ঢাকা ০২:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫

সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে আল্টিমেটাম

  • আপডেট সময় : ০৮:৫৪:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতা সাম্য হত্যার প্রতিবাদে রোববার শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম হত্যা মামলার তদন্তে গাফিলতি ও ‘মূল হত্যাকারী’ গ্রেফতারের দাবিতে ঢাকার শাহবাগ মোড় অবরোধ করে প্রায় দুই ঘণ্টা বিক্ষোভ করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া সাম্য’র হত্যার বিচার দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষক সংগঠন সাদা দল।

গতকাল রোববার (১৮ মে) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ও বিকাল ৪টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন তারা। এতে শাহবাগসহ আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিক্ষোভকারীরা শাহবাগ ছাড়লে যান চলাচল স্বাভাবিক হওয়া শুরু করে। এর আগে সেখানে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, প্রাইমএশিয়ার শিক্ষার্থী পারভেজের মতো একই কায়দায় চুরিকাঘাতে সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে।

এখনো পারভেজ হত্যাকা-ের বিচার হয়নি।

আমরা আজকের এ অবস্থান কর্মসূচি থেকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, আমাদের আর কোনো কর্মীর ওপর এরকম হামলা হলে আমরা আর বসে থাকব না। তিনি বলেন, আমরা এ অথর্ব প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করছি। আপনারা দেখেছেন, মাননীয় উপাচার্য কী রকম হৃদয় বিদারক আচরণ করেছেন।

তিনি সাম্যকে এখনো হৃদয়ে ধারণ করতে পারেননি। আমরা প্রক্টরকে একইভাবে দেখেছি। তোফাজ্জলকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তার যদি আজ বিচার হত, তাহলে এমন হত্যাকা- আর দেখতে হত না।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় প্রশাসন এখনো তাদের দায় স্বীকার আর নিরাপত্তার গাফিলতির কথা স্বীকার করছে না। তারা আজকের দিন পর্যন্ত আমাদের আশ্বস্ত করতে পারেনি, তারা সাম্য হত্যার বিচার করবে কি না। তাই আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কর্মসূচির সঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।

অন্তর্বর্তী সরকার ও জুলাই অভ্য্ত্থুানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের সমালোচনাও করেন ছাত্রদল সভাপতি।

তিনি বলেন, আমরা সাম্য হত্যার পর থেকে সামান্য সহানূভূতিমূলক বক্তব্য এ সরকারের কাছ থেকে শুনিনি। এমনকি সাম্যের জানাযায় আমরা জুলাই-আগস্টের যারা কৃতিত্ব দাবি করেন, তাদেরকেও দেখি নাই। তারা বিভিন্ন সময় বলে, তারা সবসময় ঐক্য চায়। তারা কীসের ঐক্য চায়?

সরকারকে উদ্দেশ করে রাকিব বলেন,বিগত ১৬ বছর যারা আওয়ামী লীগ সরকারের গুমের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য ইউনূস সরকার কোনো সহানূভুতি জানায়নি। এমনকি জুলাইয়ের পর থেকে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের জন্যও কোনো সহানূভুতি আমরা দেখি নাই। ‘আপনাকে আজ আমরা হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, আমরা যদি শাহবাগ থেকে যমুনায় পদযাত্রা করি, তাহলে আমাদের রুখে দেওয়ার কেউ নাই। আমরা এমন অবহেলা যদি আর দেখি, তাহলে যমুনায় কর্মসূচি দেব।

এর আগে দুপুর বেলা ১টার দিকে সাম্য হত্যার বিচার, উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যাগ ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘ছুরিকাঘাতে’ আহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় বুধবার সকালে নিহতের বড় ভাই শরীফুল আলম শাহবাগ থানায় ‘১০ থেকে ১২ জনকে’ আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করার তথ্য দিয়েছে পুলিশ।

সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন তিনি। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে।

ঢাবি শিক্ষকদের মানববন্ধন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য’র হত্যার বিচার দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষক সংগঠন সাদা দল।

গতকাল রোববার (১৮ মে) বেলা সাড়ে এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধনে সাদা দলের নেতারা এই আল্টিমেটাম দেন।

