নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ জাতীয় যে কোনো প্রয়োজনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকবে।
গতকাল বুধবার মুজিব রেজিমেন্ট ও রওশন আরা রেজিমেন্টের কাছে নতুন পতাকা হস্তান্তর অনুষ্ঠান এবং সেনাবাহিনীর ১০টি ইউনিটকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি চট্টগ্রামের হালিশহরে আর্টিলারি সেন্টার অ্যান্ড স্কুল ও ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলাসহ নানা আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তথা জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সেনাবাহিনী উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে। তিনি বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এবং বিভিন্ন বৈদেশিক মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের আত্মত্যাগ, কর্তব্যনিষ্ঠা, পেশাদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছেন সম্মান, মর্যাদা। যা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে। বিশেষ করে আমাদের সেনা সদস্যদের মানবিকতা যখন যে দেশে তারা দায়িত্ব পালন করেন সে দেশের সাধারণ জনগণকেও মুগ্ধ করে।
সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ শত প্রতিকূলতা মোকাবেলা করে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা। যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন। বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নিয়েই এগিয়ে যাবে এবং বিশ্ব দরবারে বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে আমরা চলবো। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। তিনি বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এখন যথেষ্ঠ শক্তিশালী এবং অগ্রসর হয়েছে। বিশেষ করে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস দমনে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় জনগণের পাশে দাঁড়াতে এবং এই করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বিশেষ অবদান রেখে যাচ্ছেন তারা। সেজন্য সবাইকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ। শেখ হাসিনা বলেন, আবহমানকাল থেকে যুদ্ধের ময়দানে জাতীয় পতাকা মর্যাদার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। এই পতাকার মর্যাদা সমুন্নত রাখার দায়িত্ব আপনাদের। মহান মুক্তিযুদ্ধে যে বীরত্বের সাথে আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে যে বিজয় অর্জন করেছিল সে কথাটা চিরদিন মনে রাখতে হবে যে, আমরা বিজয়ী জাতি। আমরা মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে চলবো।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বিএমসি এগ্রিমেন্ট : বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে বিএমসি এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষরিত হয়েছে। গতকাল বুধবার ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে ‘বাংলাদেশ মিলিটারি কন্টিনজেন্ট চুক্তি-২০২১’ স্বাক্ষরিত হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
আইএসপিআর জানায়, বাংলাদেশে সফররত কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর সহকারী চিফ অব স্টাফ (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ম্যানপাওয়ার অথরিটি) মেজর জেনারেল খালেদ এ এইচ এইচ এম আল কাদরি এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এ্যাডজুটেন্ট জেনারেল (এজি) মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ চুক্তি স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগে মঙ্গলবার কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর সফরত সহকারী চিফ অব স্টাফ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তারা পারস্পারিক কুশলাদি বিনিময় ছাড়াও দুই দেশের সেনাবাহিনীর বিদ্যমান সুসম্পর্ক ও দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতামূলক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
প্রসঙ্গত, মেজর জেনারেল আল কাদরির নেতৃত্বে কুয়েত সশস্ত্র বাহিনীর পাঁচ সদস্যের একটি দল আট দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ২১ অক্টোবর ঢাকায় আসে। এছাড়াও প্রতিনিধি দলটি মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরসহ ঢাকা সেনানিবাসের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা পরিদর্শন করে। সফর শেষে প্রতিনিধি দলটি আগামী ২৮ অক্টোবর নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করবে।
সেনাবাহিনী সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত: প্রধানমন্ত্রী
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