ঢাকা ০২:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

সুযোগ নিন বৈশ্বিক চাকরির বাজারে

  • আপডেট সময় : ১০:২২:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

ঘরে বসেই বিদেশি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন বহু বাংলাদেশি তরুণ। এটা চুক্তিভিত্তিক কাজ, ফ্রিল্যান্সিং নয়। তাই প্রচলিত চাকরির মতোই মাস গেলেই বেতন। আর আয়ের অঙ্কটাও বেশ ভালো। বিস্তারিত লিখেছেন হাবিব তারেক-
করোনা সংক্রমণের পর থেকে দুনিয়াজুড়ে অনলাইননির্ভরতা বহুগুণ বেড়ে গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন অনেক ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। মাইক্রোসফট, গুগল, অ্যামাজন, ইয়াহুর মতো বড় বড় বহু প্রতিষ্ঠান তখন বাধ্য হয়ে কর্মীদের ‘হোম অফিস’ বা বাসায় বসে অফিসের কাজের অনুমতি দিয়েছিল। আর এভাবেও যে কাজ চালিয়ে নেওয়া যায়, সেটা তখনই প্রমাণ হয়ে গেছে। এর পরই ‘রিমোট জব’ বা দূরবর্তী চাকরির ধারণাটি ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপকভাবে। এমনকি অনেক দেশ রিমোট কর্মীদের জন্য নতুন ধরনের ভিসা পর্যন্ত চালু করেছে। যেমন—কেউ আমেরিকার নাগরিক, সেখানে জীবন ধারণের খরচ অনেক বেশি। তিনি যদি আমেরিকান বা অন্য কোনো দেশের প্রতিষ্ঠানে রিমোট জব করেন, আর নির্ধারিত ডলারের বেশি (উন্নত দেশগুলোতে সাধারণত মাসে অন্তত ২০০০ ডলার) আয় করেন, তাহলে অনেক দেশেই তিনি ‘ডিজিটাল নোম্যাড’ বা এ ধরনের ক্যাটাগরির ভিসার আবেদন করে সেখানে থাকতে পারবেন। এর সুবিধা হলো তিনি বেশি পারিশ্রমিকের দেশের প্রতিষ্ঠানে কাজ করে অনেক অর্থ কামাবেন, আর থাকবেন তুলনামূলক কম খরচ বা সুবিধার কোনো দেশে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই পদ্ধতি দিয়ে বাংলাদেশিদের ফায়দা কী? ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে অনেকেরই কমবেশি ধারণা থাকলেও রিমোট জব বা ওয়ার্ক নিয়ে খুব কম মানুষই জানেন। বাংলাদেশের অসংখ্য তরুণ ও প্রযুক্তি কাজে দক্ষ জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে বসেই ইউরোপ-আমেরিকার নামি-দামি অনেক প্রতিষ্ঠানে ভালো মাইনেতে কাজ করছেন। আর এই পদ্ধতিতে কর্মী ও নিয়োগদাতা উভয় পক্ষে বেশ কিছু সুবিধাও আছে। যেমন—কর্মী তাঁর বাসায় বসেই কাজ করতে পারছেন। কোনো পরিবহন খরচ ও যাতায়াতের জন্য সময় নষ্ট হচ্ছে না। কর্মী যেকোনো শহর-গ্রাম বা দেশে বসেই কাজ চালিয়ে যেতে পারছেন। সবচেয়ে বড় সুযোগ হচ্ছে সময় ভাগ করে একজন কর্মী একাধিক প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। আবার নিয়োগকর্তারও সুবিধা; কর্মীদের জন্য বাড়তি অবকাঠামোগত খরচ করতে হচ্ছে না।
রিমোট জব কি ফ্রিল্যান্সিং?
