ঢাকা ০৪:১২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

স্ট্রেস কমানোর ৭ উপায়

  • আপডেট সময় : ১১:১১:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২২
  • ৭৯ বার পড়া হয়েছে

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, আগের চাইতে হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগে আক্রান্তের ঘটনা আশংকাজনক হারে বেড়েছে। এর পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করছে দৈনন্দিন জীবনে স্ট্রেস বেড়ে যাওয়া। কর্টিসোল হরমোনের আধিক্য এবং স্ট্রেস হরমোন হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
কাজের চাপ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি, ভালো থাকার আকাঙ্খা, আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি, আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া ইত্যাদি কারণে দিন দিন বেড়েই চলেছে আমাদের স্ট্রেস। কিন্তু সুস্থ থাকতে চাইলে স্ট্রেস কমানোর বিকল্প নেই। জেনে নিন কীভাবে মোকাবিলা করবেন স্ট্রেসের সঙ্গে।
১। জোরে শ্বাস টানুন
ওয়েবএমডি’তে প্রকাশিত একটি আর্টিকেল বলছে, ডিপ ব্রিদিং বা জোরে শ্বাস টানার ফলে আমাদের পেশিগুলো শিথিল হয়। এতে আমাদের মস্তিষ্ক ও শরীর শান্ত হয়। কয়েকবার জোরে শ্বাস টানার পাশাপাশি কুসুম ফরম পানিতে গোসল বা ঘাড় ম্যাসাজেও উপকার মেলে। শরীর ও মনের স্ট্রেস দূর হয়।
২। প্রয়োজনের বাইরে ডিভাইস ব্যবহার নয়
হেলথলাইনে প্রকাশিত একটি আর্টিকেল মতে, ডিভাইস ব্যবহার কমিয়ে দিলে স্ট্রেসও কমে যায়। অফিসে যেহেতু স্ক্রিন টাইম দিতেই হয় আমাদের, সেহেতু চেষ্টা করুন বাড়িতে ফিরে ডিভাইস ব্যবহার না করতে। ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে আমাদের ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটে যা স্ট্রেস বাড়িয়ে দেয়।
৩। স্বাস্থ্যকর খাবার খান
খাবারের সাথে স্ট্রেসের কিন্তু খুব প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। খাদ্য তালিকায় যদি প্রসেসড ও অতিরিক্তি চিনিজাতীয় খাবার রাখেন, তবে আপনার স্ট্রেস বাড়বে। প্রোটিন ও আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীর ও মন ফুরফুরে থাকবে। সুস্থ থাকতে তাই বেশি করে সবুজ শাকসবজি, ফল, মাছ ও বাদাম খান।
৪। ‘মি’ টাইম জরুরি
আমরা এতোটাই ব্যস্ততায় সময় কাটাই যে নিজের প্রতি যতœ নেওয়ার অবসর পাই না। স্ট্রেস কমাতে চাইলে নিজেকে সময় দেওয়া বা ‘মি টাইম’ এর বিকল্প নেই। দিনের মধ্যে কিছু সময় কেবল নিজের জন্য বরাদ্দ রাখুন। এই সময়টুকু নিজের মতো করে কাটান। একটি সুগন্ধি মোম জ্বালিয়ে জানালার পাশে বসতে পারেন পছন্দের বই নিয়ে। রূপচর্চা করতে পারেন। মোট কথা, এই সময়ে কেবল নিজের পছন্দের কাজটাই করবেন।
৫। ব্যায়ামের জন্য সময় রাখুন
স্ট্রেস কমাতে কিছুক্ষণ ব্যায়াম করুন। খুব ভারি ব্যায়াম করতে হবে এমন নয়। জগিং, সাইক্লিং, সাঁতার বা পোষা প্রাণীকে নিয়ে পার্কে কিছুক্ষণ হাঁটা হতে পারে চমৎকার ব্যায়াম। এতে শরীর যেমন ভালো থাকবে, তেমনি মনও থাকবে ফুরফুরে।
৬। আত্মীয় ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান
স্ট্রেস কমানোর অন্যতম কার্যকর উপায় এটি। কাজের চাপ ও ডিভাইস নির্ভরতার কারণে উচ্ছল আড্ডাটা আজকাল প্রায় হারিয়েই গেছে আমাদের জীবন থেকে। একটু সময় বের করে তাই আত্মীয়স্বজন ও প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিন। সবাই মিলে ঘুরতে যান।
৭। জীবনকে কঠিন করে তুলবেন না
আমরা অনেক সময় বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে জীবনকে জটিল করে তুলি। কখনও কখনও স্ট্রেস লেভেল এতোটাই বেড়ে যায় যে মনে হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এমন সময়গুলোতে নিজেকে বোঝাবেন। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করার অভ্যাস বাদ দেওয়ার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন, জীবন আপনাকে নয়, আপনি নিয়ন্ত্রণ করবেন জীবনকে। তবে কোনোভাবেই যদি স্ট্রেস কমাতে না পারেন এবং শারীরিক ও মানসিক জটিলতা দেখা দেয়, তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

