ঢাকা ১২:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

সালাউদ্দিনের মন্তব্যে ফুঁসছে সাংবাদিক সমাজ, পদত্যাগ দাবি

  • আপডেট সময় : ১২:৫৮:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩
  • ৭৪ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন সাংবাদিক ও তাদের পরিবার নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন। সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শুধু ক্রীড়া সাংবাদিক নন, পুরো সাংবাদিক সমাজই ফুঁসে উঠেছে। দেশে সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)। সেই সংগঠন থেকে সালাউদ্দিনের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি তার পদত্যাগও দাবি করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার নির্বাহী কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকরা ব্রিফিং কাভারের জন্য বাফুফে ভবনের বোর্ড রুমে প্রবেশ করছিলেন। ব্রিফিং কাভারের প্রস্তুতির জন্য সাংবাদিকরা বোর্ডের ওপর মোবাইল, টিভির বুম রাখেন। ব্রিফিং শুরুর আগে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ফেডারেশনের অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনেকটা তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বলছিলেন,‘ জার্নালিস্টরা এখানে ঢুকতে গেলে, আমার এখানে তাদের বাপ-মায়ের ছবি দিতে হবে। আরেকটা কন্ডিশন হলো, তারা বাপের ফটো পাঠাবে জুতা পরা, ঠিক আছে এটা ম্যান্ডাটরি, বাপের জুতা পরা ছবি থাকতে হবে।’
ব্রিফিং শেষে মন্তব্য তোলার সময় সালাউদ্দিনের এই আপত্তিকর মন্তব্য শুনতে পান সাংবাদিকরা। এর প্রতিবাদে সামাজিক মাধ্যমে অনেক সংবাদকর্মীই ক্ষোভ ঝেরেছেন। বিষয়টি ক্রীড়াঙ্গন পেরিয়ে পুরো সাংবাদিক অঙ্গন ও নাগরিক জীবনেও স্পর্শ করেছে। অনেকেই সালাউদ্দিনের এই মন্তব্যে তার মানসিক সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক সেবিকা রাণী স্বাক্ষরিত পত্রে সালাউদ্দিনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপনের সঙ্গে তার পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে। অন্যথায় সারা দেশের ফুটবল সংগঠকদের তাকে অপসারণে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হবে। এই বিবৃতিতে সালাউদ্দিনের সময়ে ফুটবল র‌্যাংকিংয়ে ক্রমান্বয়ে অবনতির সঙ্গে প্রশাসনিক ব্যর্থতার চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে। দেশে ও দেশের বাইরে ফুটবলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার পর বাফুফে সভাপতি পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে বলে মনে করে বিএফইউজে।
সামাজিকমাধ্যমে অনেক সংবাদকর্মীই ক্ষোভ ঝেরেছেন। বিষয়টি ক্রীড়াঙ্গন পেরিয়ে পুরো সাংবাদিক অঙ্গন ও নাগরিক জীবনেও স্পর্শ করেছে। অনেকেই সালাউদ্দিনের এই মন্তব্যে তার মানসিক সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
এদিকে, দেশের ক্রীড়া সাংবাদিকতার পথিকৃৎ মুহাম্মদ কামরুজ্জামান। পাঁচ দশকের বেশি সময় সাংবাদিকতা ও ক্রীড়া লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। কাজী সালাউদ্দিনের এই মন্তব্য অত্যন্ত ব্যথিত করেছে এই বর্ষীয়ান ক্রীড়াবিদ ও সাংবাদিককে,‘সালাউদ্দিনের মন্তব্যটি অত্যন্ত আপত্তিকর ও নিন্দনীয়। আমি খুব কষ্ট পেয়েছি সালাউদ্দিনের মন্তব্যটি পড়ে।’ এই বর্ষীয়ান সাংবাদিক আরো মনে করেন,‘ কাজী সালাউদ্দিন দীর্ঘদিন ফেডারেশনে রয়েছে। তার আর এখানে তেমন কিছু দেয়ার নেই। চলে যাওয়াই শ্রেয়’।
এর আগে সালাউদ্দিন মঙ্গলবারই এক ভিডিও বার্তায় তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ ও ক্ষমা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি দেখছি যে আমি সাংবাদিকদের আহত করার জন্য একটা কথা বলেছি। আসলে আমি সাংবাদিকদের কষ্ট দেওয়ার জন্য কিছু বলিনি। আমি নাবিলের (সহ-সভাপতি) সঙ্গে একটা জিনিস নিয়ে জোক করছিলাম। সেটা যে কেউ টেপ (রেকর্ড) করছিল, আমি জানি না। এ কথায় আমি যদি কাউকে দুঃখ দিয়ে থাকি আমি খুব দুঃখিত, ক্ষমা চাই। আমি কাউকে উদ্দেশ্য করে বলিনি। আমাদের ব্যক্তিগত মজা চলছিল। ওখানে যে টেপ (রেকর্ড) আছে, সেটাও আমি জানি না। কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে, অবশ্যই এটার জন্য আমি খুব দুঃখিত।’