রিমোট জব মানে কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং না। ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে মুক্ত পেশা আর রিমোট জব চুক্তিভিত্তিক বেতনের চাকরি। তবে এই দুই কাজের ক্ষেত্রে মিল হচ্ছে—উভয়েই বাসায় বসে কাজ করেন। ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করেন আপওয়ার্ক, ফাইবার বা এ ধরনের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেসে। সেখানে ক্লায়েন্ট কাজের প্রস্তাব দিলে সেখানে বহু ফ্রিল্যান্সাররা সে কাজ পেতে অনুরোধ করেন। ক্লায়েন্টরা তাদের মধ্য থেকে একজনকে সে কাজটি দেন। আর সেই কাজের সময়কাল পর্যন্তই ক্লায়েন্ট আর ফ্রিল্যান্সারের মধ্যে যোগাযোগ হয়। এই সময়কাল খুব বেশি না, হতে পারে ২৪ ঘণ্টা থেকে এক সপ্তাহের মতো। অন্যদিকে রিমোট জবের কর্মীরা অন্যসব চাকরিজীবীর মতোই একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে নির্ধারিত কাজ করেন। আর মাস বা নির্দিষ্ট সময় শেষে বেতন পান। যেসব প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত চলমান অনেক কাজ আছে, সাধারণত সেসব প্রতিষ্ঠানই রিমোট কর্মী নিয়োগ দেয়। আর যাদের সাময়িক কাজের দরকার, তারা ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলো থেকে ফ্রিল্যান্সারদের মাধ্যমে কাজ সারিয়ে নেন।
সুবিধা কী
ঘর-পরিবার সামলানোর পাশাপাশি কাজ করা যায়, আর মাইনেটাও বেশ ভালোই। যানজট বা যাতায়তের জন্য সময়-অর্থ কোনোটাই নষ্ট হয় না। তবে কিছু সমস্যাও আছে! যেমন—সাধারণত চাকরি বছরের পর বছর ধরে করা যায়। কিন্তু রিমোট জব কয়েক মাসের জন্য হতে পারে, আবার সেটা নবায়ন হতে হতে কয়েক বছর পর্যন্ত চলমান থাকতে পারে। এরপর কর্মীকে অন্য চাকরি খুঁজতে হবে। প্রচলিত চাকরিতে চাকরি শেষে এককালীন অর্থ দেওয়া হয়, রিমোট জবে সে সুযোগ নেই। তবে রিমোট কাজের সূত্র ধরে কর্মীদের আরো ভালো সুযোগ তৈরি হতে পারে ভবিষ্যতে।
কোথায় চাকরি পাবেন
রিমোট জবের তথ্য বা বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যাবে ইনডিড, মনস্টার, সিক (িি.িংববশধংরধ.পড়স, ংববশ.পড়স.ধঁ, িি.িংববশ.পড়.হু)-এর মতো আন্তর্জাতিক চাকরি খোঁজার ওয়েবসাইটগুলোতে। কোনো কাজের বিজ্ঞপ্তি দেখলে কাজের বিস্তারিত ও শর্ত ভালোভাবে দেখেই আবেদন করুন। যে প্রতিষ্ঠানে আবেদন করবেন, তাদের প্রফাইল ও কার্যক্রম সম্পর্কেও ধারণা নিন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক পেজ ও গুগলে সার্চ দিয়ে।
সুযোগ কাদের
পুরুষ ও নারী উভয় প্রার্থীরাই রিমোট জবের সুযোগ পাচ্ছেন। যেসব নারীদের যোগ্যতা আছে কিন্তু পরিবার-বাচ্চা সামলে চাকরির অবকাশ নেই, তাঁরাও বিদেশি প্রতিষ্ঠানে অনলাইনভিত্তিক এই চাকরির সুযোগ নিতে পারেন। আপনার পড়াশোনা কিসে, কোন কাজে দক্ষতা আছে, কাঙ্ক্ষিত বেতন কত—এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই চাকরি খুঁজুন। কোনো চাকরির আবেদন করার পর সেখান থেকে অনলাইনে যোগাযোগ করলে কাজের শর্তসহ বিস্তারিত জেনে তারপর সিদ্ধান্ত নিন। একই সঙ্গে অনলাইনকেন্দ্রিক প্রতারণার ব্যাপারেও সজাগ থাকুন। নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফরম ছাড়া অন্য কোথাও চাকরি না খোঁজাই ভালো।
কাজ কী, বেতন কেমন?
