ঢাকা ০৫:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

সুপেয় পানির অভাব

  • আপডেট সময় : ০১:৪৬:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ অগাস্ট ২০২২
  • ৮৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও ওয়াসার লাইন থেকে ময়লাযুক্ত পানি আসছে। নগরবাসীর অভিযোগ, দূষিত পানি ব্যবহার করে নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। সরজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাসিন্দাদের কাছ থেকে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে ওয়াসা বলছে, পানির লাইনে কোনো সমস্যা নেই। তাহলে সমস্যা কোথায়? কেন পানি পাচ্ছে না মানুষ? কেন ময়লাযুক্ত পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে?
রাজধানীর আফতাবনগর, বাড্ডা, ভাষানটেক, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন এলাকায় সরজমিন গিয়ে জানা গেছে, এলাকাগুলোতে কয়েক সপ্তাহ ধরে সুপেয় পানির তীব্র সংকট রয়েছে। ওয়াসার গাড়ি থেকে পানি ক্রয় করতে চাইলেও চাহিদা মতো পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।
এদিকে ওয়াসা সূত্র বলছে, রাজধানীতে ওয়াসার পানির লাইনে কোনো ধরনের সমস্যা নেই। কিছু এলাকায় গভীর নলকূপ নষ্ট হয়ে আছে। কিছু জায়গায় নতুন গভীর নলকূপ বসানো হচ্ছে, যার ফলে কিছু কিছু এলাকায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও লোডশেডিংয়ের কারণে পাম্প থেকে পানি উত্তোলন ব্যাহত হচ্ছে। ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়াকে পানির ‘কিছুটা সংকটের’ জন্য দায়ী করছে ওয়াসা। তবে খুব তাড়াতাড়ি এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তারা। ওয়াসার ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার দৈনিক প্রায় ২৭০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করার সক্ষমতা রয়েছে। এর মধ্যে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে পানি উৎপাদন করা হয় ৯১ কোটি লিটার, আর বাকি ১৭৯ কোটি লিটার গভীর নলকূপ থেকে উৎপাদন করা হয়। রাজধানীবাসীর পানির চাহিদা দৈনিক ২১০ থেকে ২৪০ কোটি লিটার।
আফতাবনগরের বাসিন্দা আফাজ উদ্দিন একটি সংবাদসংস্থাকে বলেন, ‘আমাদের এলাকায় পানির তীব্র সংকট। এ ও বি ব্লকের বাসাগুলোতে বেশি সমস্যা হচ্ছে। একদিন ঠিকমতো পানি আসলে পরের দিন আর কোনো খবর থাকে না। সেইসঙ্গে ময়লা পানিও আসে লাইনে। সুপেয় পানি ছাড়া নিত্যদিনের কাজকর্ম করতে পারছি না। ওয়াসা একটু ভালো করে নজর দিলে এ সমস্যা আর হবে না।’
মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, ‘প্রায় সময়ই ওয়াসার পানির কোনো খবর থাকে না। এর মধ্যে আবার ময়লা পানি আসে।’
ওয়াসার গাড়ি থেকে পানি কিনতে চাইলেও কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, ‘ওয়াসা আমাদেরকে কোনো পাত্তাই দিচ্ছে না।’
বাড্ডার বাসিন্দা কাজল দাস বলেন, ‘গরম এলেই আমাদের এলাকায় বেশি সমস্যা হয়। আর এবছর তো লোডশেডিংয়ের দোষ প্রতিনিয়ত দিয়ে যাচ্ছে ওয়াসা। এর একটা সমাধান চাই আমরা। ওয়াসার কাছে হাতজোড় করে বলতে চাই, এই সমস্যার সমাধান দ্রুত হোক।’
মোহাম্মদপুর এলাকার ঢাকা ওয়াসার মডস জোন-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ মোস্তাকিম হোসেন বলেন, ‘একটু সমস্যা হচ্ছে কিছু টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে। সত্য কথা বলতে, লোডশেডিংয়ের কারণে একটু বেশি সমস্যা হচ্ছে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন রাস্তায় কার্পেটিং করে আমাদের পাইপলাইনের সুইচ আটকে দিয়েছে। তবে আমরা খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
ওয়াসা মডস জোন-৮ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ বলেন, ‘সব সমস্যার সমাধান হবে। আমরা চাই ২৪ ঘণ্টা মানুষ পানি ব্যবহার করুক।’ তিনি বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের কারণে একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে এসব এলাকায় কড়া নজর আছে আমাদের। আশা করি পানির যে সংকট ভুগছে মানুষ, কিছুদিন পর আর এই সংকট থাকবে না।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সুপেয় পানির অভাব

