ঢাকা ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

সেরামের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের কথা ভাবতে বললো সংসদীয় কমিটি

  • আপডেট সময় : ১২:০৫:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মে ২০২১
  • ১১১ বার পড়া হয়েছে


নিজস্ব প্রতিবেদক : চুক্তি অনুযায়ী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা না দেওয়ায় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যায় কিনা, তা ভেবে দেখতে বলেছে সংসদীয় কমিটি। গতকাল রোববার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ভারত থেকে চুক্তি অনুযায়ী টিকা না আসার বিষয়ে আলোচনার পর কমিটির পক্ষ থেকে এই সুপারিশ করা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান বাংলা ট্রিবিউন বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারি মাসেই সংসদীয় কমিটি বলেছিল, একাধিক সোর্স থেকে টিকা আনার ব্যবস্থা করতে হবে। এখন একটা সোর্স থেকে নিলেন কেন? এটা আমরা জিজ্ঞেস করেছি। মন্ত্রণালয় আমাদের ব্যাখ্যা দিয়েছে— এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তবে তারা এখন একের অধিক সোর্স থেকে টিকা আনার চেষ্টা করছে। ভারত থেকেও আশা করছে জুলাইয়ে পাবে। আমেরিকা থেকে পাওয়ার চেষ্টা করছে। রাশিয়া ও চায়না থেকে আনার চেষ্টা তো করছেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সেকেন্ড ডোজ কমপ্লিট করার জন্য ভারতের যে টিকা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অতিরিক্ত আছে, সেটা আনা যায় কিনা, সেই উদ্যোগ দ্রুততার সঙ্গে নিতে বলেছি। বলেছি, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট যে আমাদের দিলো না, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেবেন কিনা, সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করতে বলেছি।’
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রানেজেকার টিকা দিয়ে বাংলাদেশ গত ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান শুরু করলেও দুই চালানের পর আর টিকা দেয়নি সেরাম ইনস্টিটিউট।
ফলে সরকার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ রেখেছে। যে টিকা এখন মজুত আছে, তা দিয়ে দ্বিতীয় ডোজও সবার দেওয়া সম্ভব হবে না। সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সরকারের কেনা এবং ভারতের পাঠানো উপহারের টিকা মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১ কোটি ২ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ।
সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে গত বছরের নভেম্বরে চুক্তি করে বাংলাদেশ। বেক্সিমকো ফার্মা ওই টিকা সংরক্ষণ ও সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে।
ফারুক খান বলেন, ‘কোভিডের ভ্যাকসিন কেন আনা যাচ্ছে না এটা নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলেছিলাম, উনারা চেষ্টা করার কথা বলেছেন। কিন্তু আমরা বলেছি, চেষ্টা করলেতো হবে না। এই মুহূর্তে আমরা একটা সংকটের মধ্যে পড়ে যাচ্ছি। যারা এক ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাদের দ্বিতীয়বার না পেলে তো হবে না। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জুলাই মাসের দিকে ভারত থেকে টিকা আসবে। যুক্তরাষ্ট্রে কিছু টিকা অতিরিক্ত আছে। তারা সেখান থেকেও আনার চেষ্টা করছে। এছাড়া চীন ও রাশিয়া থেকে টিকা আসবে এবং সেটা হলে সমস্যার সমাধান হবে।’
ভারতের ভাইরাসের ধরন বাংলাদেশে পাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘আমরা ভারতের সাথে লকডাউনটা আরও শক্তিশালী করতে বলেছি। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে বিজিবিকে আরও শক্তিশালী টহল দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’
রোববার সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত থেকে ভ্যাকসিন পাবার জন্য জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া মে মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে সংসদীয় কমিটিকে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে ইরাকের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করা এবং ইরাকে কর্মরত বাংলাদেশি মানবসম্পদকে সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদানের জন্য কমিটি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে।
ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাবিবে মিল্লাত ও কাজী নাবিল আহমেদ অংশ গ্রহণ করেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সেরামের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের কথা ভাবতে বললো সংসদীয় কমিটি