মানববন্ধনে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, সাম্য মারা যায়নি, হত্যা করা হয়েছে। পাঁচ দিন হয়ে গেলেও প্রকৃত খুনিকে বের করা যায়নি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জোরাল দাবি জানাচ্ছি, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রকৃত খুনিকে বের করতে হবে, অন্যথায় আমরা আরো কঠোর আন্দোলনে যাব।

ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, আমরা কোনো ব্যক্তি স্বার্থে কাজ করবো না। সাম্য হত্যার মোটিভকে অন্যদিকে ডাইভার্ট করতে চাচ্ছে একটি গ্রুপ। আগে সাম্য হত্যার বিচার হবে তারপর আমরা অন্য আলাপ করব। ২ মাস আগে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যারও বিচার হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক হত্যা হয়েছে, বিচার হয়নি। তিনি বলেন, সরকার সংস্কারের কথা বলছে অথচ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। সাম্য হত্যার বিচার শুরু না হলে আমরা রাজপথে নামতে বাধ্য হবো।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, একজন শিক্ষকের কাছে শিক্ষার্থীর লাশ অনেক ভারী, অনেক কষ্টদায়ক। আমাদের ক্যাম্পাস কি আদৌ নিরাপদ? আমরা একটি নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি জানাই, যেখানে আর কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাণ দিতে না হয়। তিনি বলেন, জাতি হিসেবে আমি লজ্জিত, আমার যে ভূমিকা সেটা আমি পালন করতে পারিনি।

নাগরিক হিসাবে আমার যে দায়িত্ব সেটা আমি পালন করতে পারছি না।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান বলেন, ঢাবির শিক্ষক হিসেবে আমি লজ্জিত। আমাদের সন্তানরা কেন অন্যের হাতে প্রাণ দেবে? ক্যাম্পাসকে নিরাপদ করা আমাদের দায়িত্ব।

মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম, অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান, ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিনসহ অন্যান্য শিক্ষক। গত ১৩ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে আল্টিমেটাম

আপডেট সময় : ০৮:৫৪:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম হত্যা মামলার তদন্তে গাফিলতি ও ‘মূল হত্যাকারী’ গ্রেফতারের দাবিতে ঢাকার শাহবাগ মোড় অবরোধ করে প্রায় দুই ঘণ্টা বিক্ষোভ করেছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এ ছাড়া সাম্য’র হত্যার বিচার দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষক সংগঠন সাদা দল।

গতকাল রোববার (১৮ মে) অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ও বিকাল ৪টার দিকে শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন তারা। এতে শাহবাগসহ আশপাশের সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে বিক্ষোভকারীরা শাহবাগ ছাড়লে যান চলাচল স্বাভাবিক হওয়া শুরু করে। এর আগে সেখানে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, প্রাইমএশিয়ার শিক্ষার্থী পারভেজের মতো একই কায়দায় চুরিকাঘাতে সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে।

এখনো পারভেজ হত্যাকা-ের বিচার হয়নি।

আমরা আজকের এ অবস্থান কর্মসূচি থেকে হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, আমাদের আর কোনো কর্মীর ওপর এরকম হামলা হলে আমরা আর বসে থাকব না। তিনি বলেন, আমরা এ অথর্ব প্রশাসনের পদত্যাগ দাবি করছি। আপনারা দেখেছেন, মাননীয় উপাচার্য কী রকম হৃদয় বিদারক আচরণ করেছেন।

তিনি সাম্যকে এখনো হৃদয়ে ধারণ করতে পারেননি। আমরা প্রক্টরকে একইভাবে দেখেছি। তোফাজ্জলকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, তার যদি আজ বিচার হত, তাহলে এমন হত্যাকা- আর দেখতে হত না।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় প্রশাসন এখনো তাদের দায় স্বীকার আর নিরাপত্তার গাফিলতির কথা স্বীকার করছে না। তারা আজকের দিন পর্যন্ত আমাদের আশ্বস্ত করতে পারেনি, তারা সাম্য হত্যার বিচার করবে কি না। তাই আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কর্মসূচির সঙ্গে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি।

অন্তর্বর্তী সরকার ও জুলাই অভ্য্ত্থুানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতাদের সমালোচনাও করেন ছাত্রদল সভাপতি।

তিনি বলেন, আমরা সাম্য হত্যার পর থেকে সামান্য সহানূভূতিমূলক বক্তব্য এ সরকারের কাছ থেকে শুনিনি। এমনকি সাম্যের জানাযায় আমরা জুলাই-আগস্টের যারা কৃতিত্ব দাবি করেন, তাদেরকেও দেখি নাই। তারা বিভিন্ন সময় বলে, তারা সবসময় ঐক্য চায়। তারা কীসের ঐক্য চায়?

