ঢাকা ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫

সিনোফার্মের আরও ৬ কোটি ডোজ টিকা আসছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০২:৩৩:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ অগাস্ট ২০২১
  • ১০০ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : চীন থেকে সিনোফার্মের আরও ৬ কোটি ডোজ টিকা আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর মধ্যে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে পর্যায়ক্রমে ২ কোটি করে ৪ কোটি ডোজ টিকা আসবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে বাকি টিকাও দেশে পৌঁছাবে।
গতকাল শনিবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ফিল্ড হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানিয়েছেন। এসময় তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দেশব্যাপী টিকা কার্যক্রম শুরু করতে আমরা সক্ষম হয়েছি এবং ৫০ লাখের মতো মানুষকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। টিকার ব্যবস্থা প্রতিনিয়ত বাড়ানোর চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। বিশ্বজুড়েই টিকার সংকট রয়েছে দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এমন কোনও দেশ নাই যেখানে আমরা টিকার সন্ধান না করেছি। প্রতিটি জায়গায় আমাদের দূতাবাস কাজ করছে। চীন থেকে ৩ কোটি ডোজ টিকা আনার জন্য আমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলাম, এখন আরও ৬ কোটি টিকা আনার জন্য আমরা চুক্তিবদ্ধ হচ্ছি। অর্থাৎ আগে যে দেড় কোটি কনসার্ন চুক্তি ছিল তার সঙ্গে আরও ৬ কোটি মিলিয়ে মোট সাড়ে ৭ কোটি ডোজ টিকা চীন থেকে আনার চেষ্টা করছি আমরা। আর তাতে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আমরা চুক্তিবদ্ধ হয়ে যাবো। জাহিদ মালেক বলেন, আমরা আশা করি, যেভাবে চীন বলেছে- নভেম্বরের মধ্যে প্রতি মাসে সমহারে আমরা টিকাগুলো পাবো। তারা যদি তাদের কমিটমেন্ট ঠিক রাখে, তাহলে অক্টোবরে ২ কোটি ও নভেম্বরে ২ কোটি টিকা পাবো। পাশাপাশি কোভ্যাক্স সুবিধার আওতার টিকা সরবরাহও বজায় থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, টিকা আমরা গ্রামে নিয়ে যেতে চাচ্ছি। শহরের লোকেরা টিকা মোটামুটি পেয়েছে। গ্রামের বয়স্ক লোকেরা সেভাবে টিকা গ্রহণ করেনি। তাদের মধ্যে অনীহাও ছিল। আমরা সেই জন্য টিকা তাদের কাছে নিয়ে যাচ্ছি। ঢাকা শহরে যে ৭৫ শতাংশ রোগী আছে তাদের বেশির ভাগই গ্রাম থেকে আসা এবং ৯০ শতাংশই টিকাবিহীন, তারা টিকা নেননি বলেও উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
আইসিইউ সংকট দূর করতে পারিনি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে, কিন্তু হাসপাতালের বেড খালি নেই। এটি দূর করা যায়নি। এছাড়া রয়েছে আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) সংকট। তবে তিনি এও বলেন, সময় এসেছে করোনাভাইরাসের রোগী কমানোর।
গতকাল শনিবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিল্ড হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ঢাকায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ছয় হাজার শয্যা রয়েছে। তার মধ্যে এখন এক হাজার শয্যাও খালি নেই। এই পর্যায়ে আমরা আছি। তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার আইসিইউ রয়েছে। তারপরও আমরা আইসিইউ সংকট দূর করতে পারিনি। করোনা রোগীদের পাশাপাশি নন-কোভিড রোগীই ৮০ শতাংশ। তাদের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হচ্ছে আবার ডেঙ্গু এসেছে ঘাড়ে ওঠেছে- বলেন জাহিদ মালেক। শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ফিল্ড হাসপাতালের বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন রোগী এবং মুমূর্ষু রোগী এখানে আসবেন। আমরা তাদের চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করবো। ২০ দিন আগে আমরা কনভেনশন সেন্টারটি দেখতে এসেছিলাম জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের বিভিন্ন হাসপাতালের শয্যাগুলো আস্তে আস্তে শেষ হয়ে আসছে, আমরা অনুভব করছিলাম। যে কারণে এই কনভেনশন সেন্টারকে ফিল্ড হাসপাতালে রূপান্তরিত করার ব্যবস্থা নিলাম। তিনি বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশনে আমরা ২৪ দিনে একটি হাসপাতাল করেছিলাম। সেটিও এক হাজার শয্যার ছিল। এই হাসপাতালটিও এক হাজার শয্যায় উন্নীত করা হবে। ২০ দিনে আমরা ৪শ’ শয্যা প্রস্তুত করেছি। এর মধ্যে আইসিইউ শয্যা আছে ৪০টি। বাকি শয্যাগুলো সেন্ট্রাল অক্সিজেনের আওতায় রয়েছে। এখানে দশ হাজার লিটার লিকুইড অক্সিজেন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্যাঙ্ক বসানো হয়েছে। টেস্ট করার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে ছোট ল্যাবের।
করোনায় নারীদের আক্রান্তের হার বেড়ে যাওয়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। জানান, ‘আগে মহিলাদের মৃত্যু-আক্রান্ত ছিল প্রায় ২০-২৫ ভাগ। এটা এখন প্রায় ৪৫ শতাংশ। এই আক্রান্ত-মৃত্যুর সংখ্যা কেন বাড়ছে, এটা খেয়াল করতে হবে।’
রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি হাসপাতালের ওপর কেমন চাপ- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘গত দুই মাসের তুলনায় রোগী বেড়েছে সাত গুণ। আমরা টিকার কাজ করছি, ডাক্তাররাও কাজ করছে। এছাড়া ফিল্ড হাসপাতাল, বেড আমরা বাড়িয়ে চলছি। কিন্তু এটারও তো একটা সীমা আছে। কতটুকু আর করা যেতে পারে?’ তিনি বলেন, ভাইয়েরা হাসপাতালের বেড বাড়ানো নয়, এখন সময় এসেছে করোনা রোগী কমানোর।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সিনোফার্মের আরও ৬ কোটি ডোজ টিকা আসছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০২:৩৩:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ অগাস্ট ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : চীন থেকে সিনোফার্মের আরও ৬ কোটি ডোজ টিকা আসছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এর মধ্যে অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে পর্যায়ক্রমে ২ কোটি করে ৪ কোটি ডোজ টিকা আসবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে বাকি টিকাও দেশে পৌঁছাবে।
গতকাল শনিবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ফিল্ড হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানিয়েছেন। এসময় তিনি বলেন, ইতোমধ্যে দেশব্যাপী টিকা কার্যক্রম শুরু করতে আমরা সক্ষম হয়েছি এবং ৫০ লাখের মতো মানুষকে টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে। টিকার ব্যবস্থা প্রতিনিয়ত বাড়ানোর চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। বিশ্বজুড়েই টিকার সংকট রয়েছে দাবি করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এমন কোনও দেশ নাই যেখানে আমরা টিকার সন্ধান না করেছি। প্রতিটি জায়গায় আমাদের দূতাবাস কাজ করছে। চীন থেকে ৩ কোটি ডোজ টিকা আনার জন্য আমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলাম, এখন আরও ৬ কোটি টিকা আনার জন্য আমরা চুক্তিবদ্ধ হচ্ছি। অর্থাৎ আগে যে দেড় কোটি কনসার্ন চুক্তি ছিল তার সঙ্গে আরও ৬ কোটি মিলিয়ে মোট সাড়ে ৭ কোটি ডোজ টিকা চীন থেকে আনার চেষ্টা করছি আমরা। আর তাতে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আমরা চুক্তিবদ্ধ হয়ে যাবো। জাহিদ মালেক বলেন, আমরা আশা করি, যেভাবে চীন