ঢাকা ০৬:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সামর্থ্যবানদের চিকিৎসা বিদেশে, সাধারণদের কী হবে?

  • আপডেট সময় : ১০:১৩:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ অগাস্ট ২০২২
  • ১১৬ বার পড়া হয়েছে

আদিত্য আরাফাত : ডাক্তার সেব্রিনা ফ্লোরা। এ দেশের অনেক মানুষের কাছে পরিচিত মুখ। কারও কারও কাছে প্রিয়মুখও। তিন বছর আগে কোভিড মহামারি শুরুর পর স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নানা পরামর্শ দিয়ে তিনি সারা দেশেই পরিচিতি পান। কোভিডের শুরুর দিকে যখন মানুষ এ রোগটি সম্পর্কে তেমন জানতো না তখন তিনি সাধারণ মানুষকে সচেতন করেছেন। ডা. সেব্রিনা তখন স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক পদে। পরে কর্মদক্ষতাগুণে পদোন্নতি পেয়ে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হন স্বাস্থ্য অধিদফতরের এই কর্মকর্তা।
প্রিয় সেব্রিনা ফ্লোরা এখন অসুস্থ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজধানীর একটি অভিজাত বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখান থেকে পরে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়েছে। দেশটির ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে এখন চিকিৎসাধীন সেব্রিনা ফ্লোরা। কামনা করি, স্বাস্থ্য অধিদফতরের উচ্চপদস্থ এই কর্মকর্তা সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসবেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রিয় সেব্রিনা ফ্লোরাকে বিদেশে পাঠানোর বিরোধিতা করা এ লেখার উদ্দেশ্য নয়। কেউ বিরোধিতা করলেও আমার অবস্থান তার বিপক্ষে। সুস্থতার জন্য সব চেষ্টাই করা উচিত। তবে অধিদফতরের অন্যতম শীর্ষ এই কর্মকর্তাকে শেষ পর্যন্ত উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার কারণে দেশের স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক থেকে শুরু করে শীর্ষ কর্মকর্তারা প্রায়ই দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের কথা বলেন। দাবি করেন, দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে সব রকম চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্তাদের প্রতি এখন প্রশ্ন রাখা যায়, স্বাস্থ্য খাতের যদি এতই উন্নতি তাহলে অধিদফতরের অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তাকে কেন উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিতে হয়েছে? জটিল রোগগুলোর চিকিৎসা কি দেশে নেই?
বিভিন্ন সরকারের আমলেই আমরা দেখেছি, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, আমলাসহ দেশের দায়িত্বশীল অনেককেই উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে। বলতে দ্বিধা নেই, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আস্থাহীনতা আর ভোগান্তির কারণে বিদেশমুখিতা বাড়ছে দিন দিন। এর প্রমাণ পাওয়া যাবে রাজধানীতে ভারতের ভিসা কেন্দ্রের সামনে গেলে। প্রতিদিন যে সংখ্যক মানুষ ভিসা পেতে লাইনে দাঁড়ায় তার বেশিরভাগ ‘চিকিৎসা ভিসা’। ২০২১ সালের জুনে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর ৫৪ দশমিক ৩ শতাংশই বাংলাদেশি।
মাস দুয়েক আগেও সরকার এবং বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা জাতীয় সংসদে দেশের স্বাস্থ্য খাতের বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, বর্তমান সরকারের একটানা ১৩-১৪ বছরের শাসনামলেও দেশের তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্য খাতের বেহাল দশার চিত্র খুব একটা বদলায়নি।
স্বাস্থ্য খাতে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প হচ্ছে। ঢাকার বাইরে নতুন নতুন মেডিক্যাল কলেজ হচ্ছে। নতুন নতুন দৃষ্টিনন্দন হাসপাতাল হচ্ছে। অথচ এসব হাসপাতালে দক্ষ এবং প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় তৃণমূল মানুষ এর সুফল ভোগ করতে পারছেন না। ঢাকা এবং বিভাগীয় শহরের বাইরে অনেক জেলা-উপজেলার হাসপাতালে নেই আইসিইউ, সিসিইউ। চিকিৎসার আধুনিক অনেক যন্ত্রপাতি নেই হাসপাতালে। ক্যানসার, লিভার জটিলতা, স্ট্রোকের সমস্যায় ঢাকার বাইরে রোগীদের ছুটতে হয় রাজধানীতে। দেশের কোনও হাসপাতালে নেই লিভার ট্রান্সপ্লান্টের সুযোগ। ঢাকার বাইরে কেউ আগুনে দগ্ধ হলে তাকে আনতে হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।
স্বাস্থ্য খাতের এমন বেহাল দশা থাকলেও অধিদফতরের কেরানি-ড্রাইভারেরও বিপুল পরিমাণ সম্পদের খবর প্রকাশ হয়। দুদকের তথ্যই বলছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরে আবজাল হোসেন নামের এক কেরানির সম্পদ রয়েছে হাজার কোটি টাকা। এরইমধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় যার বাড়ির খোঁজ পেয়েছে দুদকের তদন্ত টিম। স্বাস্থ্য খাত ধুঁকে ধুঁকে চললেও স্বাস্থ্য অধিদফতরের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদ বেড়েছে ফুলে-ফেঁপে। অসুস্থ হলে মানুষ অসহায় হয়ে যায়। শরীরের সমস্যার কারণে অনেকে মানসিকভাবেও দুর্বল হয়ে যায়। এ সময়ে রোগীরা ডাক্তার-নার্সদের কাছে একটু ভালো ব্যবহার চায়। রোগীরা চান ডাক্তার তার কথা মন দিয়ে শুনবেন। একটু সাহস দেবেন, কিন্তু আমাদের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার আর নার্সরা কেমন ব্যবহার করেন, তা সেবা নিতে যাওয়া রোগীরাই ভালো জানেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিংবা অধিদফতরকে মানুষের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রান্তিক পর্যায়ে সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা বাড়াতে হবে। বেশিরভাগ হাসপাতালে নামমাত্র কয়েকটি টেস্ট ছাড়া বেশিরভাগ রোগ নির্ণয় পরীক্ষার সুযোগ নেই। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ না পেয়ে কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে পরীক্ষা করান বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বেশিরভাগের মান নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। দেশের স্বাস্থ্য খাত যারা চালান তারাও জানেন, দেশের অনেক মানুষের সামর্থ্য নেই সিঙ্গাপুর-ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করানোর। রাজধানীর বেসরকারি অভিজাত হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর আর্থিক সক্ষমতাও অনেকের নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, যাদের সক্ষমতা নেই তারা কোথায় যাবে? উন্নত চিকিৎসা পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। স্বাধীনতার ৫২ বছরেও কি মানুষ এসব অধিকারের জন্য চিৎকার করবে? কে দেবে এসব উত্তর?
লেখক: বিশেষ প্রতিনিধি, ডিবিসি নিউজ

