ক্রীড়া ডেস্ক : হারতে যেন ভুলে গিয়েছিল সেভিয়া। সেই নভেম্বরের শেষ থেকে চলছিল তাদের অপরাজেয় ছুটে চলা। কাম্প নউয়ে হার এড়াতে পারলেই হয়ে যেত রেকর্ড। কিন্তু সেটি হতে দিল না বার্সেলোনা। সেভিয়াকে থামিয়ে কাতালান দলটি উঠে গেল পয়েন্ট তালিকার দুই নম্বরে। লা লিগার ম্যাচে রোববার রাতে ১-০ গোলে জিতেছে শাভি এর্নান্দেসের দল। দ্বিতীয়ার্ধে একমাত্র গোলটি করেন পেদ্রি। এই ম্যাচের আগে টানা ১৫ ম্যাচ অপরাজিত ছিল সেভিয়া। এখানে হার এড়াতে পারলেই স্পেনের শীর্ষ লিগে নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ড হতো। সেটি ব্যর্থ করে দিয়ে গত বছরের এপ্রিলের পর প্রথমবারের মতো লা লিগায় টানা ছয় জয় পেল কাতালান ক্লাবটি। রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-০ ব্যবধানে হারানোর পর এদিনই প্রথম মাঠে নামে বার্সোলোনা। কোচ শাভির চোখে আন্তর্জাতিক বিরতির পর হওয়া এই ম্যাচ ছিল ‘ফাইনাল।’ সেখানে তাদের জয়ে সুবিধা হলো চির প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালের। দ্বিতীয় স্থানে থাকা দলের চেয়ে তারা এগিয়ে থাকল ১২ পয়েন্টেই। ৩০ ম্যাচে ৬৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে কার্লো আনচেলত্তির দল। ৫৭ পয়েন্ট করে নিয়ে গোল পার্থক্েয যথাক্রমে পরের তিনটি স্থানে বার্সেলোনা, আতলেতিকো মাদ্রিদ ও সেভিয়া। এর মধ্েয শাভির দল একটি ম্যাচ কম খেলেছে। ২০০২ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে কাম্প নউয়ে বার্সেলোনাকে হারাতে না পারা সেভিয়া পুরো ম্যাচেই খেলে আক্রমণাত্মক ফুটবল। লিগে আগের ৫ ম্যাচে ১৮ গোল করা বার্সেলোনাও খেলে সহজাত ফুটবল। শুরু থেকে জমে ওঠে ম্যাচ।
মাঝ মাঠ দখলের লড়াইয়ে একটু এগিয়ে থাকা বার্সেলোনাই পায় প্রথম সুযোগ। তবে দ্বাদশ মিনিটে উসমান দেম্বেলের ক্রসে ফ্রেংকি ডি ইয়ং হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। প্রতিপক্ষের রক্ষণে গিয়ে খেই হারাচ্ছিল দুই দলের আক্রমণগুলো। গোলের জন্য শট লক্ষ্যে রাখতে পারছিলেন না কেউই। অবশেষে ৩৯তম মিনিটে প্রথম সেই চেষ্টায় সফল হন ফেররান তরেস। তবে বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডের দুর্বল শট অনায়াসেই ব্যর্থ করে দেন সেভিয়া গোলরক্ষক। ৪৪তম মিনিটে দারুণ সুযোগ পেয়ে যায় বার্সেলোনা। পেদ্রির চমৎকার চিপে দেম্বেলের হেড করেন গোলমুখে। কিন্তু ফেররান কিংবা পিয়েরে এমেরিক-অবামেয়াংকে বলের নাগাল পেতে দেননি জুল কুন্দে। যোগ করা সময়ে অবামেয়াংয়ের শট ব্যর্থ করে দিয়ে সেভিয়ার ত্রাতা গোলরক্ষক বোনো। প্রথমার্ধে লক্ষ্েয একটি শটও রাখতে না পারা সফরকারীরা দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেনের পরীক্ষা নেয়। ৪৭তম মিনিটে লামেলার শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক। সাত মিনিট পর সুযোগ আসে সেভিয়ার সামনে। কিন্তু গোলমুখে হেসুস নাভাসের ক্রস একটুর জন্য নাগালে পাননি লুকাস ওকাম্পোস।
৬৩তম মিনিটে বার্সলোনার দারুণ দুটি চেষ্টা কর্নারের বিনিময়ে ব্যর্থ করে দেন বোনো। ছয় মিনিট পর কিছুই করার সুযোগ ছিল না তার। কিন্তু জেরার্দ পিকের হেড ফেরে ক্রসবারে লেগে। বেঁচে যায় সেভিয়া। একের পর এক আক্রমণ করে যাওয়া বার্সেলোনা ৭২তম মিনিটে ভাঙতে পারে সফরকারীদের প্রতিরোধ। দেম্বেলের কাছ থেকে ডি-বক্সের মাথায় বল পেয়ে ইভান রাকিতিচের স্লাইড এড়িয়ে পেদ্রি সরে যান একটু পাশে। ছুটে আসা ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার দিয়েগো কার্লোসকে ডজ দিয়ে পাঠিয়ে দেন আরেক পাশে। এরপর ঠা-া মাথায় পোস্ট ঘেঁষে বার্সেলোনার তরুণ মিডফিল্ডার বুলেট গতির শটে খুঁজে নেন জাল। পাঁচ মিনিট পর দ্বিগুণ হতে পারতো ব্যবধান। প্রতি-আক্রমণ থেকে দেম্বেলের দারুণ ক্রসে ফেররানের হেড ব্যর্থ করে দেন বোনো। ৮৬তম মিনিটে একটি ফাউলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় মাঠে। দুই দলের তিন খেলোয়াড়কে হলুদ কার্ড দেখানোর পর সেভিয়ার সহকারী কোচকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। যোগ করা সময়ে সমতা প্রায় ফিরিয়েই ফেলছিল সেভিয়া। কিন্তু অগাস্টিনসনের শট ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দিয়ে দলের ৩ পয়েন্ট নিশ্চিত করেন টের স্টেগেন।
সেভিয়াকে রেকর্ড গড়তে দিল না বার্সা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