ঢাকা ০১:০৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫

সালিশের পর বিয়ে: সেই চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের আদেশ স্থগিত

  • আপডেট সময় : ১২:৫৩:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ অগাস্ট ২০২১
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, আবেদনকারীর বিষয়ে (শাহিন) অভিযোগ অনুসন্ধান বা তদন্তের কাজ চলতে বাধা থাকবে না। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
শাহিন হাওলাদারের করা রিটের শুনানি নিয়ে গতকাল রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রোববার শাহিন হাওলাদারের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী বিবেক চন্দ্র। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। ক্ষমতার অপব্যবহার করে সালিশের সুযোগ নিয়ে এক কিশোরীকে (১৪ বছর ২ মাস ১৪ দিন) বিয়ে করায় গত ২৯ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে শাহিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এর বৈধতা নিয়ে শাহিন হাওলাদার হাইকোর্টে ভার্চুয়াল রিট করেন। এর শুনানি নিয়ে ৭ জুলাই বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ ৩০ দিন বা নিয়মিত আদালত খোলা পর্যন্ত যেটা আগে হয়, সে সময় পর্যন্ত সাময়িক বরখাস্তের আদেশে স্থগিতাদেশ দেন। এ অবস্থায় নিয়মিত রিট দায়ের করেন শাহিন হাওলাদার, যা আজ শুনানির জন্য ছিল। আজ শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার বলেন, ‘হাইকোর্টের একক ভার্চুয়াল বেঞ্চ প্রথমে ৩০ দিন বা নিয়মিত আদালত খোলা পর্যন্ত শাহিন হাওলাদারের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে আদেশ দেন। এর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নিয়মিত রিট দায়ের করা হয়। হাইকোর্ট রুল দিয়ে শাহিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। ফলে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে যথারীতি দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারবেন। সাময়িক ওই বরখাস্তের আদেশ কেন বেআইনি হবে না, রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। শাহিন হাওলাদারের ক্ষেত্রে অনুসন্ধান ও তদন্ত চলতে বাধা থাকবে না বলেছেন আদালত।’
২৫ জুন ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন ৬০ বছর বয়সী বিবাহিত চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। জানা গেছে, প্রেমের টানে বাড়িছাড়া দুই কিশোর-কিশোরীর বিষয়ে ডাকা সালিশে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার নিজেই ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন। বিয়ের একদিন পর ওই কিশোরী শাহিন হাওলাদারকে তালাক দেয়। এর আগে ভার্চুয়াল আদালতে দাখিল করা রিটে বলা হয়, সাময়িক বরখাস্তের দিনই (২৯ জুন) শাহিন হাওলাদারকে কেন চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না, তার কারণ দর্শাতে বলা হয়। এজন্য ১০ দিন সময় দেওয়া হয়। কারণ দর্শানোর জবাব দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার আগেই ওই দিন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়, যা আইন সমর্থন করে না। মেয়েটির বয়স ১৪ বছর বলা হয়েছে। অথচ ২০১১ সালের একটি জন্মসনদ অনুযায়ী মেয়েটির বয়স ১৮ বছর তিন মাস। ওই ঘটনায় গত ২৮ জুন মো. শাহিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। বিষয়টি জানিয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ৬ নম্বর কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার সালিশ করতে গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৪ বছর ২ মাস ১৪ দিন) কিশোরীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় তিনি স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪ (৪) (ঘ) ধারার অপরাধ সংঘটিত করায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সালিশের পর বিয়ে: সেই চেয়ারম্যানকে বরখাস্তের আদেশ স্থগিত

আপডেট সময় : ১২:৫৩:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ অগাস্ট ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক : পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, আবেদনকারীর বিষয়ে (শাহিন) অভিযোগ অনুসন্ধান বা তদন্তের কাজ চলতে বাধা থাকবে না। আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
শাহিন হাওলাদারের করা রিটের শুনানি নিয়ে গতকাল রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে রোববার শাহিন হাওলাদারের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী বিবেক চন্দ্র। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। ক্ষমতার অপব্যবহার করে সালিশের সুযোগ নিয়ে এক কিশোরীকে (১৪ বছর ২ মাস ১৪ দিন) বিয়ে করায় গত ২৯ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে শাহিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এর বৈধতা নিয়ে শাহিন হাওলাদার হাইকোর্টে ভার্চুয়াল রিট করেন। এর শুনানি নিয়ে ৭ জুলাই বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের একক ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ ৩০ দিন বা নিয়মিত আদালত খোলা পর্যন্ত যেটা আগে হয়, সে সময় পর্যন্ত সাময়িক বরখাস্তের আদেশে স্থগিতাদেশ দেন। এ অবস্থায় নিয়মিত রিট দায়ের করেন শাহিন হাওলাদার, যা আজ শুনানির জন্য ছিল। আজ শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার বলেন, ‘হাইকোর্টের একক ভার্চুয়াল বেঞ্চ প্রথমে ৩০ দিন বা নিয়মিত আদালত খোলা পর্যন্ত শাহিন হাওলাদারের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করে আদেশ দেন। এর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নিয়মিত রিট দায়ের করা হয়। হাইকোর্ট রুল দিয়ে শাহিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ তিন মাসের জন্য স্থগিত করেছেন। ফলে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে যথারীতি দায়িত্ব চালিয়ে যেতে পারবেন। সাময়িক ওই বরখাস্তের আদেশ কেন বেআইনি হবে না, রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে। শাহিন হাওলাদারের ক্ষেত্রে অনুসন্ধান ও তদন্ত চলতে বাধা থাকবে না বলেছেন আদালত।’
২৫ জুন ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন ৬০ বছর বয়সী বিবাহিত চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। জানা গেছে, প্রেমের টানে বাড়িছাড়া দুই কিশোর-কিশোরীর বিষয়ে ডাকা সালিশে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার নিজেই ওই কিশোরীকে বিয়ে করেন। বিয়ের একদিন পর ওই কিশোরী শাহিন হাওলাদারকে তালাক দেয়। এর আগে ভার্চুয়াল আদালতে দাখিল করা রিটে বলা হয়, সাময়িক বরখাস্তের দিনই (২৯ জুন) শাহিন হাওলাদারকে কেন চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না, তার কারণ দর্শাতে বলা হয়। এজন্য ১০ দিন সময় দেওয়া হয়। কারণ দর্শানোর জবাব দেওয়ার সময় শেষ হওয়ার আগেই ওই দিন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়, যা আইন সমর্থন করে না। মেয়েটির বয়স ১৪ বছর বলা হয়েছে। অথচ ২০১১ সালের একটি জন্মসনদ অনুযায়ী মেয়েটির বয়স ১৮ বছর তিন মাস। ওই ঘটনায় গত ২৮ জুন মো. শাহিন হাওলাদারকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। বিষয়টি জানিয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ৬ নম্বর কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার সালিশ করতে গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৪ বছর ২ মাস ১৪ দিন) কিশোরীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় তিনি স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪ (৪) (ঘ) ধারার অপরাধ সংঘটিত করায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।