ঢাকা ১২:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০২ মার্চ ২০২৫

সুজন মার্কিন অনুদান পেয়েছে প্রশ্নে বদিউল আলম বললেন ‘অপতথ্য’

  • আপডেট সময় : ০৮:৪৭:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

শনিবার ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার- ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে মার্কিন সরকার যে অনুদান দিয়েছে, সেই অর্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা উড়িয়ে দিয়েছেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

শনিবার (১ মার্চ) ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ অবস্থান তুলে ধরেন।

কেউ নাম শোনেনি- এমন এক প্রতিষ্ঠান, যেটা চালায় মাত্র দুজন, সেই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করার প্রকল্প বাস্তবায়নে ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার পেয়ে ‘ধনী বনে গেছে’ বলে সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেন।

আর তারপর বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হয় বাংলাদেশে। কেউ কেউ সোশাল মিডিয়ায় দাবি করেন, ওই অর্থ পেয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নাগরিক সংগঠনটির সম্পাদক বদিউল আলম বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। সুজন কোনো নিবন্ধিত সংগঠন নয়। সুজন কোনো বিদেশি সাহায্য নিতে পারে না; সংগঠনটি পরিচালিত হয় বিভিন্ন ব্যক্তিদের সহায়তায়। এটা শুধু ফেইক নিউজ নয়, ডিপ ফেইক নিউজ; এর মধ্যে সামান্যতম সত্যতা নাই। স্বৈরাচারের দোসররা বিতর্কিত করার জন্য এসব অপতথ্য ছড়াচ্ছে।

মার্কিন তহবিলে বাংলাদেশের রাজনীতির জমিন শক্তিশালী করার যে প্রকল্প নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিতর্ক উসকে দিয়েছেন, সেটি বাস্তবায়ন করেছে তার দেশেরই একটি এনজিও-ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল।

‘স্ট্রেংদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ’ (এসপিএল) শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৭ সাল থেকে বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি। ২৯ মিলিয়ন (২ কোটি ৯০ লাখ) ডলারের এ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

এসপিএল প্রকল্প নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল। মাত্র ‘দুইজনের’ এনজিওর যে কথা ট্রাম্প তার বক্তব্যে বলেছেন, তার বাস্তবতা পাওয়া যায়নি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গত সোমবার এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ওই অনুদানের বিষয়ে আরো তথ্য পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তারা।

ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

শেখ হাসিনাকে ‘স্বৈরাচারী’ করেছে প্রক্রিয়া-পদ্ধতিও: রাষ্ট্রব্যবস্থার বিভিন্ন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়াও শেখ হাসিনাকে ‘স্বৈরাচারী’ করে তুলেছে বলে মন্তব্য করেছেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

শনিবার মানিক মিয়া এভিনিউয়ের মানববন্ধনে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তো আর আকাশ থেকে পড়েননি। একটা পদ্ধতি, প্রক্রিয়া তাকে স্বৈরাচারী করে তুলেছে। এই প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির পরিবর্তন দরকার; আবার যারা ক্ষমতায় যাবে, তারা যেন হাসিনার মত দানবে পরিণত না হয়।

‘অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং সংস্কারের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ দাবিতে’ এ মানববন্ধন আয়োজন করে সুজন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে বদিউল আলম বলেন, আন্দোলনটা ছিল একটা স্বৈরাচারী ব্যবস্থা অবসান ঘটানোর জন্য, যা শেখ হাসিনাকে দানবে পরিণত করেছিল।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাষ্ট্র সংস্কারে ১১টা কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।

এর মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয় সুজন সম্পাদককে। তিনি এরই মধ্যে তার সুপারিশমালা প্রধান উপদেষ্টার হাতে তুলে দিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, সংস্কারের বিষয়ে কমিটির উপলব্ধি হলো, নির্বাচন যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হয়, তাহলে নির্বাচন অঙ্গন পরিচ্ছন্ন করতে হবে। নির্বাচন অঙ্গনে যেসব অপরিচ্ছন্ন ব্যক্তি অতীতে নির্বাচিত হয়েছে, নির্বাচিত হয়ে পবিত্র অঙ্গন দখল করেছে, তাদেরকে সেখান থেকে বিতাড়িত করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক অন্যায় হয় আঁতাতের ভিত্তিতে; অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়। এজন্য রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলে পরিবর্তন আনতে হবে; টাকার খেলা বন্ধ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে হবে, নির্বাচনকালীন সময়ে একটা নিরপেক্ষ সরকার থাকতে হবে। এগুলো যদি তৈরি করতে না পারি, তাহলে এই ব্যবস্থা আবার স্বৈরাচার তৈরি করবে।

মানববন্ধনে সুজনের নির্বাহী সদস্য মুসবাহ আলীম, জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেন, ঢাকা জেলার সহসভাপতি রাশিদা আক্তার শেলী, সাধারণ সম্পাদক মহিবুল হক, ঢাকা মহানগরের সহসভাপতি ক্যামেলিয়া চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জুবায়েরুল হক নাহিদ বক্তব্য রাখেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সুজন মার্কিন অনুদান পেয়েছে প্রশ্নে বদিউল আলম বললেন ‘অপতথ্য’

আপডেট সময় : ০৮:৪৭:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করতে মার্কিন সরকার যে অনুদান দিয়েছে, সেই অর্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা উড়িয়ে দিয়েছেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

শনিবার (১ মার্চ) ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ অবস্থান তুলে ধরেন।

কেউ নাম শোনেনি- এমন এক প্রতিষ্ঠান, যেটা চালায় মাত্র দুজন, সেই প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি শক্তিশালী করার প্রকল্প বাস্তবায়নে ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার পেয়ে ‘ধনী বনে গেছে’ বলে সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মন্তব্য করেন।

আর তারপর বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হয় বাংলাদেশে। কেউ কেউ সোশাল মিডিয়ায় দাবি করেন, ওই অর্থ পেয়েছে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে নাগরিক সংগঠনটির সম্পাদক বদিউল আলম বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। সুজন কোনো নিবন্ধিত সংগঠন নয়। সুজন কোনো বিদেশি সাহায্য নিতে পারে না; সংগঠনটি পরিচালিত হয় বিভিন্ন ব্যক্তিদের সহায়তায়। এটা শুধু ফেইক নিউজ নয়, ডিপ ফেইক নিউজ; এর মধ্যে সামান্যতম সত্যতা নাই। স্বৈরাচারের দোসররা বিতর্কিত করার জন্য এসব অপতথ্য ছড়াচ্ছে।

মার্কিন তহবিলে বাংলাদেশের রাজনীতির জমিন শক্তিশালী করার যে প্রকল্প নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিতর্ক উসকে দিয়েছেন, সেটি বাস্তবায়ন করেছে তার দেশেরই একটি এনজিও-ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল।

‘স্ট্রেংদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ ইন বাংলাদেশ’ (এসপিএল) শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৭ সাল থেকে বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি। ২৯ মিলিয়ন (২ কোটি ৯০ লাখ) ডলারের এ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

এসপিএল প্রকল্প নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল। মাত্র ‘দুইজনের’ এনজিওর যে কথা ট্রাম্প তার বক্তব্যে বলেছেন, তার বাস্তবতা পাওয়া যায়নি। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গত সোমবার এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ওই অনুদানের বিষয়ে আরো তথ্য পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তারা।

ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে শনিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

শেখ হাসিনাকে ‘স্বৈরাচারী’ করেছে প্রক্রিয়া-পদ্ধতিও: রাষ্ট্রব্যবস্থার বিভিন্ন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়াও শেখ হাসিনাকে ‘স্বৈরাচারী’ করে তুলেছে বলে মন্তব্য করেছেন সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার।

শনিবার মানিক মিয়া এভিনিউয়ের মানববন্ধনে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা তো আর আকাশ থেকে পড়েননি। একটা পদ্ধতি, প্রক্রিয়া তাকে স্বৈরাচারী করে তুলেছে। এই প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির পরিবর্তন দরকার; আবার যারা ক্ষমতায় যাবে, তারা যেন হাসিনার মত দানবে পরিণত না হয়।

‘অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং সংস্কারের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ দাবিতে’ এ মানববন্ধন আয়োজন করে সুজন।

জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে বদিউল আলম বলেন, আন্দোলনটা ছিল একটা স্বৈরাচারী ব্যবস্থা অবসান ঘটানোর জন্য, যা শেখ হাসিনাকে দানবে পরিণত করেছিল।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রাষ্ট্র সংস্কারে ১১টা কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।

এর মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয় সুজন সম্পাদককে। তিনি এরই মধ্যে তার সুপারিশমালা প্রধান উপদেষ্টার হাতে তুলে দিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, সংস্কারের বিষয়ে কমিটির উপলব্ধি হলো, নির্বাচন যদি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হয়, তাহলে নির্বাচন অঙ্গন পরিচ্ছন্ন করতে হবে। নির্বাচন অঙ্গনে যেসব অপরিচ্ছন্ন ব্যক্তি অতীতে নির্বাচিত হয়েছে, নির্বাচিত হয়ে পবিত্র অঙ্গন দখল করেছে, তাদেরকে সেখান থেকে বিতাড়িত করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে অনেক অন্যায় হয় আঁতাতের ভিত্তিতে; অনেক ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায়। এজন্য রাজনীতি ও রাজনৈতিক দলে পরিবর্তন আনতে হবে; টাকার খেলা বন্ধ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে হবে, নির্বাচনকালীন সময়ে একটা নিরপেক্ষ সরকার থাকতে হবে। এগুলো যদি তৈরি করতে না পারি, তাহলে এই ব্যবস্থা আবার স্বৈরাচার তৈরি করবে।

মানববন্ধনে সুজনের নির্বাহী সদস্য মুসবাহ আলীম, জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেন, ঢাকা জেলার সহসভাপতি রাশিদা আক্তার শেলী, সাধারণ সম্পাদক মহিবুল হক, ঢাকা মহানগরের সহসভাপতি ক্যামেলিয়া চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জুবায়েরুল হক নাহিদ বক্তব্য রাখেন।