আপডেট সময় : ০১:৪৬:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও ওয়াসার লাইন থেকে ময়লাযুক্ত পানি আসছে। নগরবাসীর অভিযোগ, দূষিত পানি ব্যবহার করে নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। সরজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বাসিন্দাদের কাছ থেকে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে ওয়াসা বলছে, পানির লাইনে কোনো সমস্যা নেই। তাহলে সমস্যা কোথায়? কেন পানি পাচ্ছে না মানুষ? কেন ময়লাযুক্ত পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে?
রাজধানীর আফতাবনগর, বাড্ডা, ভাষানটেক, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেটসহ বিভিন্ন এলাকায় সরজমিন গিয়ে জানা গেছে, এলাকাগুলোতে কয়েক সপ্তাহ ধরে সুপেয় পানির তীব্র সংকট রয়েছে। ওয়াসার গাড়ি থেকে পানি ক্রয় করতে চাইলেও চাহিদা মতো পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তাদের।
এদিকে ওয়াসা সূত্র বলছে, রাজধানীতে ওয়াসার পানির লাইনে কোনো ধরনের সমস্যা নেই। কিছু এলাকায় গভীর নলকূপ নষ্ট হয়ে আছে। কিছু জায়গায় নতুন গভীর নলকূপ বসানো হচ্ছে, যার ফলে কিছু কিছু এলাকায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়াও লোডশেডিংয়ের কারণে পাম্প থেকে পানি উত্তোলন ব্যাহত হচ্ছে। ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়াকে পানির ‘কিছুটা সংকটের’ জন্য দায়ী করছে ওয়াসা। তবে খুব তাড়াতাড়ি এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তারা। ওয়াসার ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার দৈনিক প্রায় ২৭০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করার সক্ষমতা রয়েছে। এর মধ্যে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে পানি উৎপাদন করা হয় ৯১ কোটি লিটার, আর বাকি ১৭৯ কোটি লিটার গভীর নলকূপ থেকে উৎপাদন করা হয়। রাজধানীবাসীর পানির চাহিদা দৈনিক ২১০ থেকে ২৪০ কোটি লিটার।
আফতাবনগরের বাসিন্দা আফাজ উদ্দিন একটি সংবাদসংস্থাকে বলেন, ‘আমাদের এলাকায় পানির তীব্র সংকট। এ ও বি ব্লকের বাসাগুলোতে বেশি সমস্যা হচ্ছে। একদিন ঠিকমতো পানি আসলে পরের দিন আর কোনো খবর থাকে না। সেইসঙ্গে ময়লা পানিও আসে লাইনে। সুপেয় পানি ছাড়া নিত্যদিনের কাজকর্ম করতে পারছি না। ওয়াসা একটু ভালো করে নজর দিলে এ সমস্যা আর হবে না।’
মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা কামাল হোসেন বলেন, ‘প্রায় সময়ই ওয়াসার পানির কোনো খবর থাকে না। এর মধ্যে আবার ময়লা পানি আসে।’
ওয়াসার গাড়ি থেকে পানি কিনতে চাইলেও কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, ‘ওয়াসা আমাদেরকে কোনো পাত্তাই দিচ্ছে না।’
বাড্ডার বাসিন্দা কাজল দাস বলেন, ‘গরম এলেই আমাদের এলাকায় বেশি সমস্যা হয়। আর এবছর তো লোডশেডিংয়ের দোষ প্রতিনিয়ত দিয়ে যাচ্ছে ওয়াসা। এর একটা সমাধান চাই আমরা। ওয়াসার কাছে হাতজোড় করে বলতে চাই, এই সমস্যার সমাধান দ্রুত হোক।’
মোহাম্মদপুর এলাকার ঢাকা ওয়াসার মডস জোন-৩ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ মোস্তাকিম হোসেন বলেন, ‘একটু সমস্যা হচ্ছে কিছু টেকনিক্যাল সমস্যার কারণে। সত্য কথা বলতে, লোডশেডিংয়ের কারণে একটু বেশি সমস্যা হচ্ছে। এর মধ্যে সিটি করপোরেশন রাস্তায় কার্পেটিং করে আমাদের পাইপলাইনের সুইচ আটকে দিয়েছে। তবে আমরা খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
ওয়াসা মডস জোন-৮ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ বলেন, ‘সব সমস্যার সমাধান হবে। আমরা চাই ২৪ ঘণ্টা মানুষ পানি ব্যবহার করুক।’ তিনি বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের কারণে একটু সমস্যা হচ্ছে। তবে এসব এলাকায় কড়া নজর আছে আমাদের। আশা করি পানির যে সংকট ভুগছে মানুষ, কিছুদিন পর আর এই সংকট থাকবে না।’