ঢাকা ০৯:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

সীমান্ত দিয়ে আসছে সিনথেটিক ড্রাগস, বাহক রোহিঙ্গা

  • আপডেট সময় : ০২:৪৪:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ জুলাই ২০২২
  • ৬৯ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘সীমান্তে মাদক চোরাচালান, অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। রোহিঙ্গা এলাকায় বেড়েছে মাদকদ্রব্য উদ্ধারের সংখ্যাও। সিনথেটিক ড্রাগস আসছে সীমান্ত দিয়ে। যেখানে বাহক হিসেবে কাজ করছে রোহিঙ্গারা।’
গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর হোটেল রেডিসনে আয়োজিত এক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন (সিনিয়র সচিব) একথা বলেন।
‘রোহিঙ্গা ও নার্কো টেরোরিজম’ শীর্ষক ওই সেমিনারের আয়োজন করে ডিপ্লোমেটস পাবলিকেশন। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সেমিনারে পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে অস্ত্র চোরাচালান। চোরাচালানের কেন্দ্রে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। মানব পাচারের ঘটনা ঘটছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো থেকে। পুলিশ ছাড়াও সেখানে নিয়োজিত আনসার, বিজিবি, এপিবিএন ও সেনাবাহিনী অপরাধ দমন এবং অপরাধীদের ধরতে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
ভাসানচরে স্থানান্তরের ফলে রোহিঙ্গা মানব পাচারের ঘটনা কমবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রায় ৫০ শতাংশই শিশু। যাদের অনেকে সন্ত্রাসবাদ, মাদক চোরাচালানে জড়াচ্ছে। মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে ম্যাকানিজমে ঘাটতি আছে। আসিয়ানকে কার্যকর করা যেতে পারে। আসিয়ানে রোহিঙ্গা সমস্যা তুলে ধরতে হবে। মিয়ানমারই রোহিঙ্গা ক্রাইসিস তৈরি করেছে উল্লেখ করে সচিব বলেন, তাদের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ছিল এর সমাধান করা। আমরা প্রত্যাশা করব মিয়ানমার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে রোহিঙ্গা নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে। সেমিনারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বন্ধু রাষ্ট্রের দ্রুত সহযোগিতা দরকার। না হলে মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশ সংকটে পড়বে। এরইমধ্যে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মাদক, অস্ত্র চোরাচালানসহ সীমান্তে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মাদক বলতে ইয়াবা বাংলাদেশে তৈরি হয় না। কিন্তু এর চোরাচালান হচ্ছে বাংলাদেশে। ইয়াবা তৈরি হচ্ছে মিয়ানমারে। অথচ এর ভিকটিম বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের বাহক ও চোরাচালানকারী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মাদকের হাব হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে রোহিঙ্গা এলাকাকে। কক্সবাজার এলাকায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার পর ২০১৭ সাল থেকে কীভাবে ধারাবাহিকভাবে কী পরিমাণ মাদকের চোরাচালান বেড়েছে তার পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মন্ত্রী।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে নানা আঙ্গিকে বাড়তি চাপ ও ঝুঁকিতে পড়েছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে মাদক চোরাচালান, মানব পাচার, সীমান্ত নিরাপত্তা উল্লেখযোগ্য। মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের ভার বহন করতে গিয়ে এই চাপ নিতে হচ্ছে। কোনও ধরনের মাদক উৎপাদন না করেও বাংলাদেশই এর ভুক্তভোগী। তাই শিগগিরই রোহিঙ্গা সমস্যার সংকট নিরসনে বন্ধু প্রতীম রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা চান তিনি।
সেমিনারে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন, সৌদি রাষ্ট্রদূত, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখওয়াত হোসেন, আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের সাবেক প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লে. জেনারেল (অব.) মাহফুজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসর ড. ইমতিয়াজ আহমেদ সেমিনারে কিনোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সীমান্ত দিয়ে আসছে সিনথেটিক ড্রাগস, বাহক রোহিঙ্গা

