বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক: ফোনের ব্যাটারি সেভার বা লো-পাওয়ার মোড চালু রাখলে ফোনের চার্জ অনেকক্ষণ ধরে রাখা যায়- এটিই বেশির ভাগের ধারণা। কিন্তু সারাক্ষণ এ মোড চালু রাখলে ফোনের কার্যক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
স্মার্টফোন বিশেষজ্ঞরা নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলছেন, সব সময় ব্যাটারি সেভার চালু রাখা যেমন চার্জ বাঁচায়; তেমনি ফোন ব্যবহারে কিছু বিরক্তিকর বাধাও তৈরি করে। এমন কয়েকটি সমস্যার কথা তুলে ধরেছে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট মেকইউজঅব-
ফোন প্রয়োজনের তুলনায় ধীরে চলা: চার্জ বাঁচানোর জন্য ব্যাটারি সেভার মোড শুধু ব্যাকগ্রাউন্ড অ্যাপ বন্ধ করে না, ফোনের প্রসেসিং পাওয়ারও কমিয়ে দেয়। ফলে অ্যাপ খুলতে সময় লাগে, অ্যানিমেশন মসৃণ মনে হয় না, পুরো অভিজ্ঞতাটাই কিছতা ধীরগতির হয়ে পড়ে। টেক্সট দেখা বা ইন্টারনেট ব্রাউজ করার মতো সাধারণ কাজে এ সমস্যা চোখে নাও পড়তে পারে। তবে যারা একসঙ্গে অনেক অ্যাপ চালান, ভিডিওতে ভরা সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করেন বা ফোনেই ছবি এডিট করেন, তাদের জন্য এ পার্থক্যটা বেশ লক্ষণীয়।
অ্যান্ড্রয়েডের ব্যাটারি সেভার বা আইফোনের লো-পাওয়ার মোড চার্জ বাঁচাতে সাহায্য করলেও বাস্তবে এর প্রভাব সব খুব বেশি ফলপ্রসূ নয়। আধুনিক স্মার্টফোনগুলো এমনিতেই ব্যবহার বুঝে নিজে থেকেই অ্যাপের ব্যাকগ্রাউন্ড কার্যক্রম কমিয়ে শক্তি সাশ্রয় করে।
গেম খেলার সময় এ সমস্যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি বোঝা যায়। কারণ মোবাইল গেমগুলো মসৃণ ফ্রেম রেট আর দ্রুত প্রতিক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে; যা ব্যাটারি সেভার বা লো-পাওয়ার মোডে ব্যাহত হয়।
অ্যাপ চালাতে বাধা: ব্যাটারি সেভার বা লো-পাওয়ার মোড ফোনের পারফরম্যান্সই শুধু কমায় না, অনেক অ্যাপের স্বাভাবিক কাজেও বাধা তৈরি করে। কারণ অনেক অ্যাপই ব্যাকগ্রাউন্ড প্রসেসিংয়ের ওপর নির্ভর করে; যেখানে আপডেট আনাসহ ডেটা সিংক বা নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজ চলে চুপিসারে। ব্যাটারি সেভার মোড এসব ব্যাকগ্রাউন্ড কাজকে আটকে দেয়। ফলে দেখা যায়, অন্য কোনো অ্যাপে প্রবেশ করলে গান বা ভিডিও স্ট্রিমিং অ্যাপ হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। ম্যাপ বা নেভিগেশন অ্যাপ রিয়েল-টাইমে লোকেশন ঠিকমতো আপডেট করতে পারে না। ইমেইল অ্যাপ খোলা না পর্যন্ত নতুন ইমেইল আসে না।
দরকারি নোটিফিকেশন দেরিতে আসা: ব্যাটারি সেভার বা লো-পাওয়ার মোডের সবচেয়ে বড় অসুবিধাগুলোর একটি হলো. গুরুত্বপূর্ণ নোটিফিকেশন দেরিতে পৌঁছানো বা একেবারেই না আসা। মেসেজিং, ই-মেইল বা ডেলিভারি ট্র্যাকিংয়ের মতো তাৎক্ষণিক আপডেটের ওপর নির্ভরশীল অ্যাপের নোটিফিকেশন ঠিক সময়ে নাও আসতে পারে।
জেনে রাখা ভালো, ফোনের চার্জ নিয়ে দুশ্চিন্তায় সবসময় পাওয়ার সেভার চালু রাখার চেয়েও ভালো কিছু উপায় আছে ব্যাটারি বাঁচানোর। যেমন স্ক্রিনের ব্রাইটনেস কমানো, ব্যবহার না থাকা অবস্থায় ওয়াই-ফাই বা লোকেশন বন্ধ রাখা অথবা ব্যাকগ্রাউন্ডে কোন অ্যাপ চলবে, তা নিজে নিয়ন্ত্রণ করলেই অনেকটা কর্মক্ষমতা বজায় রেখে ব্যাটারি সাশ্রয় করা যায়।