এ ধরনের চাকরির বেশির ভাগ কাজই সাধারণত তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর। তাই তথ্য-প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা থাকতে হবে। সাধারণত কম্পিউটার প্রগ্রামিং, কোডিং, ডেভেলপিং, কাস্টমার সার্ভিস, ডাটা এন্ট্রি, ট্রান্সক্রিপশন, কনটেন্ট রাইটার, গ্রাফিকস ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি কাজই সংখ্যায় বেশি। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের চাকরি হওয়ায় ইংরেজিতে কথোপকথন ও যোগাযোগ দক্ষতা থাকা জরুরি। প্রয়োজনে জুম বা গুগল মিটে লাইভ মিটিংয়ে অংশ নিতে হতে পারে। সংশ্লিষ্ট কাজে পারদর্শিতার পাশাপাশি সৃজনশীলতা, দ্রুত কাজের দক্ষতা, কাজের সঙ্গে সময়ের সমন্বয় ও যোগাযোগ দক্ষতা একজন প্রার্থীকে রিমোট জব পেতে এগিয়ে রাখবে। এখানে একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে—যে দেশের প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করবেন, সেখানকার সময়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। হতে পারে সেখানে যখন কাজের সময়, তখন বাংলাদেশে মধ্যরাত। পরিশ্রমী হওয়ায় ইউরোপ-আমেরিকার চাকরির বাজারে দিন দিন চাহিদা বাড়ছে বাংলাদেশি কর্মীদের। বেতন বা পারিশ্রমিক কাজ ও প্রতিষ্ঠানের ধরনভেদে ভিন্ন ভিন্ন। তবে অর্থের অঙ্কটা দেশি চাকরির বেতনের তুলনায় অনেক বেশি। দেশে বসে অনেকেই রিমোট চাকরি করে এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার ডলার (বাংলাদেশি টাকায় এক লাখ পাঁচ হাজার থেকে পাঁচ লাখ ১৫ হাজার) আয় করছেন। এর কমবেশি ডলারেও কাজ করছেন কেউ কেউ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সুযোগ নিন বৈশ্বিক চাকরির বাজারে

আপডেট সময় : ১০:২২:৩২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩

ঘরে বসেই বিদেশি প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন বহু বাংলাদেশি তরুণ। এটা চুক্তিভিত্তিক কাজ, ফ্রিল্যান্সিং নয়। তাই প্রচলিত চাকরির মতোই মাস গেলেই বেতন। আর আয়ের অঙ্কটাও বেশ ভালো। বিস্তারিত লিখেছেন হাবিব তারেক-
করোনা সংক্রমণের পর থেকে দুনিয়াজুড়ে অনলাইননির্ভরতা বহুগুণ বেড়ে গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন অনেক ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। মাইক্রোসফট, গুগল, অ্যামাজন, ইয়াহুর মতো বড় বড় বহু প্রতিষ্ঠান তখন বাধ্য হয়ে কর্মীদের ‘হোম অফিস’ বা বাসায় বসে অফিসের কাজের অনুমতি দিয়েছিল। আর এভাবেও যে কাজ চালিয়ে নেওয়া যায়, সেটা তখনই প্রমাণ হয়ে গেছে। এর পরই ‘রিমোট জব’ বা দূরবর্তী চাকরির ধারণাটি ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপকভাবে। এমনকি অনেক দেশ রিমোট কর্মীদের জন্য নতুন ধরনের ভিসা পর্যন্ত চালু করেছে। যেমন—কেউ আমেরিকার নাগরিক, সেখানে জীবন ধারণের খরচ অনেক বেশি। তিনি যদি আমেরিকান বা অন্য কোনো দেশের প্রতিষ্ঠানে রিমোট জব করেন, আর নির্ধারিত ডলারের বেশি (উন্নত দেশগুলোতে সাধারণত মাসে অন্তত ২০০০ ডলার) আয় করেন, তাহলে অনেক দেশেই তিনি ‘ডিজিটাল নোম্যাড’ বা এ ধরনের ক্যাটাগরির ভিসার আবেদন করে সেখানে থাকতে পারবেন। এর সুবিধা হলো তিনি বেশি পারিশ্রমিকের দেশের প্রতিষ্ঠানে কাজ করে অনেক অর্থ কামাবেন, আর থাকবেন তুলনামূলক কম খরচ বা সুবিধার কোনো দেশে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই পদ্ধতি দিয়ে বাংলাদেশিদের ফায়দা কী? ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে অনেকেরই কমবেশি ধারণা থাকলেও রিমোট জব বা ওয়ার্ক নিয়ে খুব কম মানুষই জানেন। বাংলাদেশের অসংখ্য তরুণ ও প্রযুক্তি কাজে দক্ষ জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে বসেই ইউরোপ-আমেরিকার নামি-দামি অনেক প্রতিষ্ঠানে ভালো মাইনেতে কাজ করছেন। আর এই পদ্ধতিতে কর্মী ও নিয়োগদাতা উভয় পক্ষে বেশ কিছু সুবিধাও আছে। যেমন—কর্মী তাঁর বাসায় বসেই কাজ করতে পারছেন। কোনো পরিবহন খরচ ও যাতায়াতের জন্য সময় নষ্ট হচ্ছে না। কর্মী যেকোনো শহর-গ্রাম বা দেশে বসেই কাজ চালিয়ে যেতে পারছেন। সবচেয়ে বড় সুযোগ হচ্ছে সময় ভাগ করে একজন কর্মী একাধিক প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। আবার নিয়োগকর্তারও সুবিধা; কর্মীদের জন্য বাড়তি অবকাঠামোগত খরচ করতে হচ্ছে না।
রিমোট জব কি ফ্রিল্যান্সিং?
রিমোট জব মানে কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং না। ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে মুক্ত পেশা আর রিমোট জব চুক্তিভিত্তিক বেতনের চাকরি। তবে এই দুই কাজের ক্ষেত্রে মিল হচ্ছে—উভয়েই বাসায় বসে কাজ করেন। ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করেন আপওয়ার্ক, ফাইবার বা এ ধরনের ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট প্লেসে। সেখানে ক্লায়েন্ট কাজের প্রস্তাব দিলে সেখানে বহু ফ্রিল্যান্সাররা সে কাজ পেতে অনুরোধ করেন। ক্লায়েন্টরা তাদের মধ্য থেকে একজনকে সে কাজটি দেন। আর সেই কাজের সময়কাল পর্যন্তই ক্লায়েন্ট আর ফ্রিল্যান্সারের মধ্যে যোগাযোগ হয়। এই সময়কাল খুব বেশি না, হতে পারে ২৪ ঘণ্টা থেকে এক সপ্তাহের মতো। অন্যদিকে রিমোট জবের কর্মীরা অন্যসব চাকরিজীবীর মতোই একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে নির্ধারিত কাজ করেন। আর মাস বা নির্দিষ্ট সময় শেষে বেতন পান। যেসব প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত চলমান অনেক কাজ আছে, সাধারণত সেসব প্রতিষ্ঠানই রিমোট কর্মী নিয়োগ দেয়। আর যাদের সাময়িক কাজের দরকার, তারা ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলো থেকে ফ্রিল্যান্সারদের মাধ্যমে কাজ সারিয়ে নেন।
সুবিধা কী
ঘর-পরিবার সামলানোর পাশাপাশি কাজ করা যায়, আর মাইনেটাও বেশ ভালোই। যানজট বা যাতায়তের জন্য সময়-অর্থ কোনোটাই নষ্ট হয় না। তবে কিছু সমস্যাও আছে! যেমন—সাধারণত চাকরি বছরের পর বছর ধরে করা যায়। কিন্তু রিমোট জব কয়েক মাসের জন্য হতে পারে, আবার সেটা নবায়ন হতে হতে কয়েক বছর পর্যন্ত চলমান থাকতে পারে। এরপর কর্মীকে অন্য চাকরি খুঁজতে হবে। প্রচলিত চাকরিতে চাকরি শেষে এককালীন অর্থ দেওয়া হয়, রিমোট জবে সে সুযোগ নেই। তবে রিমোট কাজের সূত্র ধরে কর্মীদের আরো ভালো সুযোগ তৈরি হতে পারে ভবিষ্যতে।