আপডেট সময় : ০২:৪৪:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ জুলাই ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘সীমান্তে মাদক চোরাচালান, অপরাধ প্রবণতা বেড়েছে। রোহিঙ্গা এলাকায় বেড়েছে মাদকদ্রব্য উদ্ধারের সংখ্যাও। সিনথেটিক ড্রাগস আসছে সীমান্ত দিয়ে। যেখানে বাহক হিসেবে কাজ করছে রোহিঙ্গারা।’
গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর হোটেল রেডিসনে আয়োজিত এক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন (সিনিয়র সচিব) একথা বলেন।
‘রোহিঙ্গা ও নার্কো টেরোরিজম’ শীর্ষক ওই সেমিনারের আয়োজন করে ডিপ্লোমেটস পাবলিকেশন। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সেমিনারে পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে অস্ত্র চোরাচালান। চোরাচালানের কেন্দ্রে রোহিঙ্গা ক্যাম্প। মানব পাচারের ঘটনা ঘটছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো থেকে। পুলিশ ছাড়াও সেখানে নিয়োজিত আনসার, বিজিবি, এপিবিএন ও সেনাবাহিনী অপরাধ দমন এবং অপরাধীদের ধরতে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
ভাসানচরে স্থানান্তরের ফলে রোহিঙ্গা মানব পাচারের ঘটনা কমবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রায় ৫০ শতাংশই শিশু। যাদের অনেকে সন্ত্রাসবাদ, মাদক চোরাচালানে জড়াচ্ছে। মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে ম্যাকানিজমে ঘাটতি আছে। আসিয়ানকে কার্যকর করা যেতে পারে। আসিয়ানে রোহিঙ্গা সমস্যা তুলে ধরতে হবে। মিয়ানমারই রোহিঙ্গা ক্রাইসিস তৈরি করেছে উল্লেখ করে সচিব বলেন, তাদের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি ছিল এর সমাধান করা। আমরা প্রত্যাশা করব মিয়ানমার রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে রোহিঙ্গা নাগরিকদের ফিরিয়ে নেবে। সেমিনারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বন্ধু রাষ্ট্রের দ্রুত সহযোগিতা দরকার। না হলে মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া বাংলাদেশ সংকটে পড়বে। এরইমধ্যে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে মাদক, অস্ত্র চোরাচালানসহ সীমান্তে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েছে। আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মাদক বলতে ইয়াবা বাংলাদেশে তৈরি হয় না। কিন্তু এর চোরাচালান হচ্ছে বাংলাদেশে। ইয়াবা তৈরি হচ্ছে মিয়ানমারে। অথচ এর ভিকটিম বাংলাদেশ। এক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের বাহক ও চোরাচালানকারী হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। মাদকের হাব হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে রোহিঙ্গা এলাকাকে। কক্সবাজার এলাকায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার পর ২০১৭ সাল থেকে কীভাবে ধারাবাহিকভাবে কী পরিমাণ মাদকের চোরাচালান বেড়েছে তার পরিসংখ্যান তুলে ধরেন মন্ত্রী।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে নানা আঙ্গিকে বাড়তি চাপ ও ঝুঁকিতে পড়েছে বাংলাদেশ। এরমধ্যে মাদক চোরাচালান, মানব পাচার, সীমান্ত নিরাপত্তা উল্লেখযোগ্য। মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গাদের ভার বহন করতে গিয়ে এই চাপ নিতে হচ্ছে। কোনও ধরনের মাদক উৎপাদন না করেও বাংলাদেশই এর ভুক্তভোগী। তাই শিগগিরই রোহিঙ্গা সমস্যার সংকট নিরসনে বন্ধু প্রতীম রাষ্ট্রগুলোর সহযোগিতা চান তিনি।
সেমিনারে ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট ডিকসন, সৌদি রাষ্ট্রদূত, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখওয়াত হোসেন, আর্মড ফোর্সেস ডিভিশনের সাবেক প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লে. জেনারেল (অব.) মাহফুজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রফেসর ড. ইমতিয়াজ আহমেদ সেমিনারে কিনোট স্পিকার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।