আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ চীন সাগরে উদ্ভূত সুপার টাইফুন রাগাসার আঘাতে তাইওয়ানে এ পর্যন্ত ১৪ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো অন্তত ১৪ জন এবং এখনও নিখোঁজ আছেন অন্তত ৩০ জন।
তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলীয় জেলা হুয়ালিয়েনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা লি কুয়ান-তিন এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন এ তথ্য। মঙ্গলবার হুয়ালিয়েনের উপকূলেই আছড়ে পড়েছে রাগাসা। ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে এ জেলাতেই বেশি।
এএফপিকে লি কুয়ান-তিং বলেন, আমাদের ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী বাহিনীর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঝড়ের আঘাতে এ পর্যন্ত হুয়ালিয়েনে ১৪ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১৮ জন। এছাড়া এখনও কমপক্ষে ৩০ জন নিখোঁজ অবস্থায় আছেন। তাদের সন্ধান পেতে উদ্ধাকারী বাহিনীর তৎপরতা চলছে।
পরে এক বিবৃতিতে নিখোঁজের হালনাগাদ সংখ্যা ১২৪ জন বলে উল্লেখ করেছে ফায়ার সার্ভিস। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, প্রবল বর্ষণের জেরে হুলিয়েনের একটি হ্রদের সীমানা ভেঙে পুরো শহর পানিতে ভেসে গেছে। শহরের অনেক এলাকা দো’তলা সমান উচ্চতার পানিতে ডুবে গেছে বলেও জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাগাসার প্রভাবে তাইওয়ান এবং দক্ষিণ চীন সাগরের তীরবর্তী অপর স্বায়ত্বশাসিত দ্বীপ ভূখণ্ড হংকংয়ের ওপর দিয়ে ব্যাপক মাত্রার ঝেড়ো হওয়া বয়ে গেছে, ভারী বর্ষণও হয়েছে। সোমবার থেকেই হংকংয়ে ১০ নম্বর সতর্কতা জারি করা হয়েছিল।
ব্যাপক শক্তি ও বিধ্বংসী ক্ষমতার জন্য দক্ষিণ চীন সাগরের একটি নিম্নচাপ থেকে উদ্ভূত টাইফুন রাগাসাকে সুপার টাইফুন বলে উল্লেখ করেছেন ফিলিপাইন, চীন এবং তাইওয়ানের বিজ্ঞানীরা। সোমবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩ টার দিকে যখন ফিলিপাইনের উপকূলে আছড়ে পড়েছিল রাগাসা, সে সময় সেখানে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ২৩০ কিলোমিটার।
ফিলিপাইনের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কাগায়ানের বাতানিজ দ্বীপের উপকূলে আছড়ে পড়েছিল রাগাসা। এই দ্বীপটি থেকে তাইওয়ানের পূর্বাঞ্চলীয় উপকূলের দূরত্ব ৭১০ কিলোমিটার।
রাগাসার প্রভাবে দক্ষিণ চীন সাগরের তীরবর্তী ফিলিপাইন, তাইওয়ান, হংকং এবং চীনের গুয়াংডং প্রদেশে রোববার থেকেই শুরু হয়েছে ঝড়ো হওয়া এবং ভারী বর্ষণ। হংকংয়ে একজন মা এবং তার ৫ বছরের ছেলে সাগরের জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গেছে। আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুসারে, মঙ্গলবার হংকং উপকূলে জলোচ্ছ্বাসের সময় ঢেউয়ের সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১৩ ফুট।
তবে ফিলিপাইন ও তাইওয়ান থেকে এখনো কোনো নিহত বা নিখোঁজের সংবাদ আসেনি।
সাগরে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড়কে যুক্তরাষ্ট্রে বলা হয় হারিকেন। যখন কোনো হারিকেন বিপুল এলাকাজুড়ে গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি সাধনের মতো শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তখন সেটিকে বলা হয় ক্যাটাগরি ৫ হারিকেন।
সুপার টাইফুন রাগাসাকে ক্যাটাগরি ৫ হারিকেনের সঙ্গে তুলনা করেছেন ফিলিপাইন ও চীনের আবহাওয়াবিদরা।
সূত্র : রয়টার্স, এএফপি
এসি/আপ্র/২৪/০৯/২০২৫















