ঢাকা ০২:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

সেক্রেটারি জেনারেলসহ জামায়াতের ৯ নেতাকর্মী রিমান্ডে

  • আপডেট সময় : ০১:৪০:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ৯৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ নয়জনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন সিএমএম আদালত। দশ দিন করে রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মাহমুদা আক্তার এই রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ডে যাওয়া অপর আসামিরা হলেন-জামায়াতে ইসলামীর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, রফিকুল ইসলাম খান, নির্বাহী পরিষদের সদস্য ইজ্জত উল্লাহ, মোবারক হোসেন, আব্দুর রব, ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত এবং জামায়াতের কর্মী মনিরুল ইসলাম ও আবুল কালাম।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার এসআই (নি.) মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম সংশ্লিষ্ট থানায় দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধ আইনের মামলায় এই রিমান্ড আবেদন করেন। মামলায় আসমিরা সরকারবিরোধী ও সরকারকে উৎখাতের জন্য গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘এরা জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিকে সুসংগঠিত করার নামে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার পাশাপাশি নাশকতার ঘটনা ঘটানোর চেষ্টায় লিপ্ত। তাই তাদেরকে রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দিয়ে আরও তথ্য-উপাত্ত উদ্ধার ও মামলার তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের হেফাজতে পাঠানোর আদেশ প্রার্থনা করছি।’
আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, শিশির মনির, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সহ-সভাপতি এমডি গোলাম রহমান ভূঁইয়াসহ কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড আবেদন বাতিলসহ জামিনের আবেদন করেন। এসময় তাদের সঙ্গে আরও অর্ধ শতাধিক আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। শুনানিতে তারা বলেন, ‘শুধুজামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা ও দায়িত্ব পালন করার ফলে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হয়রানি করান জন্যই তাদের এই মামলায় আসামি করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। তাই তাদের রিমান্ড আবেদন বাতিল করে জামিনে মুক্তি দেওয়া হোক। যেকোনো শর্তে জামিন পেলে আসামিরা কোনো আইনি ব্যত্যয় না ঘটিয়ে ঠিকমত হাজিরা দেবেন।’
শুনানির এক পর্যায়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সহসভাপতি এস এম কামাল উদ্দিন আদালতে জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র পড়ে শোনান। তিনি বলেন, ‘মিয়া গোলাম পরওয়ার ও হামিদুর রহমান আজাদ সাবেক সংসদ সদস্য। এছাড়া কয়েকজন আছেন যাদের বয়স ৮০ বছর। তাই সার্বিক দিক বিবেচনায় রিমান্ড বাতিল করে তাদের প্রয়োজনে জেলগেটে হাজার বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না।’
আইনজীবী বলেন,‘ রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে নাম-ঠিকানা যাচাই করার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। অথচ মামলার আবেদন ও রিমান্ডের আবেদনে সবার বিস্তারিত নাম ঠিকানা দেওয়া আছে। আসামিদের কাছ থেকে কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত জিনিস পাওয়া যায়নি। ল্যাপটপ, মোবাইল তো কোনো নিষিদ্ধ জিনিস নয়।’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন,‘পরীমনি ইস্যু শেষ। এখন তো নতুন ইস্যু দরকার। জামায়াতে ইসলামী সবার সঙ্গে মাঠে আন্দোলন করেছে। যখন যার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে তখন তারা ক্ষমতায় থেকে জামায়াতকে স্বাধীনতাবিরোধী নিষিদ্ধ বলার চেষ্টা করেছে। তাই এই মামলার কিছুই নাই আমরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চাই।’

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ জানায়, জামায়াতের নেতারা সোমবার রাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। বৈঠকে তারা রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র ও নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন। সেখান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে এই ঘটনায় ভাটারা থানার এসআই হাসান মাসুদ মামলাটি দায়ের করেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সেক্রেটারি জেনারেলসহ জামায়াতের ৯ নেতাকর্মী রিমান্ডে

আপডেট সময় : ০১:৪০:২৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে গ্রেপ্তার জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ নয়জনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন সিএমএম আদালত। দশ দিন করে রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মাহমুদা আক্তার এই রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ডে যাওয়া অপর আসামিরা হলেন-জামায়াতে ইসলামীর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ, রফিকুল ইসলাম খান, নির্বাহী পরিষদের সদস্য ইজ্জত উল্লাহ, মোবারক হোসেন, আব্দুর রব, ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত এবং জামায়াতের কর্মী মনিরুল ইসলাম ও আবুল কালাম।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার এসআই (নি.) মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম সংশ্লিষ্ট থানায় দায়ের করা সন্ত্রাসবিরোধ আইনের মামলায় এই রিমান্ড আবেদন করেন। মামলায় আসমিরা সরকারবিরোধী ও সরকারকে উৎখাতের জন্য গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘এরা জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিকে সুসংগঠিত করার নামে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার পাশাপাশি নাশকতার ঘটনা ঘটানোর চেষ্টায় লিপ্ত। তাই তাদেরকে রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দিয়ে আরও তথ্য-উপাত্ত উদ্ধার ও মামলার তদন্তের স্বার্থে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের হেফাজতে পাঠানোর আদেশ প্রার্থনা করছি।’
আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট আব্দুর রাজ্জাক, শিশির মনির, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সহ-সভাপতি এমডি গোলাম রহমান ভূঁইয়াসহ কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড আবেদন বাতিলসহ জামিনের আবেদন করেন। এসময় তাদের সঙ্গে আরও অর্ধ শতাধিক আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। শুনানিতে তারা বলেন, ‘শুধুজামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা ও দায়িত্ব পালন করার ফলে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হয়রানি করান জন্যই তাদের এই মামলায় আসামি করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। তাই তাদের রিমান্ড আবেদন বাতিল করে জামিনে মুক্তি দেওয়া হোক। যেকোনো শর্তে জামিন পেলে আসামিরা কোনো আইনি ব্যত্যয় না ঘটিয়ে ঠিকমত হাজিরা দেবেন।’
শুনানির এক পর্যায়ে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সহসভাপতি এস এম কামাল উদ্দিন আদালতে জামায়াতে ইসলামীর গঠনতন্ত্র পড়ে শোনান। তিনি বলেন, ‘মিয়া গোলাম পরওয়ার ও হামিদুর রহমান আজাদ সাবেক সংসদ সদস্য। এছাড়া কয়েকজন আছেন যাদের বয়স ৮০ বছর। তাই সার্বিক দিক বিবেচনায় রিমান্ড বাতিল করে তাদের প্রয়োজনে জেলগেটে হাজার বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। আমাদের কোনো আপত্তি থাকবে না।’
আইনজীবী বলেন,‘ রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে নাম-ঠিকানা যাচাই করার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। অথচ মামলার আবেদন ও রিমান্ডের আবেদনে সবার বিস্তারিত নাম ঠিকানা দেওয়া আছে। আসামিদের কাছ থেকে কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত জিনিস পাওয়া যায়নি। ল্যাপটপ, মোবাইল তো কোনো নিষিদ্ধ জিনিস নয়।’
আব্দুর রাজ্জাক বলেন,‘পরীমনি ইস্যু শেষ। এখন তো নতুন ইস্যু দরকার। জামায়াতে ইসলামী সবার সঙ্গে মাঠে আন্দোলন করেছে। যখন যার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে তখন তারা ক্ষমতায় থেকে জামায়াতকে স্বাধীনতাবিরোধী নিষিদ্ধ বলার চেষ্টা করেছে। তাই এই মামলার কিছুই নাই আমরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চাই।’

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ জানায়, জামায়াতের নেতারা সোমবার রাতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসায় গোপন বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। বৈঠকে তারা রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র ও নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন। সেখান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে এই ঘটনায় ভাটারা থানার এসআই হাসান মাসুদ মামলাটি দায়ের করেন।