প্রতিবেদক : সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘটেছে সাম্প্রদায়িক হামলা। ঘটেছে হতাহতের ঘটনাও। মানুষের মধ্যে এমন সম্প্রীতি বিনষ্টের প্রতিবাদে এবার রাজপথে নামছেন দেশের সর্বস্তরের শিল্পী-কুশলীরা।
টিভি সংশ্লিষ্ট ১৪টি সংগঠনের শিল্পী-কুশলীদের জোট সংগঠন ফেডারেশন অব টেলিভিশন প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন (এফটিপিও) এই প্রতিবাদের উদ্যোগ নিয়েছে। সংগঠনটির চেয়ারম্যান নাট্যজন মামুনুর রশিদ জানান, ‘ঐতিহ্য ও কৃষ্টির এই দেশে, থাকি সবাই মিলেমিশে’-এই শ্লোগান নিয়ে ৩০ অক্টোবর একটি বড় সমাবেশের আয়োজন করছেন তারা। এদিন সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত জাতীয় সংসদের সামনে (মানিক মিয়া এভিনিউ) এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। যাতে অংশ নেবেন দেশের সর্বস্তরের শিল্পী-কুশলীরা।
মামুনুর রশিদ আহ্বান করেন, শিল্পী-কুশলীদের পাশাপাশি এই সমাবেশে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষরাই যেন অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। কিন্তু এই দেশটিকে চারপাশ থেকে কলুষিত করার একটা চেষ্টা চলছে। আমার মনে হচ্ছে, সেই অপচেষ্টাকে সম্মিলিতভাবে আমাদের প্রতিহত করতে হবে। সেই লক্ষ্যেই এই সমাবেশের ডাক। আমি আশা করবো এই সমাবেশে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকবে।’
শুধু টেলিভিশনকেন্দ্রিক সংগঠনগুলোর সদস্যরাই নন, এই সমাবেশের সুবাদে রাজপথে এসে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে চলচ্চিত্র, সংগীত ও সাংবাদিক সংশ্লিষ্টরাও। সেই আভাসই দিলেন অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম।
নাসিম বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক যে ঘটনা সাম্প্রতিক সময়ে ঘটেছে, সেটা তো আসলে আমরা মেনে নিতে পারি না। শুরু থেকেই শিল্পীরা নিজেদের মতো করে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে আসছি। কিন্তু এখন মনে হলো সবাই মিলে একহয়ে প্রতিবাদটা করা দরকার। তাই অভিনয় শিল্পীদের মধ্যে না রেখে আয়োজনটিকে এফটিপিও পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হলো। তাই নয়, আমরা এরমধ্যে শিল্প-সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত চলচ্চিত্র, সংগীত ও সাংবাদিক সংগঠনগুলোকেও আহ্বান জানিয়েছি। সবাই এই সমাবেশের বিষয়ে একমত। আশা করছি ৩০ অক্টোবর আমাদের প্রতিবাদের মিছিল দীর্ঘ হবে।’
এদিকে ডিরেক্টরস গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক এসএম কামরুজ্জামান সাগর জানান, দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকেই এদিনের এই আয়োজনে তারা অংশ নেবেন। একই মত প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতির (বাচসাস) সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবুও।
গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার নানুয়াদিঘির পাড় পূজাম-পে পবিত্র কোরআন রাখাকে কেন্দ্র করে দেশের রংপুর, চাঁদপুর, সিলেট, কিশোরগঞ্জসহ বেশকয়েকটি জেলার হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে নিহত হয় পাঁচজন। মামলা হয়েছে অন্তত ৭২টি। এখন পর্যন্ত গ্রেফতার পাঁচ শতাধিক।
সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে রাজপথে নামবেন সর্বস্তরের শিল্পী-কুশলীরা
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