কৃষি ও কৃষক ডেস্ক: উত্তরের সবজি ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত গাইবান্ধা জেলা। এখানে অন্যান্য সবজির পাশাপাশি অধিক পরিমাণ জমিতে আবাদ হয় আলুর। স্থানীয়ভাবে চাহিদা মিটিয়ে এ ফসল বিক্রি করে অনেকটা লাভবান হয়ে থাকেন কৃষক। কিন্তু এ বছর ধস নেমেছে বাজার দামে। ফলে স্টোরেজে রাখা আলু যেন কৃষকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। একই সঙ্গে ক্ষতির মুখে পড়ছেন ব্যবসায়ী ও হিমাগার মালিকরাও।
গাইবান্ধা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গেল রবি মৌসুমে জেলায় সাড়ে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে আলু আবাদ হয়। এ থেকে প্রায় ৩ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদন হয়েছে। আর জেলায় বার্ষিক চাহিদা রয়েছে ৯৫ হাজার মেট্রিক টন। উদ্বৃত্ত আলু স্থানীয় ৬টি কোল্ড স্টোরে মজুত রেখেছে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
এদিকে আলুচাষিরা বলছেন, আগের বছরে আলু ফসল নিয়ে বেশ লাভবান হয়েছিলেন। কিন্তু এ বছর মৌসুমের শুরুতে অতিরিক্ত দামে বীজ ক্রয় করেছেন। একই অবস্থা সার-কিটনাশকেও। তবুও ভালো দামের আশায় ধারদেনা করে আলুর আবাদ করেছেন। এতে বাম্পার ফলন পেয়ে হাসি ফুটছিল তাদের মুখে। কিন্তু এসব আলু বিভিন্ন স্টোরেজে সংরক্ষণ করে এখন সেই হাসি মøান হয়েছে তাদের।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও কৃষকরা জানায়, লাভের আশায় বেশি পরিমাণ আলু হিমাগারে মজুত করেছিলেন তারা। এই আলু উৎপাদনসহ হিমাগারের ভাড়া মিলে প্রতি কেজিতে ২৩ টাকা খরচ পড়লেও বর্তমানে প্রতি কেজির পাইকারি বাজার মূল্য ৯ টাকা। এরপরও মিলছে না ক্রেতা। আর আলুগুলো যদি বাইরে রফতানি করা যেত তাহলে কেউই লোকসানে পড়তেন না। এ ব্যর্থতায় আসছে রবি মৌসুমে আলু উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সরকারের সহযোগিতা প্রত্যাশা করছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও কৃষকরা।
ধাপেরহাটের আরভি কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম বলেন, এ পর্যন্ত ৪০ হাজার বস্তা আলু খালাস পেয়েছে। বাজার ধসের কারণে অবশিষ্ট ৯০ হাজার বস্তা আলু কৃষক-ব্যবসায়ীরা বের করছেন না। এতে করে কোটি টাকা ক্ষতির শঙ্কায় এ প্রতিষ্ঠান।
গোবিন্দগঞ্জ কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ জানায়, এ স্টোরেজে মজুত করা আলু আগামী ২০ অক্টোবর মধ্যে বের করার জন্য কৃষক ও ব্যবসায়ীদের নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।
গাইবান্ধা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অপূর্ব ভট্টাচার্য্য জানান, চাহিদার চেয়ে জোগান বেশি হওয়ায় এবার আলুর দাম কমেছে। আমরা কৃষকদের জন্য প্রণোদনার ব্যবস্থা করব।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