নিজস্ব প্রতিবেদক: বিচার বিভাগের স্বাধীনতার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণে স্বতন্ত্র প্রসিকিউশন সার্ভিস গঠন এবং সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় স্থাপনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহীর গ্রান্ড রিভার ভিউ হোটেলে ‘জুডিসিয়াল ইন্ডিপেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি) যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করতে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রসঙ্গ এবং তার ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অগ্রগতির বিবরণ তুলে ধরেন। বিশেষ করে তিনি সম্প্রতি উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে জারি করা অধ্যাদেশের কথা তুলে ধরেন। এর পাশাপাশি তিনি একটি স্বাধীন প্রসিকিউশন সার্ভিস চালু এবং সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেন।
প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, দুর্বল তদন্ত ও অপেশাদার প্রসিকিউশন বাংলাদেশে ন্যায়বিচারের অন্যতম অন্তরায়। তিনি প্রসিকিউটরদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেন।
এছাড়া, সৈয়দ রেফাত আহমেদ সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘পৃথক সচিবালয় বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রস্তাবিত সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় বিচারিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ ও অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বিচারকদের বদলি ও পদোন্নতিতে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘ইতোমধ্যে সরকারের কাছে পৃথক সচিবালয় গঠনের জন্য একটি বিশদ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে এটি বিবেচনাধীন।’ বাংলাদেশে ন্যায়বিচার নিশ্চিতের লক্ষ্যে একটি আধুনিক বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে নিজের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন প্রধান বিচারপতি।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম। সেমিনারে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত বিভিন্ন পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা অংশ নেন।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে ইউএনডিপির বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বতন্ত্রীকরণে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ একটি যুগোপযোগী পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেন। বিচার বিভাগের আধুনিকায়নে উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে পাশে থাকারও আশ্বাস দেন তিনি।
এছাড়া, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম প্রধান বিচারপতি ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কারের রূপরেখা বাস্তবায়নে আইনি সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দেন।