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সামর্থ্যবানদের চিকিৎসা বিদেশে, সাধারণদের কী হবে?

আপডেট সময় : ১০:১৩:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ অগাস্ট ২০২২

আদিত্য আরাফাত : ডাক্তার সেব্রিনা ফ্লোরা। এ দেশের অনেক মানুষের কাছে পরিচিত মুখ। কারও কারও কাছে প্রিয়মুখও। তিন বছর আগে কোভিড মহামারি শুরুর পর স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে সর্বশেষ তথ্য ও নানা পরামর্শ দিয়ে তিনি সারা দেশেই পরিচিতি পান। কোভিডের শুরুর দিকে যখন মানুষ এ রোগটি সম্পর্কে তেমন জানতো না তখন তিনি সাধারণ মানুষকে সচেতন করেছেন। ডা. সেব্রিনা তখন স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক পদে। পরে কর্মদক্ষতাগুণে পদোন্নতি পেয়ে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হন স্বাস্থ্য অধিদফতরের এই কর্মকর্তা।
প্রিয় সেব্রিনা ফ্লোরা এখন অসুস্থ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজধানীর একটি অভিজাত বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখান থেকে পরে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়েছে। দেশটির ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে এখন চিকিৎসাধীন সেব্রিনা ফ্লোরা। কামনা করি, স্বাস্থ্য অধিদফতরের উচ্চপদস্থ এই কর্মকর্তা সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসবেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রিয় সেব্রিনা ফ্লোরাকে বিদেশে পাঠানোর বিরোধিতা করা এ লেখার উদ্দেশ্য নয়। কেউ বিরোধিতা করলেও আমার অবস্থান তার বিপক্ষে। সুস্থতার জন্য সব চেষ্টাই করা উচিত। তবে অধিদফতরের অন্যতম শীর্ষ এই কর্মকর্তাকে শেষ পর্যন্ত উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার কারণে দেশের স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক থেকে শুরু করে শীর্ষ কর্মকর্তারা প্রায়ই দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নের কথা বলেন। দাবি করেন, দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে সব রকম চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। আধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে। বিশেষজ্ঞ ডাক্তার রয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্তাদের প্রতি এখন প্রশ্ন রাখা যায়, স্বাস্থ্য খাতের যদি এতই উন্নতি তাহলে অধিদফতরের অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তাকে কেন উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নিতে হয়েছে? জটিল রোগগুলোর চিকিৎসা কি দেশে নেই?
বিভিন্ন সরকারের আমলেই আমরা দেখেছি, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, আমলাসহ দেশের দায়িত্বশীল অনেককেই উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে। বলতে দ্বিধা নেই, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে আস্থাহীনতা আর ভোগান্তির কারণে বিদেশমুখিতা বাড়ছে দিন দিন। এর প্রমাণ পাওয়া যাবে রাজধানীতে ভারতের ভিসা কেন্দ্রের সামনে গেলে। প্রতিদিন যে সংখ্যক মানুষ ভিসা পেতে লাইনে দাঁড়ায় তার বেশিরভাগ ‘চিকিৎসা ভিসা’। ২০২১ সালের জুনে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর ৫৪ দশমিক ৩ শতাংশই বাংলাদেশি।
