নিজস্ব প্রতিবেদক: গত সেপ্টেম্বর মাসে সারা দেশে ৪৪৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৭ জন নিহত এবং ৬৮২ জন আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ১৪৩ জন মোটরসাইকেলচালক, ১১২ জন পথচারী এবং ৫৬ জন চালক ও সহকারী।
শনিবার (৪ অক্টোবর) রোড সেফটি ফাউন্ডেশন মাসিক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন প্রকাশ করে এসব তথ্য জানিয়েছে। সংগঠনটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদনটি তৈরি করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সেপ্টেম্বর মাসে জাতীয় মহাসড়কে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে, যা মোট দুর্ঘটনার ৩৬ শতাংশ বা ১৬১টি। আঞ্চলিক সড়কে ৩১ শতাংশ, গ্রামীণ সড়কে ১৩ শতাংশ এবং শহরে ২০ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩৮ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে, ২১ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষে এবং ২৭ শতাংশ পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়ার ঘটনায়।
যানবাহনভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, পিকআপ ও ট্রাক্টরসহ ভারী যানবাহন জড়িত ছিল ২৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ ঘটনায়। মোটরসাইকেল জড়িত ছিল ২৪ শতাংশ, বাস ১৮ শতাংশ এবং থ্রি-হুইলার ১৫ শতাংশ দুর্ঘটনায়।
বিভাগভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। বিভাগটিতে ১২৮টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১২৪ জন। এরপর চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দুর্ঘটনা ঘটে। বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, দুর্ঘটনার মূল কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে বেপরোয়া গতি, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, অদক্ষ চালক, ট্রাফিক আইন না মানা এবং দুর্বল তদারকি। এছাড়া মহাসড়কে স্বল্প গতির যান চলাচল এবং পরিবহনে চাঁদাবাজিও অন্যতম কারণ।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে অতিরিক্ত গতিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। প্রযুক্তির মাধ্যমে গতি পর্যবেক্ষণ ও চালকদের মানসিক প্রশিক্ষণ জোরদার করা জরুরি।
দুর্ঘটনা রোধে সংগঠনটি ১০টি সুপারিশ দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- দক্ষ চালক তৈরি, চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্ধারণ, ট্রাফিক আইন কঠোর বাস্তবায়ন, মহাসড়কে ধীরগতির যান চলাচল বন্ধ, বিকল্প সার্ভিস রোড নির্মাণ ও সচেতনতা কার্যক্রম বৃদ্ধি।
সানা/আপ্র/০৪/১০/২০২৫