স্বাস্থ্য ও পরিচর্যা ডেস্ক : ত্বকের একটি গুরুতর অসুখ সোরিয়াসিস। এই রোগে আক্রান্তরাই জানেন কতটা সমস্যার ভেতর সময় অতিবাহিত করতে হয়। বিশেষ করে, শীতের দিনে জটিলতা আরো বাড়ে। ত্বকের বিভিন্ন অংশ মাছের আঁশের মতো হয়ে যায়। জায়গাটা ভীষণ চুলকায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, সোরিয়াসিস একটি অটোইমিউন ডিজিজ। এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই নিজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। ফলে নানা উপসর্গ দেখা যায়। তাই সচেতন থাকতে হবে। এদিকে ত্বকের পাশাপাশি হাড় বা জয়েন্টের উপরও আঘাত আনে সোরিয়াসিস। এই অসুখে জয়েন্টে প্রদাহ হয়। ঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে হাড় ও কোষকলার গুরুতর ক্ষতি হয়। সমস্যা হচ্ছে, অনেকেই সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিসকে সাধারণ রোগ ভেবে অবহেলা করেন। আর এই কারণেই রোগের প্রকোপ বাড়তে থাকে। তাই রোগের লক্ষণ জেনে প্রথম থেকেই সচেতন হতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
কয়েকটি উপসর্গ :
- আঙুল ও গোড়ালি ফুলে যেতে পারে
- পায়ে ব্যথা
- পিঠে ব্যথা
- ক্লান্তি
- জয়েন্টের আশপাশে ব্যথা
- সকালের দিকে দুর্বলতা
- শরীর শক্ত লাগতে পারে
- নড়াচড়া করতে সমস্যা হয়
- নখের আকার, আকৃতিতে বদল আসতে পারে
- চোখ লাল হতে পারে, ব্যথাও থাকা সম্ভব
- ত্বকের বিভিন্ন জায়গায় আঁশ ওঠার মতো হতে পারে।
কাদের ঝুঁকি বেশি: এই অসুখ যে কোনো ব্যক্তির হতে পারে। তবে কারো কারো এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে বেশি। সেক্ষেত্রে পরিবারে কারও এই অসুখ থাকলে অবশ্যই সাবধান হন। কারণ জিনগতভাবে এই অসুখ ছাড়াতে পারে। এছাড়া যাদের ইতিমধ্যেই ত্বকে সোরিয়াসিস রয়েছে তাদেরও সাবধান হতে হবে। দেখা গেছে সাধারণত ৩০ থেকে শুরু করে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যে এই রোগ বেশি করে দেখা যায়। এই রোগ হলে, ছোট ছোট হাতের জয়েন্ট ক্ষয়ে যেতে পারে। এছাড়াও অন্যান্য জয়েন্টের ক্ষতি হয়। এমনকি আক্রান্তের মধ্যে ডিফরমিটি আসার আশঙ্কাও থাকে। একবার এমন সমস্যা দেখা দিলে কিন্তু আর পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়া যায় না। শুধুমাত্র ব্যথা কমানো যেতে পারে। তাই প্রথমেই চিকিৎসা করান।
কীভাবে রোগ নির্ণয়: এই অসুখ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে কয়েকটি টেস্ট করাতে হতে পারে, যেমন- - সিটি স্ক্যান, এমআরআই এবং আলট্রাসউন্ড
- শরীরে প্রদাহ রয়েছে কিনা বোঝার জন্য করতে হতে পারে কিছু রক্তপরীক্ষা
- এমনকি অনেক ক্ষেত্রে জয়েন্ট থেকে ফ্লুইড টেনে নিয়ে তার পরীক্ষা করতে হয়।
এই সব টেস্ট করার পরই নিশ্চিত করে বলা যায় যে রোগী সোরিয়াটিক আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত।
রোগী সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে এলে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হতে পারেন। সেক্ষেত্রে নন স্টেরয়েডাল অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি ড্রাগ ব্যবহার করা হয়। এছাড়া ডিএমএআরডিএস, ইমিউনোসাপ্রেশন্ট ইত্যাদি ওষুধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এমনকি বায়োলজিকস, ইউভি লাইটস, এনজাইম ইনহিবিটরও ব্যবহার করা হয়।

