মাস দুয়েক আগেও সরকার এবং বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা জাতীয় সংসদে দেশের স্বাস্থ্য খাতের বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, বর্তমান সরকারের একটানা ১৩-১৪ বছরের শাসনামলেও দেশের তৃণমূল পর্যায়ের স্বাস্থ্য খাতের বেহাল দশার চিত্র খুব একটা বদলায়নি।
স্বাস্থ্য খাতে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প হচ্ছে। ঢাকার বাইরে নতুন নতুন মেডিক্যাল কলেজ হচ্ছে। নতুন নতুন দৃষ্টিনন্দন হাসপাতাল হচ্ছে। অথচ এসব হাসপাতালে দক্ষ এবং প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় তৃণমূল মানুষ এর সুফল ভোগ করতে পারছেন না। ঢাকা এবং বিভাগীয় শহরের বাইরে অনেক জেলা-উপজেলার হাসপাতালে নেই আইসিইউ, সিসিইউ। চিকিৎসার আধুনিক অনেক যন্ত্রপাতি নেই হাসপাতালে। ক্যানসার, লিভার জটিলতা, স্ট্রোকের সমস্যায় ঢাকার বাইরে রোগীদের ছুটতে হয় রাজধানীতে। দেশের কোনও হাসপাতালে নেই লিভার ট্রান্সপ্লান্টের সুযোগ। ঢাকার বাইরে কেউ আগুনে দগ্ধ হলে তাকে আনতে হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।
স্বাস্থ্য খাতের এমন বেহাল দশা থাকলেও অধিদফতরের কেরানি-ড্রাইভারেরও বিপুল পরিমাণ সম্পদের খবর প্রকাশ হয়। দুদকের তথ্যই বলছে, স্বাস্থ্য অধিদফতরে আবজাল হোসেন নামের এক কেরানির সম্পদ রয়েছে হাজার কোটি টাকা। এরইমধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় যার বাড়ির খোঁজ পেয়েছে দুদকের তদন্ত টিম। স্বাস্থ্য খাত ধুঁকে ধুঁকে চললেও স্বাস্থ্য অধিদফতরের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর সম্পদ বেড়েছে ফুলে-ফেঁপে। অসুস্থ হলে মানুষ অসহায় হয়ে যায়। শরীরের সমস্যার কারণে অনেকে মানসিকভাবেও দুর্বল হয়ে যায়। এ সময়ে রোগীরা ডাক্তার-নার্সদের কাছে একটু ভালো ব্যবহার চায়। রোগীরা চান ডাক্তার তার কথা মন দিয়ে শুনবেন। একটু সাহস দেবেন, কিন্তু আমাদের সরকারি হাসপাতালগুলোতে ডাক্তার আর নার্সরা কেমন ব্যবহার করেন, তা সেবা নিতে যাওয়া রোগীরাই ভালো জানেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিংবা অধিদফতরকে মানুষের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রান্তিক পর্যায়ে সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা বাড়াতে হবে। বেশিরভাগ হাসপাতালে নামমাত্র কয়েকটি টেস্ট ছাড়া বেশিরভাগ রোগ নির্ণয় পরীক্ষার সুযোগ নেই। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ সরকারি হাসপাতালে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ না পেয়ে কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে পরীক্ষা করান বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বেশিরভাগের মান নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন। দেশের স্বাস্থ্য খাত যারা চালান তারাও জানেন, দেশের অনেক মানুষের সামর্থ্য নেই সিঙ্গাপুর-ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করানোর। রাজধানীর বেসরকারি অভিজাত হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর আর্থিক সক্ষমতাও অনেকের নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, যাদের সক্ষমতা নেই তারা কোথায় যাবে? উন্নত চিকিৎসা পাওয়া মানুষের মৌলিক অধিকার। স্বাধীনতার ৫২ বছরেও কি মানুষ এসব অধিকারের জন্য চিৎকার করবে? কে দেবে এসব উত্তর?
লেখক: বিশেষ প্রতিনিধি, ডিবিসি নিউজ