ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: শখের বসে মানুষ অনেক কিছুই করে। কিন্তু ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখার শখ আজকাল খুব কম তরুণেরই থাকে। ঝিনাইদহের দশম শ্রেণির ছাত্র আবির হাসান মিয়া এরই ব্যতিক্রমী উদাহরণ। অতীতের ইতিহাস ও ঐতিহ্য ধরে রাখার নেশায় তিনি গড়ে তুলেছেন এক অনন্য ‘সংগ্রহশালা’, যেখানে স্থান পেয়েছে সুলতানি, মুঘল, ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি আমলের দুর্লভ প্রাচীন নিদর্শন।
ঝিনাইদহ পৌর এলাকার মডার্ন পাড়ার বাসিন্দা ও স্কুলশিক্ষক কুতুব উদ্দিনের একমাত্র সন্তান আবির। ছোটবেলা থেকেই তার ঝোঁক ছিল পুরোনো জিনিস সংগ্রহে। সেই শখ থেকেই ২০২০ সালে শুরু হয় তার মুদ্রা সংগ্রহের যাত্রা। এখন তার সংগ্রহে রয়েছে বাংলাদেশসহ ৫০টিরও বেশি দেশের ধাতব ও কাগজি মুদ্রা।
সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো, তার সংগ্রহে আছে দুটি প্রতীকী স্বর্ণমুদ্রা, রৌপ্যমুদ্রা, কানাকড়ি, এবং বাংলাদেশের ১ পয়সা থেকে ৫ টাকার সব কয়েন। রয়েছে পাকিস্তানি আমলের বিভিন্ন মুদ্রাও।
শুধু মুদ্রা নয়, আবিরের সংগ্রহশালায় স্থান পেয়েছে ১২০ বছর আগের কাচের সিরিজ, ৮০ বছরের পুরনো বই, কাশা ও পিতলের বদনা, জগ ও থালা-বাসন, ৯০ দশকের ক্যামেরা এমনকি পুরনো বাঁশিও। এগুলোর প্রতিটি যেন ইতিহাসের একেকটি সাক্ষী।
প্রথমে কেউ তেমন উৎসাহ না দিলেও পরে তার বাবা কুতুব উদ্দিনই হয়ে ওঠেন আবিরের সবচেয়ে বড় সহযাত্রী। বাবা-ছেলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আজ এই সংগ্রহশালা রূপ নিয়েছে ঝিনাইদহের এক অনন্য ঐতিহ্যে।
কারেক্টার স্কুলের মেধাবী শিক্ষার্থী আবির শুধু সংগ্রাহকই নয়, কবিতা লেখে, আবৃত্তিও করে। তার সংগ্রহশালা এখন প্রতিবেশী ও আশপাশের এলাকার মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। প্রতিদিনই নানা বয়সী মানুষ আসে এই ইতিহাসঘেরা সংগ্রহ দেখতে।
আবির ও তার বাবা কুতুব উদ্দিন জানান, সরকারি সহযোগিতা পেলে আমরা এই সংগ্রহশালাকে আরো বড় আকারে গড়ে তুলতে পারবো— এটি হয়ে উঠবে ঝিনাইদহের ঐতিহ্যের প্রতীক।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ





















