ক্রীড়া ডেস্ক : ৯০ মিনিটেই নির্ধারণ হয়ে যেতে পারত ম্যাচের ভাগ্য। কিন্তু দুই দলের তিনটি প্রচেষ্টা লাগল পোস্ট আর ক্রসবারে। অতিরিক্ত সময়ে ১০ জনে পরিণত হলো সুইডেন। সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগাল ইউক্রেন। শেষ মুহূর্তে গোল করে নাটকীয় জয়ে প্রথমবারের মতো উঠল ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার-ফাইনালে। গ্লাসগোর হ্যাম্পডেন পার্কে মঙ্গলবার রাতে শেষ ষোলোর ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছে ইউক্রেন। অলেকসান্দার জিনচেঙ্কোর গোলে পিছিয়ে পড়ার পর সুইডেনকে ম্যাচে ফেরান এমিল ফর্সবার্গ। টাইব্রেকারের পথে ছিল ম্যাচ। অতিরিক্ত সময়ের যোগ করা সময়ে ব্যবধান গড়ে দেন আর্তেম। বদলি হিসেবে তিনি মাঠে নেমেছিলেন অতিরিক্ত সময়ে। সুইডেন নকআউটে এসেছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে। তৃতীয় হওয়া সেরা চার দলের একটি হয়ে ইউক্রেন। সেই দলই পেল দারুণ এক জয়। ইউক্রেন দলে নেই তারকা কোনো খেলোয়াড়। তবে ডাগআউটে তারকা আছেন একজন-কোচ আন্দ্রে শেভচেঙ্কো। খেলোয়াড়ী জীবনে এসি মিলানের হয়ে জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ২০০৪ সালে ব্যালন ডি’অর জয়ী তিনি। তার হাত ধরেই ইউরোর পথচলায় আরেক ধাপ এগিয়ে গেল ইউক্রেন। শুরুতে তাদের চেপে ধরেছিল সুইডেন। প্রথম ভালো সুযোগটি পায় যদিও ইউক্রেন। একাদশ মিনিটে কাছ থেকে রোমান ইয়ারেমচুকের নেওয়া নিচু শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক রবিন ওলসেন।
অষ্টাদশ মিনিটে সুযোগ পান ফর্সবার্গ। সতীর্থের ক্রস ডি-বক্সে লাফিয়ে ঠিকমতো হেড করতে পারেননি তিনি। পরের মিনিটে ডি-বক্সে আলেক্সান্দার ইসাকের শট লক্ষ্যে থাকেনি। খেলার ধারার বিপরীতে ২৭তম মিনিটে এগিয়ে যায় ইউক্রেন। ডান দিক থেকে আন্দ্রে ইয়ারমোলেঙ্কোর ক্রসে প্রথম স্পর্শে বাঁ পায়ের জোরালো ভলিতে জাল খুঁজে নেন অরক্ষিত জিনচেঙ্কো। ওলসেন বলে হাত ছোঁয়ালেও আটকাতে পারেননি। বিরতির আগে সমতায় ফেরে সুইডেন। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে ফর্সবার্গের বাঁ পায়ের বুলেট গতির শট প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায়। টানা তিন ম্যাচে জালের দেখা পেলেন ফর্সবার্গ। গ্রুপের শেষ রাউন্ডে পোল্যান্ডের বিপক্ষে দলের ৩-২ ব্যবধানের জয়ে করেছিলেন জোড়া গোল। আসরে তার মোট গোল হলো ৪টি। ৫৫তম মিনিটে দুর্ভাগ্যের ফেরে গোল পায়নি ইউক্রেন। আট গজ দূর থেকে সিদরচুকের শট পোস্টে লাগে। পরের মিনিটে ডি-বক্সে ঢুকে ফর্সবার্গের নেওয়া শটও পোস্টে বাধা পায়। ৬৬তম মিনিটে সুইডিশ মিডফিল্ডার দেজান কুলুসেভস্কির শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক। একটু পর দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ফর্সবার্গের জোরালো শট ক্রসবারে লাগে। নির্ধারিত সময়ের শেষ দিকে ভালো একটি সুযোগ পান কুলুসেভস্কি। ডি-বক্সে তার শট পা বাড়িয়ে ঠেকিয়ে দেন এক ডিফেন্ডার। ৯৯তম মিনিটে বড় ধাক্কাটা খায় সুইডেন। প্রতিপক্ষের আর্তেম বেসেদিনকে মারাত্মক ফাউল করে শুরুতে হলুদ কার্ড দেখেন মার্কাস দানিয়েলসন। পরে ভিএআরের সাহায্যে তাকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। ওই সুযোগ কাজে লাগায় ইউক্রেন। ১২০ মিনিটের পর তিন মিনিট যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে আসে জয়সূচক গোল। বাঁ দিক থেকে সতীর্থের ক্রসে হেডে ঠিকানা খুঁজে নেন আর্তেম। ইতিহাস গড়ার উৎসবে মাতে ইউক্রেন। শেষ আটে আগামী শনিবার ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে তারা।
সুইডেনের বিপক্ষে নাটকীয় জয়ে শেষ আটে ইউক্রেন
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