ঢাকা ০৮:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

সু চির মুখপাত্রসহ সাড়ে ৫ হাজারের বেশি বন্দিকে মুক্তি দিলো জান্তা

  • আপডেট সময় : ১২:০১:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর ২০২১
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কুখ্যাত ইনসেইন কারাগার থেকে কয়েক হাজার বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার। এদের মধ্যে অং সান সুচির দলের এক মুখপাত্র এবং জনপ্রিয় কমেডিয়ান জারগানার রয়েছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গত সোমবার টেলিভিশনে বক্তব্য রাখার সময় সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি আন্দোলনকারীকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দেন জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, সাউথইস্ট এসিয়ান ন্যাশনস (আসিয়ান) এবারের শীর্ষ সম্মেলনে জান্তাপ্রধানকে আমন্ত্রণ না জানানোয় চাপের মধ্যে রয়েছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নিজেদের ভাব-মূর্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে জান্তা সরকার। সে কারণেই একসঙ্গে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হলো।
গত ১ ফেব্রুয়ারি বেসামরিক সরকারকে সরিয়ে দেশের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে নেয় সেনাবাহিনী। তারপরই দেশজুড়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে রাজপথে নামে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। কিন্তু বিক্ষোভ-প্রতিবাদ দমন করতে কঠোর অভিযান চালায় জান্তা সরকার। সে সময় হাজার হাজার আন্দোলনকারীকে আটক করা হয়। তার আগে সুচি এবং তার দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীদের আটক করা হয়।
এদিকে আন্দোলনকারীদের মুক্তি দেওয়ার ঘটনায় স্বাগত জানিয়ে টুইট করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রিউস। এসব লোকজনকে আটক করায় এর আগে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
টম অ্যান্ড্রিউস বলেন, নিজেদের মন-মানসিকতার বদলের ফলে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেয়নি মিয়ানমার। বরং চাপে পড়েই তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
চলতি মাসের শেষের দিকে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এসিয়ান ন্যাশন্সের (আসিয়ান) শীর্ষ সম্মেলনে মিয়ানমার থেকে জান্তাপ্রধানকে বাদ দিয়ে অরাজনৈতিক প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই ঘটনার পরই জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা এলো। গত শনিবার এক বিবৃতিতে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত কঠিন হলেও আসিয়ানের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখার জন্য এটি ছিল প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত।
আসিয়ানের বর্তমান সভাপতি দেশ ব্রুনেই বলছে, আগামী ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবরের সম্মেলনে মিয়ানমার থেকে অরাজনৈতিক প্রতিনিধি রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশটি বলছে, মিয়ানমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারায় অনেক জোট সদস্যের চাপে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে মিন অং হ্লাইংয়ের পরিবর্তে কাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সে বিষয়টি পরিস্কার করা হয়নি।
মিয়ানমারের স্থানীয় পর্যবেক্ষণকারী সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ১১শর মতো মানুষ নিহত হয়। আটক করা হয় আট হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে। এর আগে চলতি বছরের জুলাই মাসে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে মুক্তি দেয় সাংবাদিক, সমালোচকসহ দুই হাজারের মতো বিক্ষোভকারীকে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সু চির মুখপাত্রসহ সাড়ে ৫ হাজারের বেশি বন্দিকে মুক্তি দিলো জান্তা

আপডেট সময় : ১২:০১:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অক্টোবর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কুখ্যাত ইনসেইন কারাগার থেকে কয়েক হাজার বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার। এদের মধ্যে অং সান সুচির দলের এক মুখপাত্র এবং জনপ্রিয় কমেডিয়ান জারগানার রয়েছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গত সোমবার টেলিভিশনে বক্তব্য রাখার সময় সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি আন্দোলনকারীকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দেন জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, সাউথইস্ট এসিয়ান ন্যাশনস (আসিয়ান) এবারের শীর্ষ সম্মেলনে জান্তাপ্রধানকে আমন্ত্রণ না জানানোয় চাপের মধ্যে রয়েছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে নিজেদের ভাব-মূর্তি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে জান্তা সরকার। সে কারণেই একসঙ্গে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হলো।
গত ১ ফেব্রুয়ারি বেসামরিক সরকারকে সরিয়ে দেশের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে নেয় সেনাবাহিনী। তারপরই দেশজুড়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে রাজপথে নামে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। কিন্তু বিক্ষোভ-প্রতিবাদ দমন করতে কঠোর অভিযান চালায় জান্তা সরকার। সে সময় হাজার হাজার আন্দোলনকারীকে আটক করা হয়। তার আগে সুচি এবং তার দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীদের আটক করা হয়।
এদিকে আন্দোলনকারীদের মুক্তি দেওয়ার ঘটনায় স্বাগত জানিয়ে টুইট করেছেন জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধি টম অ্যান্ড্রিউস। এসব লোকজনকে আটক করায় এর আগে জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
টম অ্যান্ড্রিউস বলেন, নিজেদের মন-মানসিকতার বদলের ফলে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেয়নি মিয়ানমার। বরং চাপে পড়েই তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
চলতি মাসের শেষের দিকে অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এসিয়ান ন্যাশন্সের (আসিয়ান) শীর্ষ সম্মেলনে মিয়ানমার থেকে জান্তাপ্রধানকে বাদ দিয়ে অরাজনৈতিক প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই ঘটনার পরই জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে এমন ঘোষণা এলো। গত শনিবার এক বিবৃতিতে সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত কঠিন হলেও আসিয়ানের বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখার জন্য এটি ছিল প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত।
আসিয়ানের বর্তমান সভাপতি দেশ ব্রুনেই বলছে, আগামী ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবরের সম্মেলনে মিয়ানমার থেকে অরাজনৈতিক প্রতিনিধি রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দেশটি বলছে, মিয়ানমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে না পারায় অনেক জোট সদস্যের চাপে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে মিন অং হ্লাইংয়ের পরিবর্তে কাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সে বিষয়টি পরিস্কার করা হয়নি।
মিয়ানমারের স্থানীয় পর্যবেক্ষণকারী সংগঠনগুলোর তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ১১শর মতো মানুষ নিহত হয়। আটক করা হয় আট হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে। এর আগে চলতি বছরের জুলাই মাসে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে মুক্তি দেয় সাংবাদিক, সমালোচকসহ দুই হাজারের মতো বিক্ষোভকারীকে।