ঢাকা ০১:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
দাবি মানার আশ্বাস প্রত্যাখ্যান

সেনা প্রতিনিধিদের পথ অবরোধ করলেন চাকরিচ্যুতরা

  • আপডেট সময় : ০৮:৫৭:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
  • ৩০ বার পড়া হয়েছে

দাবি মানার আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করে সেনা প্রতিনিধিদের পথ অবরোধ করেন চাকরিচ্যুতরা। অনেকের পরিবারের সদস্যরাও এতে যোগ দেন -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ৪ দাবি নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সকাল থেকেই। দুপুর ২টায় সেনা সদর দফতর থেকে ভেটেরান ডিরেক্টর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল আসে আন্দোলনরতদের সঙ্গে আলোচনা করতে। এ সময় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মৌখিক আশ্বাস দিলেও আন্দোলনকারীরা তা প্রত্যাখ্যান করে প্রতিনিধি দলের পথ অবরোধ করে।

রোববার (১৮ মে) সরেজমিন দেখা যায়, বিকাল ৫টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণের ভেতরে সেনা সদর দফতর থেকে আসা প্রতিনিধি দলের গাড়ির সামনে শুয়ে তাদের পথরোধ করে রেখেছেন চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। আন্দোলনে চাকরিচ্যুত সেনা সদস্য ছাড়াও অনেকের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন।

আন্দোলনকারীরা তাদের সন্তানদের নিয়ে প্রতিনিধি দলের গাড়ির সামনে শুয়ে রাস্তা অবরোধ করে রাখেন।

এদিন বেলা ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তিন দফা দাবিতে ‘বাংলাদেশ সহযোদ্ধা প্ল্যাটফর্ম– বিসিপি’-এর ব্যানারে অবস্থান নেন বিভিন্ন সময় চাকরিচ্যুত সেনা সদস্যরা। সেখান থেকে তারা জাহাঙ্গীর গেট অভিমুখে লং মার্চ করার প্রস্তুতি নেন। এ সময় পুলিশ তাদের লং মার্চে বাধা দেয়। তখন পুলিশের একটি জলকামানও সেখানে দেখা যায়। তবে পুলিশ কোনো লাঠিচার্জ করেনি।

বিকাল ৪টায় বৈঠক শেষে সেনা সদর দফতরের প্রতিনিধি দল বের হয়ে আন্দোলনকারীদের জানান, তাদের দাবিগুলো যুক্তিসহকারে দেখা হবে। তারা যেন তাদের চাকরি ফেরতের আবেদন সেনা সদর দফতরে জমা দেন। এছাড়া আগামীকাল সোমবার (১৯ মে) আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দলকে সদর দফতরে কথা বলতেও আমন্ত্রণ জানান তারা।

এ সময় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমান আরো বলেন, যাদের ছোট অপরাধে চাকরি গেছে তাদের নির্দিষ্ট সংখ্যক করে চাকরি ফেরত দেওয়া হবে। যাদের অপরাধ গুরুতর তাদের চাকরি ফেরতের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। যদি সম্ভব হয় সেটি ফেরত দেওয়া হবে। এছাড়া গ্রেফতারকৃত সৈনিকের মুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

কিন্তু এই মৌখিক আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেননি চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। বরং তারা গিয়ে প্রতিনিধি দলের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন এবং স্লোগান দিতে থাকেন।

এ সময় আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে থাকা সমন্বয়করা চেষ্টা করেও তাদের সরাতে পারেনি। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রতিনিধি দল আন্দোলনকারীদের সরাতে বিভিন্ন ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সরছেন না আন্দোলনকারীরা। এ সময় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে শতাধিক সেনা ও পুলিশ বাহিনীর সদস্য উপস্থিত রয়েছেন।

তাদের ৪ দফা দাবি: চাকরিচ্যুত সময় থেকে অদ্যাবধি সম্পূর্ণ বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসহ চাকরি পুনর্বহাল করা; যদি কোনো সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের চাকরি পুনর্বহাল করা সম্ভব না হয় তাহলে উক্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সরকারি সব সুযোগ সুবিধাসহ সম্পূর্ণ পেনশনের আওতাভুক্ত করতে হবে; যে আইন কাঠামো ও একতরফা বিচার ব্যবস্থার প্রয়োগে শত শত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে সেই বিচার ব্যবস্থা ও সংবিধানের আর্টিকেল-৪৫ সংস্করণ করতে হবে; এবং গতকাল গ্রেফতার হওয়া তাদের মুখ্য সমন্বয়ক সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত সৈনিক নাইমুল ইসলামকে মুক্তি দিতে হবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