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সালাউদ্দিনের মন্তব্যে ফুঁসছে সাংবাদিক সমাজ, পদত্যাগ দাবি

আপডেট সময় : ১২:৫৮:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মে ২০২৩

ক্রীড়া প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন সাংবাদিক ও তাদের পরিবার নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন। সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শুধু ক্রীড়া সাংবাদিক নন, পুরো সাংবাদিক সমাজই ফুঁসে উঠেছে। দেশে সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)। সেই সংগঠন থেকে সালাউদ্দিনের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি তার পদত্যাগও দাবি করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার নির্বাহী কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকরা ব্রিফিং কাভারের জন্য বাফুফে ভবনের বোর্ড রুমে প্রবেশ করছিলেন। ব্রিফিং কাভারের প্রস্তুতির জন্য সাংবাদিকরা বোর্ডের ওপর মোবাইল, টিভির বুম রাখেন। ব্রিফিং শুরুর আগে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন ফেডারেশনের অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনেকটা তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বলছিলেন,‘ জার্নালিস্টরা এখানে ঢুকতে গেলে, আমার এখানে তাদের বাপ-মায়ের ছবি দিতে হবে। আরেকটা কন্ডিশন হলো, তারা বাপের ফটো পাঠাবে জুতা পরা, ঠিক আছে এটা ম্যান্ডাটরি, বাপের জুতা পরা ছবি থাকতে হবে।’
ব্রিফিং শেষে মন্তব্য তোলার সময় সালাউদ্দিনের এই আপত্তিকর মন্তব্য শুনতে পান সাংবাদিকরা। এর প্রতিবাদে সামাজিক মাধ্যমে অনেক সংবাদকর্মীই ক্ষোভ ঝেরেছেন। বিষয়টি ক্রীড়াঙ্গন পেরিয়ে পুরো সাংবাদিক অঙ্গন ও নাগরিক জীবনেও স্পর্শ করেছে। অনেকেই সালাউদ্দিনের এই মন্তব্যে তার মানসিক সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক সেবিকা রাণী স্বাক্ষরিত পত্রে সালাউদ্দিনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপনের সঙ্গে তার পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে। অন্যথায় সারা দেশের ফুটবল সংগঠকদের তাকে অপসারণে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানো হবে। এই বিবৃতিতে সালাউদ্দিনের সময়ে ফুটবল র‌্যাংকিংয়ে ক্রমান্বয়ে অবনতির সঙ্গে প্রশাসনিক ব্যর্থতার চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে। দেশে ও দেশের বাইরে ফুটবলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার পর বাফুফে সভাপতি পদে থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে বলে মনে করে বিএফইউজে।
সামাজিকমাধ্যমে অনেক সংবাদকর্মীই ক্ষোভ ঝেরেছেন। বিষয়টি ক্রীড়াঙ্গন পেরিয়ে পুরো সাংবাদিক অঙ্গন ও নাগরিক জীবনেও স্পর্শ করেছে। অনেকেই সালাউদ্দিনের এই মন্তব্যে তার মানসিক সুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।
এদিকে, দেশের ক্রীড়া সাংবাদিকতার পথিকৃৎ মুহাম্মদ কামরুজ্জামান। পাঁচ দশকের বেশি সময় সাংবাদিকতা ও ক্রীড়া লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। কাজী সালাউদ্দিনের এই মন্তব্য অত্যন্ত ব্যথিত করেছে এই বর্ষীয়ান ক্রীড়াবিদ ও সাংবাদিককে,‘সালাউদ্দিনের মন্তব্যটি অত্যন্ত আপত্তিকর ও নিন্দনীয়। আমি খুব কষ্ট পেয়েছি সালাউদ্দিনের মন্তব্যটি পড়ে।’ এই বর্ষীয়ান সাংবাদিক আরো মনে করেন,‘ কাজী সালাউদ্দিন দীর্ঘদিন ফেডারেশনে রয়েছে। তার আর এখানে তেমন কিছু দেয়ার নেই। চলে যাওয়াই শ্রেয়’।
এর আগে সালাউদ্দিন মঙ্গলবারই এক ভিডিও বার্তায় তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ ও ক্ষমা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি দেখছি যে আমি সাংবাদিকদের আহত করার জন্য একটা কথা বলেছি। আসলে আমি সাংবাদিকদের কষ্ট দেওয়ার জন্য কিছু বলিনি। আমি নাবিলের (সহ-সভাপতি) সঙ্গে একটা জিনিস নিয়ে জোক করছিলাম। সেটা যে কেউ টেপ (রেকর্ড) করছিল, আমি জানি না। এ কথায় আমি যদি কাউকে দুঃখ দিয়ে থাকি আমি খুব দুঃখিত, ক্ষমা চাই। আমি কাউকে উদ্দেশ্য করে বলিনি। আমাদের ব্যক্তিগত মজা চলছিল। ওখানে যে টেপ (রেকর্ড) আছে, সেটাও আমি জানি না। কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে, অবশ্যই এটার জন্য আমি খুব দুঃখিত।’