বলেছে- নভেম্বরের মধ্যে প্রতি মাসে সমহারে আমরা টিকাগুলো পাবো। তারা যদি তাদের কমিটমেন্ট ঠিক রাখে, তাহলে অক্টোবরে ২ কোটি ও নভেম্বরে ২ কোটি টিকা পাবো। পাশাপাশি কোভ্যাক্স সুবিধার আওতার টিকা সরবরাহও বজায় থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, টিকা আমরা গ্রামে নিয়ে যেতে চাচ্ছি। শহরের লোকেরা টিকা মোটামুটি পেয়েছে। গ্রামের বয়স্ক লোকেরা সেভাবে টিকা গ্রহণ করেনি। তাদের মধ্যে অনীহাও ছিল। আমরা সেই জন্য টিকা তাদের কাছে নিয়ে যাচ্ছি। ঢাকা শহরে যে ৭৫ শতাংশ রোগী আছে তাদের বেশির ভাগই গ্রাম থেকে আসা এবং ৯০ শতাংশই টিকাবিহীন, তারা টিকা নেননি বলেও উল্লেখ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
আইসিইউ সংকট দূর করতে পারিনি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে, কিন্তু হাসপাতালের বেড খালি নেই। এটি দূর করা যায়নি। এছাড়া রয়েছে আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) সংকট। তবে তিনি এও বলেন, সময় এসেছে করোনাভাইরাসের রোগী কমানোর।
গতকাল শনিবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ফিল্ড হাসপাতালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ঢাকায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ছয় হাজার শয্যা রয়েছে। তার মধ্যে এখন এক হাজার শয্যাও খালি নেই। এই পর্যায়ে আমরা আছি। তিনি বলেন, সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার আইসিইউ রয়েছে। তারপরও আমরা আইসিইউ সংকট দূর করতে পারিনি। করোনা রোগীদের পাশাপাশি নন-কোভিড রোগীই ৮০ শতাংশ। তাদের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হচ্ছে আবার ডেঙ্গু এসেছে ঘাড়ে ওঠেছে- বলেন জাহিদ মালেক। শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ফিল্ড হাসপাতালের বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন রোগী এবং মুমূর্ষু রোগী এখানে আসবেন। আমরা তাদের চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করবো। ২০ দিন আগে আমরা কনভেনশন সেন্টারটি দেখতে এসেছিলাম জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের বিভিন্ন হাসপাতালের শয্যাগুলো আস্তে আস্তে শেষ হয়ে আসছে, আমরা অনুভব করছিলাম। যে কারণে এই কনভেনশন সেন্টারকে ফিল্ড হাসপাতালে রূপান্তরিত করার ব্যবস্থা নিলাম। তিনি বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশনে আমরা ২৪ দিনে একটি হাসপাতাল করেছিলাম। সেটিও এক হাজার শয্যার ছিল। এই হাসপাতালটিও এক হাজার শয্যায় উন্নীত করা হবে। ২০ দিনে আমরা ৪শ’ শয্যা প্রস্তুত করেছি। এর মধ্যে আইসিইউ শয্যা আছে ৪০টি। বাকি শয্যাগুলো সেন্ট্রাল অক্সিজেনের আওতায় রয়েছে। এখানে দশ হাজার লিটার লিকুইড অক্সিজেন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্যাঙ্ক বসানো হয়েছে। টেস্ট করার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে ছোট ল্যাবের।
করোনায় নারীদের আক্রান্তের হার বেড়ে যাওয়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। জানান, ‘আগে মহিলাদের মৃত্যু-আক্রান্ত ছিল প্রায় ২০-২৫ ভাগ। এটা এখন প্রায় ৪৫ শতাংশ। এই আক্রান্ত-মৃত্যুর সংখ্যা কেন বাড়ছে, এটা খেয়াল করতে হবে।’
রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি হাসপাতালের ওপর কেমন চাপ- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘গত দুই মাসের তুলনায় রোগী বেড়েছে সাত গুণ। আমরা টিকার কাজ করছি, ডাক্তাররাও কাজ করছে। এছাড়া ফিল্ড হাসপাতাল, বেড আমরা বাড়িয়ে চলছি। কিন্তু এটারও তো একটা সীমা আছে। কতটুকু আর করা যেতে পারে?’ তিনি বলেন, ভাইয়েরা হাসপাতালের বেড বাড়ানো নয়, এখন সময় এসেছে করোনা রোগী কমানোর।