপাশি নিজের জেলাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে মুন্সিগঞ্জের বিখ্যাত পণ্য আলুর তৈরি হোমমেড আলুর চিপসও আমার পেজে সংযোজন করেছি।
প্রশ্ন : কোন ধরনের চিন্তা ভাবনা থেকে এমন পণ্য নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা ছিল?
মেঘলা পোদ্দার: মূলত নিজের হাতে কিছু ডিজাইন তৈরি করবো নিজের মেধার যাচাই হবে। এ ছাড়াও সবার মতো একই রকম ডিজাইন না হয়ে একটু ভিন্ন কিছু করার পরিকল্পনা থেকে কাস্টমাইজড ড্রেস নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্য। অনেকেই আছেন পোশাকের ডিজাইন পছন্দ হলেও গায়ের মাপে তা ঠিক হয় না, কিন্তু কাস্টমাইজড ড্রেস তৈরি করলে ক্রেতার মাপ পারফেক্ট হয় যার ফলে ক্রেতা খুশি হয়। আর আলুর চিপস নিয়ে কাজ করার উদ্দেশ্য হলো আমার মুন্সিগঞ্জ জেলা যেহেতু আলু ও কলার জন্য বিখ্যাত সেহেতু আমি চাই এই আলুর চিপসের সাহায্যে ৬৪টি জেলার কাছে আমার জেলা পরিচিত হয়ে উঠুক।
প্রশ্ন : উদ্যোক্তা জীবনে সফল হতে কাদের ভূমিকা বেশি ছিল?
মেঘলা পোদ্দার: আমার উদ্যোক্তা জীবনে সফলতার পেছনে আমার এক সহপাঠী বা বন্ধুর ভূমিকা অনেক বেশি। কারণ সে আমাকে আমার উদ্যোগের জন্য অনেক সাহায্য সহযোগীতা করেছে এবং শ্রদ্ধেয় রাজীব স্যারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কারণ তার দেখানো নির্দেশনাগুলো আমার অনেক কাজে লেগেছে।
প্রশ্ন : আপনার উদ্যোগের সাফল্যের কথা জানতে চাই?
মেঘলা পোদ্দার: আমার উদ্যোগের সফলতার একমাত্র দিক হলো সঠিক পরিকল্পনা ও পরিশ্রম। যখন আমার উদ্যোগের পরিচিতি পেতে লাগলো, একটা সময়ে আমি ক্রেতার চাহিদার ফলে তাদের অর্ডারের কাজের জন্য কত নির্ঘুম রাত কাটিয়েছি তা জানা নেই।
প্রশ্ন : ব্যবসা নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কি?
মেঘলা পোদ্দার: বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমার পরিকল্পনা পুরোটাই অনলাইনভিত্তিক। এভাবেই এগিয়ে যাবে আমার উদ্যোগের কাজ এবং একটা সময়ে দেশসহ দেশের বাইরেও আমার নিজের ক্রিয়েশনে দেশীয় পণ্যের বিস্তার ঘটবে বলে আমি ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী।
প্রশ্ন : বিগত ঈদে এবং লকডাউনে ব্যবসা কেমন ছিলো?
মেঘলা পোদ্দার: ঈদ অনেকটাই ভালো কেটেছে। রোজার মাস জুড়েই ছিলো কাজের প্রচ- ব্যস্ততা এবং সেই ব্যস্ততার জের ধরেই কোরবানির ঈদেও ব্যস্ত সময় পার করেছি। লকডাউনে ব্যবসার অবস্হা ভালো ছিলো। কারণ অনলাইনভিত্তিক কার্যক্রম হওয়ার ফলে ঘরে বসেই অর্ডার নেওয়া থেকে শুরু করে, ক্রেতার পোশাক পরিধানের ফিডব্যাকগুলোও ঘরে বসেই পেয়েছি। সেই সঙ্গে উইর (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম) হাটবাজার ছিলো আমার ব্যবসার জন্য আরো একটি টার্নিং পয়েন্ট।
প্রশ্ন : উদ্যোক্তা জীবনের শুরু কতদিন ধরে এবং রেভিনিউ কেমন?
মেঘলা পোদ্দার: উদ্যোক্তা জীবনের শুরুর প্রায় ১১ মাস চলছে এবং শুরুর দিকটাতে তেমন না হলেও এখন খুব ভালো সাড়া পাচ্ছি।
প্রশ্ন : ধন্যবাদ আপনাকে ।
মেঘলা পোদ্দার: রাইজিংবিডি ও আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আমার ব্যবসা নিয়ে বলার সুযোগ প্রদানের জন্য ।