কোথায় চাকরি পাবেন
রিমোট জবের তথ্য বা বিজ্ঞপ্তি পাওয়া যাবে ইনডিড, মনস্টার, সিক (িি.িংববশধংরধ.পড়স, ংববশ.পড়স.ধঁ, িি.িংববশ.পড়.হু)-এর মতো আন্তর্জাতিক চাকরি খোঁজার ওয়েবসাইটগুলোতে। কোনো কাজের বিজ্ঞপ্তি দেখলে কাজের বিস্তারিত ও শর্ত ভালোভাবে দেখেই আবেদন করুন। যে প্রতিষ্ঠানে আবেদন করবেন, তাদের প্রফাইল ও কার্যক্রম সম্পর্কেও ধারণা নিন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক পেজ ও গুগলে সার্চ দিয়ে।
সুযোগ কাদের
পুরুষ ও নারী উভয় প্রার্থীরাই রিমোট জবের সুযোগ পাচ্ছেন। যেসব নারীদের যোগ্যতা আছে কিন্তু পরিবার-বাচ্চা সামলে চাকরির অবকাশ নেই, তাঁরাও বিদেশি প্রতিষ্ঠানে অনলাইনভিত্তিক এই চাকরির সুযোগ নিতে পারেন। আপনার পড়াশোনা কিসে, কোন কাজে দক্ষতা আছে, কাঙ্ক্ষিত বেতন কত—এ বিষয়গুলো মাথায় রেখেই চাকরি খুঁজুন। কোনো চাকরির আবেদন করার পর সেখান থেকে অনলাইনে যোগাযোগ করলে কাজের শর্তসহ বিস্তারিত জেনে তারপর সিদ্ধান্ত নিন। একই সঙ্গে অনলাইনকেন্দ্রিক প্রতারণার ব্যাপারেও সজাগ থাকুন। নির্ভরযোগ্য প্ল্যাটফরম ছাড়া অন্য কোথাও চাকরি না খোঁজাই ভালো।
কাজ কী, বেতন কেমন?
এ ধরনের চাকরির বেশির ভাগ কাজই সাধারণত তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর। তাই তথ্য-প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে দক্ষতা থাকতে হবে। সাধারণত কম্পিউটার প্রগ্রামিং, কোডিং, ডেভেলপিং, কাস্টমার সার্ভিস, ডাটা এন্ট্রি, ট্রান্সক্রিপশন, কনটেন্ট রাইটার, গ্রাফিকস ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি কাজই সংখ্যায় বেশি। বিদেশি প্রতিষ্ঠানের চাকরি হওয়ায় ইংরেজিতে কথোপকথন ও যোগাযোগ দক্ষতা থাকা জরুরি। প্রয়োজনে জুম বা গুগল মিটে লাইভ মিটিংয়ে অংশ নিতে হতে পারে। সংশ্লিষ্ট কাজে পারদর্শিতার পাশাপাশি সৃজনশীলতা, দ্রুত কাজের দক্ষতা, কাজের সঙ্গে সময়ের সমন্বয় ও যোগাযোগ দক্ষতা একজন প্রার্থীকে রিমোট জব পেতে এগিয়ে রাখবে। এখানে একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে—যে দেশের প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করবেন, সেখানকার সময়ের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। হতে পারে সেখানে যখন কাজের সময়, তখন বাংলাদেশে মধ্যরাত। পরিশ্রমী হওয়ায় ইউরোপ-আমেরিকার চাকরির বাজারে দিন দিন চাহিদা বাড়ছে বাংলাদেশি কর্মীদের। বেতন বা পারিশ্রমিক কাজ ও প্রতিষ্ঠানের ধরনভেদে ভিন্ন ভিন্ন। তবে অর্থের অঙ্কটা দেশি চাকরির বেতনের তুলনায় অনেক বেশি। দেশে বসে অনেকেই রিমোট চাকরি করে এক হাজার থেকে পাঁচ হাজার ডলার (বাংলাদেশি টাকায় এক লাখ পাঁচ হাজার থেকে পাঁচ লাখ ১৫ হাজার) আয় করছেন। এর কমবেশি ডলারেও কাজ করছেন কেউ কেউ।