ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডি ফুসফুসের একটি দীর্ঘমেয়াদি রোগ। এ রোগে শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়; যা প্রতিনিয়ত অবনতির দিকে যায়। এটি পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য নয়। তবে চিকিৎসায় নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
বিশ্বে ৩৮ কোটি ৪০ লাখ মানুষ সিওপিডিতে ভুগছে। আক্রান্তের ৯০ শতাংশই নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের। প্রাণঘাতী এ রোগে বছরে মৃত্যু হচ্ছে ৩০ লাখ মানুষের। যা বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর তৃতীয় কারণ।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বাংলাদেশে সিওপিডি আক্রান্তের হার অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। আক্রান্তের সংখ্যা ৬৫ লাখ। সম্প্রতি ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট টিবি হাসপাতাল আয়োজিত এক বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এই তথ্য জানানো হয়।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বক্ষরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এ.কেএম ফাহমিদ নোমান।
বিশ্বব্যাপী ফুসফুস সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়াতে ফোরাম অব ইন্টারন্যাশনাল রেসপিরেটরি সোসাইটি দিনটিকে ফুসফুস দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে।
সেমিনারে বিশেষজ্ঞ মতামত দেন জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. গোলাম সারোয়ার বিদ্যুৎ, ডা. মো. জিয়াউল করিম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সিওপিডির কারণে হৃদপিণ্ড থেকে শুরু করে সব অঙ্গের কার্যক্ষমতা কমে যায়। রোগীর শারীরিক, মানসিক এবং আর্থিক ক্ষতি তার পরিবারকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করে।
সিওপিডি থেকে বাঁচতে ব্যক্তি থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এ রোগ প্রতিরোধে অংশগ্রহণের বিকল্প নেই।
পালমোনলজিস্ট ডা. কাজী মোহাম্মদ আরিফুলের সঞ্চালনায় সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার। তিনি জানান, ধূমপান ও বায়ুদূষণ সিওপিডির বড় কারণ। পরিবেশে ধোঁয়া ও রাসায়নিকের উপস্থিতিতে সিওপিডির ঝুঁকি বাড়ে। কলকারখানায় কাজ করে বা দিনের বেশি সময় রাস্তায় থাকতে হয় এমন মানুষরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।
ডা. আয়শা আক্তার বলেন, দীর্ঘমেয়াদি শ্বাসকষ্ট, কাশি, প্রায়ই জ্বর আসা, শারীরিক দুর্বলতা, গলায় দীর্ঘদিন ধরে অস্বস্তি অনুভব করা, দীর্ঘমেয়াদি মাথাব্যথা মূলত এ রোগের লক্ষণ। প্রাথমিক অবস্থায় যদি চিকিৎসা শুরু করা যায় তবে রোগটি নিয়ন্ত্রণে থাকে। তিনি বলেন, যেহেতু রোগটি পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য নয়। তাই প্রতিরোধে সচেতন হওয়াই শ্রেয়। সবাইকে ধূমপানে নিরুৎসাহিত করতে হবে। কলকারখানায় কাজের ক্ষেত্রে সুরক্ষার ব্যবস্থা রাখা ও পরিবেশদূষণ কমিয়ে আনতে হবে।
আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