স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : রক্তপ্রবাহ যখন বন্ধ হয়ে যায়, মস্তিষ্কে রক্ত পৌঁছাতে পারেনা তখনই স্ট্রোক হয়। রক্তনালী আটকে যাওয়া কিংবা রক্তচাপে ফেটে যাওয়ার কারণে এমনটা হতে পারে। যাদের হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল আছে তাদেরই স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। তাই এই দূরারোগ্য ব্যধিগুলোর আশঙ্কা কমায় এমন খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করলে স্ট্রোকের ঝুঁকিও কমবে।
স্বাস্থ্যকর চর্বি ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস : যুক্তরাষ্ট্রের সনদস্বীকৃত পুষ্টিবিদ ও ‘ফিট হেলদি মমা’ বইয়ের রচয়িতা মরগান ক্লেয়ার বলেন, “মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে স্বাস্থ্যকর চর্বি ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। স্যামন মাছ, আভোকাডো, চিয়া সিডস ইত্যাদি থেকে মিলবে এই উপাদানগুলো।” ইটদিস ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে, আরেক সনদস্বীকৃত পুষ্টিবিদ ও ‘টু দ্য পয়েন্ট নিউট্রিশন’য়ের প্রতিষ্ঠাতা রেচেল ফাইন বলেন, “রান্নায় কোন তেল ব্যবহার করছেন সেটাও স্ট্রোকের ঝুঁকিকে প্রভাবিত করে। সয়াবিন তেলের বদলে ‘অলিভ অয়েল’ বা ‘ক্যানোলা অয়েল’ ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের জন্য বেশি উপকারী হবে।”
লবণ খেতে হবে কম : ক্লেয়ার বলেন “খাদ্যাভ্যাসে সোডিয়াম বেশি থাকলে রক্তচাপ বাড়ে, যা স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়ায়। আবার এই উপাদান পরিমিত মাত্রায় গ্রহণ করলে তা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায় বলে দাবি করে গবেষণা।” আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’য়ের পরামর্শ অনুযায়ী দৈনিক সর্বোচ্চ ১৫০০ মি.লি. গ্রাম সোডিয়াম খাওয়া যাবে। এর থেকে কম খেতে পারলে আরও ভালো।
ভোজ্য আঁশ : যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন’ স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানোর সুনির্দিষ্ট জীবনযাত্রার নীতিমালা দেয়। এরমধ্যে আছে নিয়মিত শরীরচর্চা, মদ্যপান বর্জন ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মানে হলো প্রচুর ফল ও সবজি খেতে হবে এবং সঙ্গে থাকতে হবে প্রচুর পরিমাণে ভোজ্য আঁশ। সংস্থাটি জানায়, ৮৯০০টি স্ট্রোকের রোগীর স্বাস্থ্যগত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায় খাদ্যাভ্যাসে মাত্রা ১০ গ্রাম ভোজ্য আঁশ যোগ করলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারে প্রায় ১২ শতাংশ।
মাংস কম খাওয়া : লাল মাংস খাওয়া কমাতে হবে স্ট্রোক থেকে বাঁচতে হলে। গরু, খাসি, মহিষ ইত্যাদি সবই ‘রেড মিট’য়ের কাতারে পড়ে। আর এই মাংসতে থাকা উচ্চমাত্রার ‘স্যাচুরেইটেড ফ্যাট’ই হল সমস্যার কারণ।
ওজন কমানোই সবকিছু নয় : রেচেল ফাইন বলেন, “স্বাস্থ্যের জন্য সবচাইতে ভালো হল বিভিন্ন খাবারের ভারসাম্য আছে এমন একটি খাদ্যাভ্যাস। শুধু ওজন কমাতে সহায়ক খাদ্যাভ্যাস স্বাস্থ্যের জন্য সবসময় ভালো হয় না।” খাবারের সঙ্গে সুস্থ সম্পর্ক থাকতে হবে আর ওজন নিয়ে মানসিক চাপ এড়িয়ে চলতে হবে। একটা স্বাস্থ্যকর অভ্যাস, তা ওজন কমাবে কি-না তার ভিত্তিতে স্বাস্থ্যকর হয়না।
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে যে খাদ্যাভ্যাসে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