ঢাকা ০২:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

সিনহা হত্যায় সাক্ষীদের দেওয়া তথ্য মিথ্যা: রানা দাশ গুপ্ত

  • আপডেট সময় : ১১:২৬:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • ৭৩ বার পড়া হয়েছে

কক্সবাজার প্রতিনিধি : সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন ষষ্ঠ সাক্ষী শহীদুল ইসলাম। এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দফা ও চতুর্থ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২০, ২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর (সোম, মঙ্গল ও বুধবার) দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল বুধবার দুপুর ২টার দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত এ আদেশ দেন। আদালত থেকে বেরিয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী বায়তুল নূর জামে মসজিদের ইমাম শহীদুল ইসলামের জবানবন্দি গ্রহণের মধ্য দিয়ে আজকের ও দ্বিতীয় দফার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী ২০, ২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ স্থানীয় মসজিদের ইমাম শহীদুল ইসলাম মসজিদের ছাদ থেকে দেখা পুরো ঘটনা আদালতের কাছে তুলে ধরেছেন। এতে আমরা সন্তুষ্ট।’
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, ‘আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত বলেন, ‘সাক্ষী মসজিদের দোতলা থেকে ঘটনা দেখেছেন বলে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে তার অবস্থান ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে ছিল এবং মাঝখানে অনেক গাছ রয়েছে। তাই সাক্ষী ঘটনাস্থল থেকে কিছু দেখেছেন বলে মনে হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটিতে ওই সাক্ষী যে তথ্য দিয়েছেন দিয়েছিলেন, এর চেয়ে অতিরঞ্জিত করে আদালতকে তথ্য দিচ্ছেন। আমরা আদালতকে বলেছি, সাক্ষীদের দেওয়া তথ্য মিথ্যা। মূলত, মাদকপাচারকারী চক্র ও অপরাধীদের প্ররোচনায় প্রভাবিত হয়ে সাক্ষীরা এসব মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন।’ গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় সে সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র‌্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা করে। এরপর মেজর সিনহা হত্যার ছয় দিন পর লিয়াকত আলী ও ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারী আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। গত ২৪ জুন মামলার অন্য পলাতক আসামি টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আসামিদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্ত শেষে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন র‌্যাব ১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। গত ২৭ জুন আদালত ১৫ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এতে সাক্ষী করা হয় ৮৩ জনকে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সিনহা হত্যায় সাক্ষীদের দেওয়া তথ্য মিথ্যা: রানা দাশ গুপ্ত

আপডেট সময় : ১১:২৬:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

কক্সবাজার প্রতিনিধি : সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন ষষ্ঠ সাক্ষী শহীদুল ইসলাম। এর মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় দফা ও চতুর্থ দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২০, ২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর (সোম, মঙ্গল ও বুধবার) দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল বুধবার দুপুর ২টার দিকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালত এ আদেশ দেন। আদালত থেকে বেরিয়ে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, ‘ঘটনাস্থলের নিকটবর্তী বায়তুল নূর জামে মসজিদের ইমাম শহীদুল ইসলামের জবানবন্দি গ্রহণের মধ্য দিয়ে আজকের ও দ্বিতীয় দফার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামী ২০, ২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আদালত।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ স্থানীয় মসজিদের ইমাম শহীদুল ইসলাম মসজিদের ছাদ থেকে দেখা পুরো ঘটনা আদালতের কাছে তুলে ধরেছেন। এতে আমরা সন্তুষ্ট।’
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, ‘আজ সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।’
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত বলেন, ‘সাক্ষী মসজিদের দোতলা থেকে ঘটনা দেখেছেন বলে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তবে তার অবস্থান ঘটনাস্থল থেকে অনেক দূরে ছিল এবং মাঝখানে অনেক গাছ রয়েছে। তাই সাক্ষী ঘটনাস্থল থেকে কিছু দেখেছেন বলে মনে হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটিতে ওই সাক্ষী যে তথ্য দিয়েছেন দিয়েছিলেন, এর চেয়ে অতিরঞ্জিত করে আদালতকে তথ্য দিচ্ছেন। আমরা আদালতকে বলেছি, সাক্ষীদের দেওয়া তথ্য মিথ্যা। মূলত, মাদকপাচারকারী চক্র ও অপরাধীদের প্ররোচনায় প্রভাবিত হয়ে সাক্ষীরা এসব মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন।’ গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় সে সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র‌্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা করে। এরপর মেজর সিনহা হত্যার ছয় দিন পর লিয়াকত আলী ও ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় টেকনাফ থানায় পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারী আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। গত ২৪ জুন মামলার অন্য পলাতক আসামি টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আসামিদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্ত শেষে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন র‌্যাব ১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। গত ২৭ জুন আদালত ১৫ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এতে সাক্ষী করা হয় ৮৩ জনকে।