ঢাকা ০৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫
আলোচনা সভায় ফরহাদ মজহার

সেনাবাহিনীর সমর্থন না থাকলে এই সরকার টিকবে না

  • আপডেট সময় : ০৯:৩০:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

শনিবার কুড়িগ্রামে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কবি, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার -ছবি সংগৃহীত

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা: সেনাবাহিনীর সমর্থন না থাকলে অন্তর্বর্তী সরকার টিকবে না বলে মন্তব্য করেছেন কবি, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার। একই সঙ্গে রাজনীতিবিদদের কাছে নতি স্বীকার করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম হলরুমে জ্ঞানতরু সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ আয়োজিত ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি’ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন ।

ফরহাদ মজহার বলেন, তারা বিদেশ থেকে এসে বাংলাদেশের জনগণের মনের কথা, মনের ব্যথা কী বুঝবে? তাই আমাদের সবাইকে অত্যন্ত সচেতনভাবে বুঝতে হবে। সবাইকে একটা গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে হবে। সেখানে ছোট বড় সব রাজনৈতিক দলকে রাখতে হবে। আমাদের প্রথম কাজ হবে একটা গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা, যেটা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এখানে সবার মতামতকে মূল্য দিয়ে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা। ফরহাদ মজহার বলেন, রাজনীতিবিদদের চাপের মুখে নতি স্বীকার করে নির্বাচনের ডেডলাইন দিয়েছেন ডক্টর ইউনুস। সব রাজনৈতিক দলের চাপে তিনি বাধ্য হয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের প্রথম কাজ হলো, নতুন রাষ্ট্র গঠন করা। আমাদের সবাইকে এক হয়ে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য কাজ করতে হবে। আগে রাষ্ট্রের কাঠামো ঠিক করতে হবে, তারপর নির্বাচন করতে হবে।
প্রবীণ এই সমালোচক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা করে বলেন, ‘সবাই শুধু ভোট চায়, নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় যেতে চায়। কেউ দেশের কথা, জনগণের কথা ভাবে না। সবাই শুধু ক্ষমতায় গিয়ে লুটপাট করতে চায়।’

চলমান রাষ্ট্র ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর আমাদের জীবন আমরা স্থানীয়ভাবে যাপনের সিদ্ধান্তের অধিকার চেয়েছি। কিন্তু আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার রাষ্ট্র দেয় না। রাষ্ট্র সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ঢাকায় বসে। আমার করের টাকায় রাষ্ট্র চলে, কিন্তু আমার কোনেও উপকারে আসে না।’

জনবান্ধব রাষ্ট্রের কাঠামো প্রসঙ্গ টেনে ফরহাদ মাজহার বলেন, ‘জনগণ আগে, রাষ্ট্র পরে। জনগণের উপরে রাষ্ট্র নয়। রাষ্ট্রের এমন কোনো ক্ষমতা থাকবে না যে জনগণের ব্যক্তি অধিকার খর্ব করে। রাষ্ট্র এমন কোনো আইন বা নীতি প্রণয়ন করতে পারবে না যা প্রাণ, প্রকৃতি, পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য নষ্ট করে। জীবন ও জীবিকা নষ্ট বা ধ্বংস হয়, এমন কোনো আইন বা নীতি রাষ্ট্র প্রণয়ন করতে পারবে না। ’

রাষ্ট্র সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়া আপসহীন নেত্রী। তার সংগ্রাম ছাড়া এই গণঅভ্যুত্থান হতো না। তার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা গ্রেনেড হামলার মামলা দেওয়া হয়েছিল। তিনি ফাঁসির আসামি ছিলেন। মিথ্যা মামলা হওয়ায় আদালত তাকে খালাস দিয়েছেন। বিগত ১৬ বছরে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার।

জ্ঞানতরু সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য দেন– জ্ঞানতরু সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নেছারউদ্দীন আহমেদ, সাংবাদিক শাহরিন আরাফাত, উলিপুর বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকবাল হোসেন চাঁদ, জুলাই যোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নাহিন, অধ্যাপক আব্দুল বারী, সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান প্রমুখ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আলোচনা সভায় ফরহাদ মজহার