আপডেট সময় : ১২:০৫:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ মে ২০২১


নিজস্ব প্রতিবেদক : চুক্তি অনুযায়ী অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা না দেওয়ায় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া যায় কিনা, তা ভেবে দেখতে বলেছে সংসদীয় কমিটি। গতকাল রোববার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ভারত থেকে চুক্তি অনুযায়ী টিকা না আসার বিষয়ে আলোচনার পর কমিটির পক্ষ থেকে এই সুপারিশ করা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক খান বাংলা ট্রিবিউন বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারি মাসেই সংসদীয় কমিটি বলেছিল, একাধিক সোর্স থেকে টিকা আনার ব্যবস্থা করতে হবে। এখন একটা সোর্স থেকে নিলেন কেন? এটা আমরা জিজ্ঞেস করেছি। মন্ত্রণালয় আমাদের ব্যাখ্যা দিয়েছে— এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তবে তারা এখন একের অধিক সোর্স থেকে টিকা আনার চেষ্টা করছে। ভারত থেকেও আশা করছে জুলাইয়ে পাবে। আমেরিকা থেকে পাওয়ার চেষ্টা করছে। রাশিয়া ও চায়না থেকে আনার চেষ্টা তো করছেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সেকেন্ড ডোজ কমপ্লিট করার জন্য ভারতের যে টিকা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অতিরিক্ত আছে, সেটা আনা যায় কিনা, সেই উদ্যোগ দ্রুততার সঙ্গে নিতে বলেছি। বলেছি, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট যে আমাদের দিলো না, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেবেন কিনা, সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করতে বলেছি।’
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রানেজেকার টিকা দিয়ে বাংলাদেশ গত ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান শুরু করলেও দুই চালানের পর আর টিকা দেয়নি সেরাম ইনস্টিটিউট।
ফলে সরকার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ রেখেছে। যে টিকা এখন মজুত আছে, তা দিয়ে দ্বিতীয় ডোজও সবার দেওয়া সম্ভব হবে না। সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সরকারের কেনা এবং ভারতের পাঠানো উপহারের টিকা মিলিয়ে এ পর্যন্ত ১ কোটি ২ লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ।
সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ করোনাভাইরাসের টিকা কিনতে গত বছরের নভেম্বরে চুক্তি করে বাংলাদেশ। বেক্সিমকো ফার্মা ওই টিকা সংরক্ষণ ও সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে।
ফারুক খান বলেন, ‘কোভিডের ভ্যাকসিন কেন আনা যাচ্ছে না এটা নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলেছিলাম, উনারা চেষ্টা করার কথা বলেছেন। কিন্তু আমরা বলেছি, চেষ্টা করলেতো হবে না। এই মুহূর্তে আমরা একটা সংকটের মধ্যে পড়ে যাচ্ছি। যারা এক ডোজ টিকা নিয়েছেন, তাদের দ্বিতীয়বার না পেলে তো হবে না। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জুলাই মাসের দিকে ভারত থেকে টিকা আসবে। যুক্তরাষ্ট্রে কিছু টিকা অতিরিক্ত আছে। তারা সেখান থেকেও আনার চেষ্টা করছে। এছাড়া চীন ও রাশিয়া থেকে টিকা আসবে এবং সেটা হলে সমস্যার সমাধান হবে।’
ভারতের ভাইরাসের ধরন বাংলাদেশে পাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে কমিটির সভাপতি বলেন, ‘আমরা ভারতের সাথে লকডাউনটা আরও শক্তিশালী করতে বলেছি। আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে বিজিবিকে আরও শক্তিশালী টহল দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’
রোববার সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত থেকে ভ্যাকসিন পাবার জন্য জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া মে মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে সংসদীয় কমিটিকে ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিনে পরিদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে ইরাকের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করা এবং ইরাকে কর্মরত বাংলাদেশি মানবসম্পদকে সকল ধরনের সহযোগিতা প্রদানের জন্য কমিটি মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে।
ফারুক খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাবিবে মিল্লাত ও কাজী নাবিল আহমেদ অংশ গ্রহণ করেন।