দাবি মানার আশ্বাস প্রত্যাখ্যান

সেনা প্রতিনিধিদের পথ অবরোধ করলেন চাকরিচ্যুতরা

আপডেট সময় : ০৮:৫৭:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ৪ দাবি নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সকাল থেকেই। দুপুর ২টায় সেনা সদর দফতর থেকে ভেটেরান ডিরেক্টর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল আসে আন্দোলনরতদের সঙ্গে আলোচনা করতে। এ সময় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মৌখিক আশ্বাস দিলেও আন্দোলনকারীরা তা প্রত্যাখ্যান করে প্রতিনিধি দলের পথ অবরোধ করে।

রোববার (১৮ মে) সরেজমিন দেখা যায়, বিকাল ৫টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণের ভেতরে সেনা সদর দফতর থেকে আসা প্রতিনিধি দলের গাড়ির সামনে শুয়ে তাদের পথরোধ করে রেখেছেন চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। আন্দোলনে চাকরিচ্যুত সেনা সদস্য ছাড়াও অনেকের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত রয়েছেন।

আন্দোলনকারীরা তাদের সন্তানদের নিয়ে প্রতিনিধি দলের গাড়ির সামনে শুয়ে রাস্তা অবরোধ করে রাখেন।

এদিন বেলা ১২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তিন দফা দাবিতে ‘বাংলাদেশ সহযোদ্ধা প্ল্যাটফর্ম– বিসিপি’-এর ব্যানারে অবস্থান নেন বিভিন্ন সময় চাকরিচ্যুত সেনা সদস্যরা। সেখান থেকে তারা জাহাঙ্গীর গেট অভিমুখে লং মার্চ করার প্রস্তুতি নেন। এ সময় পুলিশ তাদের লং মার্চে বাধা দেয়। তখন পুলিশের একটি জলকামানও সেখানে দেখা যায়। তবে পুলিশ কোনো লাঠিচার্জ করেনি।

বিকাল ৪টায় বৈঠক শেষে সেনা সদর দফতরের প্রতিনিধি দল বের হয়ে আন্দোলনকারীদের জানান, তাদের দাবিগুলো যুক্তিসহকারে দেখা হবে। তারা যেন তাদের চাকরি ফেরতের আবেদন সেনা সদর দফতরে জমা দেন। এছাড়া আগামীকাল সোমবার (১৯ মে) আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধি দলকে সদর দফতরে কথা বলতেও আমন্ত্রণ জানান তারা।

এ সময় ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিনুর রহমান আরো বলেন, যাদের ছোট অপরাধে চাকরি গেছে তাদের নির্দিষ্ট সংখ্যক করে চাকরি ফেরত দেওয়া হবে। যাদের অপরাধ গুরুতর তাদের চাকরি ফেরতের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। যদি সম্ভব হয় সেটি ফেরত দেওয়া হবে। এছাড়া গ্রেফতারকৃত সৈনিকের মুক্তির বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

কিন্তু এই মৌখিক আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেননি চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা। বরং তারা গিয়ে প্রতিনিধি দলের গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন এবং স্লোগান দিতে থাকেন।

এ সময় আন্দোলনকারীদের নেতৃত্বে থাকা সমন্বয়করা চেষ্টা করেও তাদের সরাতে পারেনি। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রতিনিধি দল আন্দোলনকারীদের সরাতে বিভিন্ন ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সরছেন না আন্দোলনকারীরা। এ সময় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে শতাধিক সেনা ও পুলিশ বাহিনীর সদস্য উপস্থিত রয়েছেন।

তাদের ৪ দফা দাবি: চাকরিচ্যুত সময় থেকে অদ্যাবধি সম্পূর্ণ বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসহ চাকরি পুনর্বহাল করা; যদি কোনো সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের চাকরি পুনর্বহাল করা সম্ভব না হয় তাহলে উক্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সরকারি সব সুযোগ সুবিধাসহ সম্পূর্ণ পেনশনের আওতাভুক্ত করতে হবে; যে আইন কাঠামো ও একতরফা বিচার ব্যবস্থার প্রয়োগে শত শত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে সেই বিচার ব্যবস্থা ও সংবিধানের আর্টিকেল-৪৫ সংস্করণ করতে হবে; এবং গতকাল গ্রেফতার হওয়া তাদের মুখ্য সমন্বয়ক সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত সৈনিক নাইমুল ইসলামকে মুক্তি দিতে হবে।