ক্রীড়া ডেস্ক : নেট সেশনের শুরুতেই মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গে ব্যাটিং করতে নামলেন নুরুল হাসান সোহান। মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশ দলের অনুশীলনের এই দৃশ্য বিস্ময় নিয়ে এলো যথেষ্টই। ওপেনার জয়ের ক্ষেত্রে যতটা স্বাভাবিক, ততটাই অস্বাভাবিক তো সোহানের শুরুতে নেটে যাওয়া! প্রথমত, ওপেনার নন। দ্বিতীয়ত, তিনি একাদশে থাকবেন কিনা, সেটিও তো প্রশ্ন! তবে সেই প্রশ্নের উত্তর মিলল অনুশীলন সেশে। সংবাদ সম্মেলনে রাসেল ডমিঙ্গো জানিয়ে দিলেন, ভারতের বিপক্ষে প্রথম টেস্টে সোহানই থাকবেন কিপিংয়ে। কিপিং-ব্যাটিং-মানসিকতা, সব মিলিয়ে সোহান নামক ‘প্যাকেজ’-এ নিজের প্রবল আস্থাও জানিয়ে রাখলেন বাংলাদেম কোচ। প্রায় ছয় বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে স্রেফ সাতটি ম্যাচ খেলেছেন সোহান। পারফরম্যান্স খুব খারাপ নয়। তবে মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের মতো কিপার-ব্যাটসম্যান দলে থাকায় কখনও নিয়মিত হতে পারেননি তিনি। তবে সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের টেস্ট সিরিজে দারুণ পারফরম্যান্সে কোচের আস্থা অর্জন করেছেন ২৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। গত জুনে ওই সফরে বাংলাদেশ হোয়াইটসওয়াশড হলেও দুটি ফিফটি করেন সোহান। প্রথম ম্যাচে দৃঢ় ব্যাটিংয়ে ১৪৭ বলে করেন ৬৪ রান। পরেরটিতে ৬০ রান করেন স্রেফ ৫০ বলে। জোড়া ফিফটি ছাড়াও দুই ম্যাচে তার ডিসমিসাল ১০টি। এছাড়াও উইকেটের পেছনে তার সরব উপস্থিতি বরাবরই চাঙা রাখে পুরো দলকে। তবু কখনও নিয়মিত টেস্ট দলে সুযোগ হয় না তার। গত দুই বছরে চারটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এর মধ্যে একটিতে আবার নামেন ইয়াসির আলি চৌধুরীর ‘কনকাশন’ বদলি হিসেবে। তবে এবার ভারত সিরিজের আগে অনুশীলনে সোহানের দিকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে দেখা গেছে বাংলাদেশের কোচিং প্যানেলকে।
সোমবারের অনুশীলনে লম্বাসময় ব্যাটিং করেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। পরে ফিল্ডিং অনুশীলনেও তাকে নিয়ে বাড়তি সময় কাজ করতে দেখা যায় ফিল্ডিং কোচ শেন ম্যাকডারমটকে। কখনও ডানে, কখনও বায়ে ঝাঁপিয়ে ভালো কিছু ক্যাচ নিয়ে কোচের প্রশংসা আদায় করে নেন সোহান। ম্যাচের আগের দিনের অনুশীলনেও অভিন্ন চিত্র। নেট ব্যাটিং সেশনে শুরুতে স্পিন খেলার পর পাশের নেটে গিয়ে পেস বল খেলেন সোহান। আম্পায়ারের পজিশনে দাঁড়িয়ে সোহানের ব্যাটিং পর্যবেক্ষণ করেন ডমিঙ্গো। সোহানের প্যাডে বা ব্যাটের কানায় লাগলে সমস্যা শুধরে নেওয়ার টোটকাও দেন তিনি। পরে সংবাদ সম্মেলনেও সোহানের প্রতি ভরসার কথা বলেছেন ডমিঙ্গো। “আমি চাই সোহান কিপিং করুক। সবশেষ টেস্টেও ওয়েস্ট ইন্ডিজে তার পারফরম্যান্স দুর্দান্ত ছিল। তার মানসিকতা একদম উপযুক্ত, ভালো কিপার। স্টাম্পের পেছনে সে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতার আবহ রাখে সবসময়, খুবই সরব। এ জায়গাটা তার পুরোপুরি প্রাপ্য।” “টেস্ট দলের কিপার হিসেবে সোহানের ওপর ভরসা রাখতে চাই আমি। কারণ যখনই খেলেছে, টেস্ট ক্রিকেটে তার পারফরম্যান্স ভালো। টেস্টে তার গড় মনে হয় চল্লিসের মতো। ভুলই হতে পারে, আমি নিশ্চিত নই। তবে যখনই সুযোগ পেয়েছে সে ভালো করেছে। সে-ই কাল উইকেটকিপিং করবে।” সোহানের ব্যাটিং গড় অবশ্য ৪০ নয়, আপাতত ২৮.১৬। তবে উন্নতির ছাপ তার পারফরম্যান্সে স্পষ্টই। সবশেষ দুই টেস্টে ক্যারিবিয়ায় কঠিন কন্ডিশনে ফিফটি ছাড়াও আগের টেস্টে ক্রাইস্টচার্চের সবুজ উইকেটে দলের ব্যাটিং ব্যর্থতার টেস্টে ৪১ ও ৩৬ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।
সোহানই থাকছেন উইকেটের পেছনে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