সেনাবাহিনীর সমর্থন না থাকলে এই সরকার টিকবে না

আপডেট সময় : ০৯:৩০:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫

কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা: সেনাবাহিনীর সমর্থন না থাকলে অন্তর্বর্তী সরকার টিকবে না বলে মন্তব্য করেছেন কবি, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মজহার। একই সঙ্গে রাজনীতিবিদদের কাছে নতি স্বীকার করে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম হলরুমে জ্ঞানতরু সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ আয়োজিত ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি’ বিষয়ক এক আলোচনা সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন ।

ফরহাদ মজহার বলেন, তারা বিদেশ থেকে এসে বাংলাদেশের জনগণের মনের কথা, মনের ব্যথা কী বুঝবে? তাই আমাদের সবাইকে অত্যন্ত সচেতনভাবে বুঝতে হবে। সবাইকে একটা গঠনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে হবে। সেখানে ছোট বড় সব রাজনৈতিক দলকে রাখতে হবে। আমাদের প্রথম কাজ হবে একটা গঠনতন্ত্র প্রণয়ন করা, যেটা সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। এখানে সবার মতামতকে মূল্য দিয়ে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা। ফরহাদ মজহার বলেন, রাজনীতিবিদদের চাপের মুখে নতি স্বীকার করে নির্বাচনের ডেডলাইন দিয়েছেন ডক্টর ইউনুস। সব রাজনৈতিক দলের চাপে তিনি বাধ্য হয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের প্রথম কাজ হলো, নতুন রাষ্ট্র গঠন করা। আমাদের সবাইকে এক হয়ে একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য কাজ করতে হবে। আগে রাষ্ট্রের কাঠামো ঠিক করতে হবে, তারপর নির্বাচন করতে হবে।
প্রবীণ এই সমালোচক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা করে বলেন, ‘সবাই শুধু ভোট চায়, নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় যেতে চায়। কেউ দেশের কথা, জনগণের কথা ভাবে না। সবাই শুধু ক্ষমতায় গিয়ে লুটপাট করতে চায়।’

চলমান রাষ্ট্র ব্যবস্থার তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘গণ-অভ্যুত্থানের পর আমাদের জীবন আমরা স্থানীয়ভাবে যাপনের সিদ্ধান্তের অধিকার চেয়েছি। কিন্তু আমাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার রাষ্ট্র দেয় না। রাষ্ট্র সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ঢাকায় বসে। আমার করের টাকায় রাষ্ট্র চলে, কিন্তু আমার কোনেও উপকারে আসে না।’

জনবান্ধব রাষ্ট্রের কাঠামো প্রসঙ্গ টেনে ফরহাদ মাজহার বলেন, ‘জনগণ আগে, রাষ্ট্র পরে। জনগণের উপরে রাষ্ট্র নয়। রাষ্ট্রের এমন কোনো ক্ষমতা থাকবে না যে জনগণের ব্যক্তি অধিকার খর্ব করে। রাষ্ট্র এমন কোনো আইন বা নীতি প্রণয়ন করতে পারবে না যা প্রাণ, প্রকৃতি, পরিবেশ ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য নষ্ট করে। জীবন ও জীবিকা নষ্ট বা ধ্বংস হয়, এমন কোনো আইন বা নীতি রাষ্ট্র প্রণয়ন করতে পারবে না। ’

রাষ্ট্র সংস্কারের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, খালেদা জিয়া আপসহীন নেত্রী। তার সংগ্রাম ছাড়া এই গণঅভ্যুত্থান হতো না। তার নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিল। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা গ্রেনেড হামলার মামলা দেওয়া হয়েছিল। তিনি ফাঁসির আসামি ছিলেন। মিথ্যা মামলা হওয়ায় আদালত তাকে খালাস দিয়েছেন। বিগত ১৬ বছরে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার।

জ্ঞানতরু সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি প্রভাষক সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য দেন– জ্ঞানতরু সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নেছারউদ্দীন আহমেদ, সাংবাদিক শাহরিন আরাফাত, উলিপুর বণিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকবাল হোসেন চাঁদ, জুলাই যোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নাহিন, অধ্যাপক আব্দুল বারী, সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান প্রমুখ।