বিনোদন ডেস্ক: কলকাতায় চলছে চলচ্চিত্র উৎসব—সোমবার দুপুরে সেখানে হাজির হয়েছেন বলিউড অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ী। প্রথমবারের মতো কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে অতিথি হয়ে গেলেন ‘গ্যাংস অফ ওয়াসেপুর’ খ্যাত অভিনেতা। উৎসবের মঞ্চে পা দিয়েই মনোজ বলেন, ‘বর্তমানে দুটি চলচ্চিত্র উৎসব সেরার সেরা হিসাবে উঠে আসছে; একটি কলকাতা অপরটি কেরল। এ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসতে পারিনি। কিন্তু বলেছিলাম এক বার আসব—আজকে এখানে এসে খুব ভালো লাগছে।’ এদিকে সিনেমায় সেন্সরশিপ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন মনোজ বাজপেয়ী। বর্তমানে ভারতীয় সিনেমায় যৌনতা ও হিংস্রতা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। সবচেয়ে বেশি সমালোচনা হচ্ছে রণবীরের ‘অ্যানিম্যাল’ ছবি নিয়ে। এবার সেই আগুনে ঘি ঢাললেন মনোজ। মনোজের কথায়, নির্মাতা কী ধরনের ছবি তৈরি করবেন, এটা তার একান্ত ব্যক্তিগত পছন্দ। আমরা সেটার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারি না। এটা তো গণতন্ত্র। তাই সব ধরনের ছবির সহাবস্থান প্রয়োজন। তার মতে, একটা সময় ওটিটিতে যথেচ্ছ যৌনতা ও হিংস্রতা দেখানো হতো। এখন কিন্তু নির্মাতারাও বিষয়টার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন। তাই অপ্রয়োজনীয় যৌনতা ও হিংস্রতা তারা কিন্তু আর দর্শককে আর দেখান না। মুহূর্তে হিন্দি ছবিতে ‘হিংস্রতা’ নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে। রবিবার উৎসবে এসে বলিউডের আর এক পরিচালক অনুরাগ কাশ্যপ জানিয়েছিলেন, যে কোনো একটি ঘটনা দিয়ে কিছু বিচার করা উচিত নয়। মনোজ জানান, তিনি হিন্দি ছবির তুলনায় দেশের আঞ্চলিক ভাষার ছবি অনেক বেশি দেখেন। বললেন, দুঃখের বিষয় এই মুহূর্তে হিন্দিতে খুব ভালো ছবি তৈরি হচ্ছে না। আরও বেশি বাস্তবনির্ভর ছবি তৈরি হওয়া প্রয়োজন।
মনোজকেও একটা সময়ে লড়াই করে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের জায়গা করে নিতে হয়েছিল। অভিনেতার আক্ষেপ, সত্তরের দশকে হিন্দি ছবির নায়করা অনেক বেশি মাটির কাছাকাছি ছিল। কথা প্রসঙ্গেই অমিতাভ বচ্চনের উদাহরণ দিলেন অভিনেতা। মনোজ বললেন, নায়কদের তখন খুব সাধারণ চেহারা ছিল, অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য। সেই নায়ক এখন হারিয়ে গেছে। এখন তো সবাই গ্রিক গড! মনোজ অভিনীত ও দেবাশিস মখিজা পরিচালিত সাম্প্রতিক ছবি ‘জোরাম’ ছবিটির কথাও উঠে আসে মনোজের বক্তব্যে। চলতি বছরে ‘গুলমোহর’, ‘সিরফ এক বন্দা কফি হ্যায়’-এর মতো ছবিতে মনোজের অভিনয় দর্শকদের চমকে দিয়েছে। কিন্তু এক জন অভিনেতা হিসাবে তিনি কিন্তু দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণ নিয়ে চিন্তিত নন। তার কথায়, ‘‘তার থেকেও বেশি আমি নিজের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছি কি না, সেই চিন্তাই আমাকে বেশি ভাবায়। আমি কি নতুন কিছু পর্দায় হাজির করতে পারছি, সেটাই মনের মধ্যে চলতে থাকে।