সরকারকে উদ্দেশ করে রাকিব বলেন,বিগত ১৬ বছর যারা আওয়ামী লীগ সরকারের গুমের শিকার হয়েছে, তাদের জন্য ইউনূস সরকার কোনো সহানূভুতি জানায়নি। এমনকি জুলাইয়ের পর থেকে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের জন্যও কোনো সহানূভুতি আমরা দেখি নাই। ‘আপনাকে আজ আমরা হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, আমরা যদি শাহবাগ থেকে যমুনায় পদযাত্রা করি, তাহলে আমাদের রুখে দেওয়ার কেউ নাই। আমরা এমন অবহেলা যদি আর দেখি, তাহলে যমুনায় কর্মসূচি দেব।

এর আগে দুপুর বেলা ১টার দিকে সাম্য হত্যার বিচার, উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যাগ ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে কালো পতাকা নিয়ে মিছিল করে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘ছুরিকাঘাতে’ আহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় বুধবার সকালে নিহতের বড় ভাই শরীফুল আলম শাহবাগ থানায় ‘১০ থেকে ১২ জনকে’ আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় তিনজনকে গ্রেফতার করার তথ্য দিয়েছে পুলিশ।

সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন তিনি। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে।

ঢাবি শিক্ষকদের মানববন্ধন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য’র হত্যার বিচার দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষক সংগঠন সাদা দল।

গতকাল রোববার (১৮ মে) বেলা সাড়ে এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক মানববন্ধনে সাদা দলের নেতারা এই আল্টিমেটাম দেন।

মানববন্ধনে সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, সাম্য মারা যায়নি, হত্যা করা হয়েছে। পাঁচ দিন হয়ে গেলেও প্রকৃত খুনিকে বের করা যায়নি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জোরাল দাবি জানাচ্ছি, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রকৃত খুনিকে বের করতে হবে, অন্যথায় আমরা আরো কঠোর আন্দোলনে যাব।

ড. মোর্শেদ হাসান খান বলেন, আমরা কোনো ব্যক্তি স্বার্থে কাজ করবো না। সাম্য হত্যার মোটিভকে অন্যদিকে ডাইভার্ট করতে চাচ্ছে একটি গ্রুপ। আগে সাম্য হত্যার বিচার হবে তারপর আমরা অন্য আলাপ করব। ২ মাস আগে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রকে হত্যা করা হয়েছে। সেই হত্যারও বিচার হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক হত্যা হয়েছে, বিচার হয়নি। তিনি বলেন, সরকার সংস্কারের কথা বলছে অথচ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছে না। সাম্য হত্যার বিচার শুরু না হলে আমরা রাজপথে নামতে বাধ্য হবো।

মানববন্ধনে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, একজন শিক্ষকের কাছে শিক্ষার্থীর লাশ অনেক ভারী, অনেক কষ্টদায়ক। আমাদের ক্যাম্পাস কি আদৌ নিরাপদ? আমরা একটি নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি জানাই, যেখানে আর কোনো শিক্ষার্থীকে প্রাণ দিতে না হয়। তিনি বলেন, জাতি হিসেবে আমি লজ্জিত, আমার যে ভূমিকা সেটা আমি পালন করতে পারিনি।

নাগরিক হিসাবে আমার যে দায়িত্ব সেটা আমি পালন করতে পারছি না।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান বলেন, ঢাবির শিক্ষক হিসেবে আমি লজ্জিত। আমাদের সন্তানরা কেন অন্যের হাতে প্রাণ দেবে? ক্যাম্পাসকে নিরাপদ করা আমাদের দায়িত্ব।

মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাদা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম, অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান, ব্যবসা প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিনসহ অন্যান্য শিক্ষক। গত ১৩ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন।