ঢাকা ০৮:১২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

স্থিতাবস্থা জারি, হাতিরঝিলের স্থাপনা আপাতত সরাতে হচ্ছে না

  • আপডেট সময় : ০১:১৪:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ নভেম্বর ২০২২
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্প এলাকার হোটেল, রেস্তোরাঁ, দোকানসহ সব ধরনের ব্যবসায়িক-বাণিজ্যিক স্থাপনা অবৈধ ঘোষণার করে যে রায় হাই কোর্ট দিয়েছিল, তাতে স্থিতাবস্থা জারি করেছে আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য যেসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো আপাতত সরাতে হচ্ছে না, সর্বোচ আদালতের রায়ের ওপর সেগুলোর ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন। রাজউকের করা আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ গতকাল সোমবার এ আদেশ দেয়। একই সঙ্গে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে রাজউকের করা আবেদন (লিভ টু আপিল) শুনানি জন্য গ্রহণ করেছে আদালত। এই লিভ টু আপিল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানি করা হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
আদালতে রাজউকের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আইনজীবী ইমাম হাসান। প্রকল্প এলাকায় ব্যবসায়ীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসানুল করিম। অপরদিকে রিটকারী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
৬০ দিনের মধ্যে হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পের সব স্থাপনা অপসারণের নির্দেনা দিয়ে গত বছরের ৩০ জুন ওই রায় দেয় হাই কোর্ট। রায়ে বলা হয়, “তুরাগ নদীর রায়ের নীতি অনুসারে ঢাকার হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রজেক্টকে পাবলিক ট্রাস্ট (জনসম্পত্তি) ঘোষণা করা হল।”
হাই কোর্ট ওই রায়ে বলে, “হাতিরঝিল প্রকল্পে হোটেল, রেস্তোরাঁ, দোকানসহ সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা অবৈধ ঘোষণা করা হল। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে সকল বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে।” পরে গত জুলাইয়ে এ রায়ের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে আবেদন করে রাজউক। চেম্বার জজ এ বিষয়ে কোনো আদেশ না দিয়ে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। সোমবার আপিল বিভাগের আদেশের পর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “আদালত আপিলটি শুনানির জন্য টপ অব লিস্টে দিয়েছেন, শুনানি শেষে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছে, যাতে যেভাবে আছে সেইভাবেই থাকে।” তিনি বলেন, “এ আদেশের ফলে যেটা হল, চূড়ান্ত শুনানি পর ঠিক হবে যে, রাজউক যেভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতিষ্ঠান দিয়েছে তা থাকবে কি থাকবে না তা সর্বোচ্চ আদালত ঠিক করবে।”
হাতিরঝিলের মূল পরিকল্পনার বাইরে অবৈধ স্থাপনার কার্যক্রম সবার চোখের সামনে চললেও রাজউক ছিল নিষ্ক্রিয়। এ বিষয়ে ২০১৮ সালের ১ অগাস্ট পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে জনস্বার্থে এই রিট আবেদন করা হয়। রাজধানীর হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্প এলাকায় মূল পরিকল্পনার বাইরে থাকা সব স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ চাওয়া হয় রিটে। সেই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর রুলসহ নির্দেশনা দেয়। প্রকল্প এলাকায় মূল পরিকল্পনার বাইরে থাকা সব স্থাপনা সাত দিনের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয় সে সময়। হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পের লে-আউট প্ল্যানের বাইরে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করতে এবং লে-আউট প্ল্যান অনুযায়ী হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পকে রক্ষার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। পূর্ত সচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, রাজউক চেয়ারম্যান, ডিএমপি কমিশনার, হাতিরঝিল থানার ওসি ও প্রকল্প পরিচালককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। সেই রুলের শুনানি শেষে হাতিরঝিলকে ‘পাবলিক ট্রাস্ট’ ঘোষণা করে রায় দিয়েছিল হাই কোর্ট।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

স্থিতাবস্থা জারি, হাতিরঝিলের স্থাপনা আপাতত সরাতে হচ্ছে না

আপডেট সময় : ০১:১৪:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ নভেম্বর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্প এলাকার হোটেল, রেস্তোরাঁ, দোকানসহ সব ধরনের ব্যবসায়িক-বাণিজ্যিক স্থাপনা অবৈধ ঘোষণার করে যে রায় হাই কোর্ট দিয়েছিল, তাতে স্থিতাবস্থা জারি করেছে আপিল বিভাগ। এ আদেশের ফলে হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য যেসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো আপাতত সরাতে হচ্ছে না, সর্বোচ আদালতের রায়ের ওপর সেগুলোর ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন। রাজউকের করা আবেদনের শুনানি করে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ গতকাল সোমবার এ আদেশ দেয়। একই সঙ্গে হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি চেয়ে রাজউকের করা আবেদন (লিভ টু আপিল) শুনানি জন্য গ্রহণ করেছে আদালত। এই লিভ টু আপিল অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানি করা হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
আদালতে রাজউকের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও আইনজীবী ইমাম হাসান। প্রকল্প এলাকায় ব্যবসায়ীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসানুল করিম। অপরদিকে রিটকারী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।
৬০ দিনের মধ্যে হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পের সব স্থাপনা অপসারণের নির্দেনা দিয়ে গত বছরের ৩০ জুন ওই রায় দেয় হাই কোর্ট। রায়ে বলা হয়, “তুরাগ নদীর রায়ের নীতি অনুসারে ঢাকার হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রজেক্টকে পাবলিক ট্রাস্ট (জনসম্পত্তি) ঘোষণা করা হল।”
হাই কোর্ট ওই রায়ে বলে, “হাতিরঝিল প্রকল্পে হোটেল, রেস্তোরাঁ, দোকানসহ সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা অবৈধ ঘোষণা করা হল। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে সকল বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে।” পরে গত জুলাইয়ে এ রায়ের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে আবেদন করে রাজউক। চেম্বার জজ এ বিষয়ে কোনো আদেশ না দিয়ে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। সোমবার আপিল বিভাগের আদেশের পর আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, “আদালত আপিলটি শুনানির জন্য টপ অব লিস্টে দিয়েছেন, শুনানি শেষে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছে, যাতে যেভাবে আছে সেইভাবেই থাকে।” তিনি বলেন, “এ আদেশের ফলে যেটা হল, চূড়ান্ত শুনানি পর ঠিক হবে যে, রাজউক যেভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতিষ্ঠান দিয়েছে তা থাকবে কি থাকবে না তা সর্বোচ্চ আদালত ঠিক করবে।”
হাতিরঝিলের মূল পরিকল্পনার বাইরে অবৈধ স্থাপনার কার্যক্রম সবার চোখের সামনে চললেও রাজউক ছিল নিষ্ক্রিয়। এ বিষয়ে ২০১৮ সালের ১ অগাস্ট পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে জনস্বার্থে এই রিট আবেদন করা হয়। রাজধানীর হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্প এলাকায় মূল পরিকল্পনার বাইরে থাকা সব স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ চাওয়া হয় রিটে। সেই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর রুলসহ নির্দেশনা দেয়। প্রকল্প এলাকায় মূল পরিকল্পনার বাইরে থাকা সব স্থাপনা সাত দিনের মধ্যে অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয় সে সময়। হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পের লে-আউট প্ল্যানের বাইরে স্থাপনা নির্মাণ বন্ধ করতে এবং লে-আউট প্ল্যান অনুযায়ী হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পকে রক্ষার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না- তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। পূর্ত সচিব, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, রাজউক চেয়ারম্যান, ডিএমপি কমিশনার, হাতিরঝিল থানার ওসি ও প্রকল্প পরিচালককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়। সেই রুলের শুনানি শেষে হাতিরঝিলকে ‘পাবলিক ট্রাস্ট’ ঘোষণা করে রায় দিয়েছিল হাই কোর্ট।