নারী ও শিশু ডেস্ক : মার্কিন কংগ্রেসকে সামাজিক মাধ্যমের বয়স যাচাইকরণ প্রযুক্তির মতো সুরক্ষা ব্যবস্থা সরিয়ে ফেলার আহ্বান জানিয়েছে গুগল। গত সোমবার মার্কিন কংগ্রেসের প্রস্তাবিত শিশুদের অনলাইন সুরক্ষা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়েছে সার্চ ইঞ্জিন কোম্পানিটি। এর আগে ‘কিডস অনলাইন সেইফটি অ্যাক্ট (কসা)’ নামের নতুন বিল নিয়ে কাজ শুরু করেন ম্যাসাচুসেটস থেকে নির্বাচিত ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেনের মতো আইনপ্রণেতারা। তর্কবিতর্ক তৈরি করা প্রস্তাবিত এ আইনে অনলাইনের ক্ষতিকারক কনটেন্ট থেকে শিশুদের সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়টিতে জোর দেওয়া হয়েছে। এর পরপরই নিজস্ব ব্লগ পোস্টে ‘লেজিসলেটিভ ফ্রেমওয়ার্ক টু প্রোটেক্ট চিলড্রেন অ্যান্ড টিনস অনলাইন’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছে গুগল। গুগলের ওই কাঠামো অনুসারে, ব্যবহারকারীর বয়স যাচাইয়ের জন্য সরকারি আইডি কার্ডের কপি আপলোডের বাধ্যবাধকতা থাকবে না। সম্প্রতি কিছু কিছু মার্কিন অঙ্গরাজ্যে এমন আইন জারি হয়েছে, যেখানে ১৮ বছরের কম বয়সীদের অনলাইন ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভিভাবকদের অনুমতি লাগবে। তবে, এই ধরনের আইনের প্রতিবাদ জানিয়ে গুগল যুক্তি দেখিয়েছে, এর ফলে শিশুদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যে প্রবেশের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।
“বয়সের ভিত্তিতে ভালো আইনি মডেল চালু করলে শিশু ও কিশোরদেরকে সুবিধাজনক অভিজ্ঞতা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের সুরক্ষা ও প্রাইভেসির বিষয়টিও নিশ্চিত করতে পারবে কোম্পানিগুলো।” –ওই ব্লগ পোস্টে বলেন গুগলের বৈশ্বিক নীতি বিভাগের প্রেসিডনেট কেন্ট ওয়াকার। এর আগে বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানিকে শিশুদের লক্ষ্য করে বিজ্ঞাপন দেখানোর ব্যবস্থা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন ‘কসা’র লেখক কানেক্টিকাটের ডেমোক্র্যাট সিনেটর রিচার্ড ব্লুমেন্থাল ও ম্যাসাচুসেটসের এড মার্কি। নিজেদের প্রকাশ করা কাঠামোতে গুগল বলছে, এ নিষেধাজ্ঞা শুধু ‘১৮ বছরের কম বয়সীদের’ বেলায় কার্যকর করা উচিৎ। গত বছরজুড়েই মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলোর আইনপ্রণেতারা ১৮ বছরের কম বয়সীদের ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে বিভিন্ন নতুন আইন প্রণয়ন করেছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ। এমনকি লুইজিয়ানার মতো কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে শিশু এমনকি প্রাপ্তবয়স্কদেরও অনলাইনের কোনো সাইটে পর্ন দেখার ক্ষেত্রে বয়স যাচাইকরণ ব্যবস্থা চালু করেছে। এদিকে, পর্ন ও জুয়াভিত্তিক সাইটে বয়স যাচাইকরণের বিষয়টিতে একমত গুগল। অনলাইনে শিশুদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সোমবার নিজস্ব নীতিমালা প্রকাশ করেছে ইউটিউবও। এতে উল্লেখ রয়েছে কীভাবে গুগলের প্রকাশিত কয়েকটি নির্দেশিকা প্ল্যাটফর্মটি নিজেদের সাইটে প্রয়োগ করবে। এক ব্লগ পোস্টে ইউটিউবের সিইও নীল মোহান বলেন, প্ল্যাটফর্মটিতে শিশুদের জন্য ‘পার্সোনালাইসড’ বিজ্ঞাপন দেখানো হবে না। আর অভিভাবকদেরকেও কিছু নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হবে।
“প্রতিটি পরিবারই একই ধরনের সুরক্ষা ব্যবস্থা, উচ্চমানের অভিজ্ঞতা পাওয়ার যোগ্য, তারা যেখানেই থাকুন না কেন।”–লেখেন মোহান। “আর ইন্টারনেটের সকল সুবিধাতেই শিশু ও কিশোরদের প্রবেশাধিকার থাকা উচিৎ। আর তাদের বয়স বিকশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের পরিষেবা ও নীতিমালাও বিকশিত হবে।”