স্ট্রেস কমানোর ৭ উপায়

আপডেট সময় : ১১:১১:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ অগাস্ট ২০২২

স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, আগের চাইতে হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগে আক্রান্তের ঘটনা আশংকাজনক হারে বেড়েছে। এর পেছনে অন্যতম কারণ হিসেবে কাজ করছে দৈনন্দিন জীবনে স্ট্রেস বেড়ে যাওয়া। কর্টিসোল হরমোনের আধিক্য এবং স্ট্রেস হরমোন হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।
কাজের চাপ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি, ভালো থাকার আকাঙ্খা, আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি, আয়-ব্যয়ের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া ইত্যাদি কারণে দিন দিন বেড়েই চলেছে আমাদের স্ট্রেস। কিন্তু সুস্থ থাকতে চাইলে স্ট্রেস কমানোর বিকল্প নেই। জেনে নিন কীভাবে মোকাবিলা করবেন স্ট্রেসের সঙ্গে।
১। জোরে শ্বাস টানুন
ওয়েবএমডি’তে প্রকাশিত একটি আর্টিকেল বলছে, ডিপ ব্রিদিং বা জোরে শ্বাস টানার ফলে আমাদের পেশিগুলো শিথিল হয়। এতে আমাদের মস্তিষ্ক ও শরীর শান্ত হয়। কয়েকবার জোরে শ্বাস টানার পাশাপাশি কুসুম ফরম পানিতে গোসল বা ঘাড় ম্যাসাজেও উপকার মেলে। শরীর ও মনের স্ট্রেস দূর হয়।
২। প্রয়োজনের বাইরে ডিভাইস ব্যবহার নয়
হেলথলাইনে প্রকাশিত একটি আর্টিকেল মতে, ডিভাইস ব্যবহার কমিয়ে দিলে স্ট্রেসও কমে যায়। অফিসে যেহেতু স্ক্রিন টাইম দিতেই হয় আমাদের, সেহেতু চেষ্টা করুন বাড়িতে ফিরে ডিভাইস ব্যবহার না করতে। ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে আমাদের ঘুমেরও ব্যাঘাত ঘটে যা স্ট্রেস বাড়িয়ে দেয়।
৩। স্বাস্থ্যকর খাবার খান
খাবারের সাথে স্ট্রেসের কিন্তু খুব প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। খাদ্য তালিকায় যদি প্রসেসড ও অতিরিক্তি চিনিজাতীয় খাবার রাখেন, তবে আপনার স্ট্রেস বাড়বে। প্রোটিন ও আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খেলে শরীর ও মন ফুরফুরে থাকবে। সুস্থ থাকতে তাই বেশি করে সবুজ শাকসবজি, ফল, মাছ ও বাদাম খান।
৪। ‘মি’ টাইম জরুরি
আমরা এতোটাই ব্যস্ততায় সময় কাটাই যে নিজের প্রতি যতœ নেওয়ার অবসর পাই না। স্ট্রেস কমাতে চাইলে নিজেকে সময় দেওয়া বা ‘মি টাইম’ এর বিকল্প নেই। দিনের মধ্যে কিছু সময় কেবল নিজের জন্য বরাদ্দ রাখুন। এই সময়টুকু নিজের মতো করে কাটান। একটি সুগন্ধি মোম জ্বালিয়ে জানালার পাশে বসতে পারেন পছন্দের বই নিয়ে। রূপচর্চা করতে পারেন। মোট কথা, এই সময়ে কেবল নিজের পছন্দের কাজটাই করবেন।
৫। ব্যায়ামের জন্য সময় রাখুন
স্ট্রেস কমাতে কিছুক্ষণ ব্যায়াম করুন। খুব ভারি ব্যায়াম করতে হবে এমন নয়। জগিং, সাইক্লিং, সাঁতার বা পোষা প্রাণীকে নিয়ে পার্কে কিছুক্ষণ হাঁটা হতে পারে চমৎকার ব্যায়াম। এতে শরীর যেমন ভালো থাকবে, তেমনি মনও থাকবে ফুরফুরে।
৬। আত্মীয় ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান
স্ট্রেস কমানোর অন্যতম কার্যকর উপায় এটি। কাজের চাপ ও ডিভাইস নির্ভরতার কারণে উচ্ছল আড্ডাটা আজকাল প্রায় হারিয়েই গেছে আমাদের জীবন থেকে। একটু সময় বের করে তাই আত্মীয়স্বজন ও প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিন। সবাই মিলে ঘুরতে যান।
৭। জীবনকে কঠিন করে তুলবেন না
আমরা অনেক সময় বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে জীবনকে জটিল করে তুলি। কখনও কখনও স্ট্রেস লেভেল এতোটাই বেড়ে যায় যে মনে হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এমন সময়গুলোতে নিজেকে বোঝাবেন। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করার অভ্যাস বাদ দেওয়ার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন, জীবন আপনাকে নয়, আপনি নিয়ন্ত্রণ করবেন জীবনকে। তবে কোনোভাবেই যদি স্ট্রেস কমাতে না পারেন এবং শারীরিক ও মানসিক জটিলতা দেখা দেয়, তবে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।