প্রত্যাশা ডেস্ক : সূর্যোদয় উপভোগ করতে অনেকেই ছুটে যান সাগরপারে। কেউ আবার চড়ে বসেন পাহাড়ের চূড়ায়। তবে ফ্রান্সের দুই নাগরিক সূর্যোদয় দেখতে যা করেছেন, তা অনেকেই করতে চাইবেন না। তাঁরা ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার ভাস্কর্যের চূড়ায় উঠে সূর্যোদয় দেখতে চেয়েছিলেন। তাও আবার দর্শনার্থীদের জন্য এই ভাস্কর্য প্রাঙ্গণ বন্ধ থাকা অবস্থায়। ফলাফল, শ্রীঘর দর্শন।
ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার ভাস্কর্যটি ১২৫ ফুট উঁচু। আগামী অক্টোবরে এই ভাস্কর্যের বয়স হবে ৯০ বছর। ভাস্কর্যটি দেখতে বছরে রিও ডি জেনিরোতে যান প্রায় ২০ লাখ পর্যটক।
ফ্রান্সের দুই নাগরিক ক্লমঁ দুমা (২৮) ও পল রখ-দ্য-বসঁ (২৭) গত রোববার স্থানীয় সময় বিকেলে ক্রাইস্ট দ্য রিডিমার ভাস্কর্য দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে ভাস্কর্যের চূড়ায় উঠে সূর্যোদয় দেখার ইচ্ছা হলো তাঁদের। যেই কথা, সেই কাজ। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা লুকিয়ে পড়লেন ভাস্কর্য প্রাঙ্গণে। এরপর দর্শনার্থীদের জন্য প্রাঙ্গণটি বন্ধ হয়ে যায়। দুই বন্ধু লুকিয়ে ১২৫ ফুট উঁচু ভাস্কর্যটির সিঁড়ি ভেঙে ওপরে ওঠেন। সেখানে কাটান সারা রাত। সূর্যোদয়ের আগমুহূর্তে ভাস্কর্যের মেলে থাকা দুই হাতের একটিতে গিয়ে বসেন। সামনে তখন পুরো রিও ডি জেনিরো শহর আর গুয়ানাবারা উপসাগর। ক্রাইস্ট দ্য রিডিম ভাস্কর্যটির মেলে থাকা দুই হাতের দৈর্ঘ্য প্রায় ৯২ ফুট।
পল রখ-দ্য-বসঁ এএফপিকে বলেন, ‘আমরা ভাস্কর্যের একটি বাহুর ওপর দাঁড়িয়ে ছিলাম। ঠিক এমন মুহূর্তে একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা আমাদের দেখে ফেলেন।’ তিনি জানান, গত সোমবার স্থানীয় সময় সকালে তাঁদের আটক করা হয়। পুলিশ হাজতে কিছু সময় পার করার পর ১ হাজার ৯০০ মার্কিন ডলারে জামিন পান তাঁরা। পরবর্তী সময়ে তাঁদের আদালতের কাঠগড়ায় ঠিকই দাঁড়াতে হবে।
এ ঘটনার বিষয়ে রিও ডি জেনিরোর পর্যটন পুলিশ মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তারা শুধু বলেছে, তারা তদন্ত করছে।
ক্লমঁ দুমা এবং পল রখ-দ্য-বসঁ এবারই প্রথম এমন ঘটনা ঘটাননি। এর আগে তাঁরা সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক এবং ফ্রান্সের প্যারিসের এমন পর্যটন-আকর্ষী স্থাপত্য নিদর্শনের ওপর উঠে সূর্যোদয় দেখেছেন। শুধু তা-ই নয়, সে দৃশ্যের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে তাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছেড়েছেন।
তবে ব্রাজিলে গিয়ে তাঁরা ক্রাইস্ট দ্য রিডিমারের ওপর উঠলেও সেখানে তাঁদের ধারণ করা সব ছবি ও ভিডিও জব্দ করেছে পুলিশ। তবে জেল-জরিমানা কিংবা ছবি-ভিডিও হাতছাড়া হওয়ার বিষয়গুলো খুব একটা ভাবাচ্ছে না ওই দুই বন্ধুকে। পল রখ-দ্য-বসঁ বলেন, ‘দৃশ্যটা ছিল উপভোগ্য। খুব কম মানুষই এমন দৃশ্য দেখার সুযোগ পায়।’
সূর্যোদয় দেখতে গিয়ে শ্রীঘরে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